শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠভাজন মোমেন শিকদার এখন বিএনপি নেতা!
Published: 23rd, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহচর মমিনুল মোমেন শিকদার ওরফে আনোয়ার হোসেন রাতারাতি ভোল পাল্টে এখন বিএনপি নেতা বনে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আওয়ামীলীগের শাসনামলে সোনারগাঁয়ে শামীম ওসমানের নাম ব্যবহার করে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছেন বলে দাবি বিএনপি নেতাকর্মীর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শামিম ওসমানের পরিচয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গেও ছিল মোমেন শিকদারের ঘনিষ্ঠতা। যা দেখা মিলে বিভিন্ন অন্ষ্ঠুানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মোমিন সিকাদারের সখ্যতার ছবি।
যা দিয়ে দাবড়িয়ে বেড়াতেন এই চতুর মোমেন। এদিকে শামীম ওসমানের সাথে ব্যবসায়িক লেনদেনের তত্ত্বাবধানে ছিলেন এই মোমেন শিকদার এমনই অভিযোগ স্থানীয় বিএনপি নেতাদের।
এদিকে, ৫ আগস্টে বাংলাদেশে পট পরিবর্তনের পর রাতারাতি ভোল পাল্টে বিএনপি নেতা হিসেবে নিজেকে জাহির করার জন্য বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন মোমেন।
সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ-৩) আসনের সাবেক এমপি কায়সার হাসনাতের সঙ্গেও ছিল তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তার নির্বাচনে মোমেন শিকদার বিপুল পরিমানে অর্থের যোগান দেন বলে জানান সোঁনারগাও বিএনপির তৃনমূলের একাধিক নেতা।
নেতাকর্মীদের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত সরকারের আমলেও সে ছবি দেখিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন হিসেবে জাহির করতেন। নিতেন বিশেষ সুবিধা।
এখন পট পরিবর্তনের পর বিএনপির নেতাদের সাথে ছবি তুলে বিএনপির নেতা পরিচয় দেয় মোমেন। এছাড়া কায়সার হাসনাতের পিএস আশরাফুজ্জান ওরফে জামানের সঙ্গে মিলে ব্যবসাও করেছেন এই আওয়ামী লীগ নেতা মোমেন শিকদার।
মোমেন শিকদার এখন বলে বেড়াচ্ছেন লন্ডনে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক। লন্ডনে ওই সিনিয়র নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে নারায়নগঞ্জের বিএনপি নেতাদের তিনি বড় পদ পদবী বাগিয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সোনারগাঁওয়ে স্থানীয় ভাবে বিএনপির ভালো পদে নিজেকে অধিষ্ঠিত করার মিশনে নেমেছেন।
এর মাধ্যমে তিনি নারায়নগঞ্জের কয়েকজন বিএনপি নেতাকে তিনি বিভ্রান্ত করছেন। বিএনপির একটি গ্রুপের সাথে মিলে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, বিগত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে থেকে সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন আওয়ামী লীগের দোসর মোমেন। তিনি এখন নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে নিজেকে জাহির করে।
তিনি গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিএনপি সেজে দলে ঢুকে পড়েছে। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে।’
এ ব্যাপারে মমিনুল মোমেন শিকদার বলেন, লন্ডনে একটা ডিনারে শামীম ওসমানের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে। ভাবীসহ শামীম ওসমান আর আমি আমার বউ ওই অনুষ্ঠানে ছিলাম। আমি ১৭ বছর বিএনপির দ্বারা নির্যাতিত। আমি বাংলাদেশে বিএনপির কোন নেতা না।
আমি ইউরোপে রাজনীতি করি। এখানে কে বিএনপি করলো, কে আওয়ামী লীগ করলো এটা কোন বিষয় না। শামীম ওসমানের ছবি থাকলেই যে আমি খারাপ হয়ে গেলাম এমন না।
খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা আর এরশাদের ছবি আমার কাছে আছে। তিনজনই বসে হাসাহাসি করতাসে তাতে কি হইসে। এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতিই থাকা উচিত।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও শ ম ম ওসম ন ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ শ ম ম ওসম ন র ব এনপ র র ব এনপ ঘন ষ ঠ হ র কর আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের সাবেক নেতা জাকির কারামুক্ত, গাড়িবহর নিয়ে অনুসারীদের বরণ
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান সাজার মেয়াদ শেষে কারামুক্ত হয়েছেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে কারামুক্ত হন তিনি।
এদিকে জাকির খানকে বরণ করে নিতে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। এতে ওই এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ফোরকান ওয়াহিদ জানান, ১৯৯৪ সালের সন্ত্রাস দমন আইনের একটি মামলার রায়ে জাকির খানের ১৪ বছরের সাজা হয়েছিল। আপিল করার পর উচ্চ আদালতে সাজা কমিয়ে আট বছর করা হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ আবেদনে তাঁর সাজা কমে পাঁচ বছর করা হয়। পাঁচ বছরের সাজার মেয়াদ শেষে আজ রোববার সকালে জাকির খানকে কারামুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের মুক্তির খবরে আজ সকাল থেকে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকলে ও প্রাইভেট কারের বহর নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। নেতা-কর্মীরা ট্রাকে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে মোটরসাইকেলের বহর বের করেন। জেলা কারাগারের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড় হয়। এতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগার থেকে বের হন জাকির খান। এ সময় তাঁর অনুসারীরা তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে তিনি হুডখোলা গাড়িতে চড়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে দেওভোগের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম খন্দকার হত্যাসহ ৪টি হত্যাসহ মোট ৩৩টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন সময় কারাগারে ছিলেন তিনি। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জাকির খান আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। শহরের দেওভোগ এলাকায় জাকির খান তাঁর বিশাল বাহিনী গড়ে তোলেন। দেওভোগ এলাকার সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে হত্যা করে শহরে ত্রাস সৃষ্টি করেন। ২০০৩ সালে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে জাকির খান দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে থাকার পর গোপনে দেশে ফিরে এসে রাজধানীর বসন্ধুরা আবাসিক এলাকায় পরিচয় গোপন করে সপরিবার বসবাস শুরু করেন। ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তলসহ জাকির খানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর পর থেকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে ছিলেন তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে জাকির খানসহ সব আসামি খালাস পান।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সাজা শেষে জাকির খান কারামুক্ত হয়েছেন। তিনি ২৬টি মামলায় খালাস পেয়েছেন। তিনটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, সেই মামলাগুলোতে তিনি জামিনে রয়েছেন।