তাসকিন-রিয়াদের প্রশংসা, নাহিদ-জাকেরও আছেন স্যান্টনারের ভাবনায়
Published: 23rd, February 2025 GMT
সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে টেস্ট ও ওয়ানডে হারিয়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডেও তিন ফরম্যাটে জয়ের স্মৃতি আছে।
গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। নিয়মিত মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ দলের প্রতি সমীহ আছে কিউইদের।
ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে রোববার নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক মিশেল স্যান্টনার বলেছেন, ‘আমরা তাদের বিপক্ষে অনেক খেলেছি। দু’দল সম্পর্কে একে অপরের জানা বোঝা আছে।’
এই জানা বোঝা এমন পর্যায়ে যে, বাংলাদেশের তরুণ পেস সেনসেশন নাহিদ রানার ঠিকই খোঁজ-খবর রাখেন কিউইরা। আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে আলোয় আসা জাকের আলীর কথা বলতেও ভোলেননি স্যান্টনার। প্রশংসা করেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ ও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহদের।
স্যান্টনার বলেন, ‘বাংলাদেশ খুব ভালো দল। আগে থেকে তাদের স্পিন বিভাগ খুব ভালো। এখন তাদের পেস আক্রমণও অনেক ভালো। তাসকিন অনেক দিন ধরেই ভালো করছেন। ফিজ কী করতে পারেন আমরা জানি। এখন তাদের দলে রানার (নাহিদ রানা) মতো পেসার আছে।’
বাংলাদেশকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে ব্ল্যাক ক্যাপস অধিনায়ক বলেন, ‘রিশাদ হোসেনের মতো লেগ স্পিনার পেয়েছে তারা। সাকিব না থাকলেও মেহেদীর মতো ক্রিকেটার আছে। মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে দরকার পড়লে কিছু ওভার বোলিংও করতে পারবে। জাকের আলী এসেছে। তাদের ভারসাম্যপূর্ণ দল। তারা আপসেট ঘটাতে পারে। আশা করছি, সেটা আমাদের বিপক্ষে হবে না।’
রাওয়ালপিন্ডির উইকেট যে বড় রানের হবে ওই ধারণাও সংবাদ সম্মেলনে দিয়েছেন স্যান্টনার, ‘উইকেট ফ্লাট হবে। বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। ২০০ রানের উইকেট নয়, ৩০০ রানের অধিক করতে হবে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি
গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।
গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।
ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।
চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’
সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’
তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।