কুমিল্লা আদালতে বাদীকে পিটিয়ে হাসপাতালে, আটক ২
Published: 23rd, February 2025 GMT
কুমিল্লায় আদালতে মামলার বাদীকে পিটিয়ে আহত করেছে আসামি পক্ষের লোকজন।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সুমন মিয়া হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্দি এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলো- একই এলাকার মতিন মিয়া (৪৮) ও সাদ্দাম হোসেন (২৯)। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে তাদের মধ্যে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব রয়েছে।
আহত সুমনের বড় বোন ইয়াসমিন আরা জানান, গত ১৫ জানুয়ারি জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনায় তাদের প্রতিবেশী মতিন মিয়া ও সাদ্দাম হোসেনের বাবা খালেক মিয়াসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন সুমন। এই ঘটনার জেরে ১৫ ফেব্রুয়ারি সুমনের বাবা দৌলতমিয়াকে আবারো পেটায় আসামিপক্ষ।
এই ঘটনায় উভয় পক্ষ আবারো থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এসব মামলায় রবিবার আসামিরা আদালতে আইনি পরামর্শ চাইতে গেলে সুমন তাদের সামনে পড়ে। সেখানেই আসামিরা তাকে বেধড়ক পেটায়।
এসময় সুমন অচেতন হয়ে পড়ে। পরে আদালতে উপস্থিত লোকজন সুমনকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। মতিন মিয়া ও সাদ্দাম হোসেকে আটক করে পুলিশে দেয় জনগণ।
কুমিল্লা কোতয়ালী থানার উপ পরিদর্শক সালাহ উদ্দিন জানান, আদালতে জনগণের হাতে আটক মতিন ও সাদ্দামকে কোতয়ালী থানায় নেয়া হয়েছে। আহত সুমনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার গাজী আরিফুল ইসলাম ভিলিয়া জানান, সুমনের অবস্থা আশংকাজনক। তাকে আইসিউতে রেফার করা হয়েছে।
কুমিল্লা আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো.
ঢাকা/রুবেল/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির কাছে প্রত্যাশা
সচেতন জনগণ দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিকল্প দল খুঁজছে। বিগত সরকারের আমলে ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য কিছুটা এগিয়ে জনগণের মনে আশার সঞ্চার করলেও আওয়ামী লীগের কারণে তা ভেস্তে যায়। এর পর কোনো দলকে ফ্যাসিস্ট সরকার বিকল্প গড়তে দেয়নি। চব্বিশের আন্দোলনে বিজয়ী ছাত্রদের নতুন দল নিয়ে আবার জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। আশার দিক হচ্ছে, ছাত্রদের দল জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে জনবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে এগিয়ে যাবে এবং এক সময় ক্ষমতায় গিয়ে স্বাধীনতার অধরা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে। যেখানে থাকবে না বসবাসে আকাশসম বৈষম্য; থাকবে না কথা বলার ভয়। সংখ্যালঘুরা নিজেদের দেশ নিয়ে গর্ব করবে। থাকবে নারী স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার।
স্বাধীনতার পর থেকে আমরা দেখে আসছি আওয়ামী লীগ একটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে দেশ-বিদেশে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। অথচ সংখ্যালঘুরা তাদের দ্বারাই বেশি নির্যাতিত হয়েছে বলে আমরা জানি। তাই নতুন দল ‘এনসিপি’কে প্রকৃত অর্থেই একটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। ভুললে চলবে না– একাত্তর আমাদের শিকড়। গাছ যেমন শিকড় বিনা বাঁচতে পারে না, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের গৌরব ও আকাঙ্ক্ষা ধারণ ব্যতীত কোনো দল সামনে এগোতে পারবে না। তাই প্রত্যাশা, এনসিপি মধ্য বাম দল হিসেবে গড়ে উঠবে এবং ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’-এর পরিবর্তে উচ্চারিত হবে ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’। গতানুগতিক বা মধ্যপন্থি দল বিএনপি তো রয়েছে, যাকে একই পন্থায় এনসিপি অতিক্রম করতে পারবে না। অন্যদিকে এনসিপি সংবিধান সংস্কার কমিশনের সঙ্গে ২৯টিতে ভিন্নমত পোষণ করলেও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ মতবাদ বাদ দেওয়া এবং ‘বহুত্ববাদ’ গ্রহণে ঐকমত্য পোষণ করেছে। কিন্তু ‘বহুত্ববাদ’ একটি অস্পষ্ট ধারণা, যা দ্বারা অনির্দিষ্ট অনেক কিছুকে বোঝায়। আবার যেখানে সংবিধানে রাষ্ট্রের নিজস্ব ধর্ম রয়েছে, সেখানে বহুত্ববাদের গুরুত্ব আর থাকে না। এনসিপিকে দ্রুত এগোতে হলে প্রকৃতই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে হবে, যেন দলনিরপেক্ষ উদারমনা জনতা ও সংখ্যালঘুরা এর নিচে আশ্রয় নিতে পারে। এনসিপির মূল বা শিকড় হতে হবে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেওয়া সব নেতার অবদানের মূল্যায়ন এবং স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করা।
এ সরকারের মন্দ কাজের জোরালো সমালোচনা করতে হবে। মনে রাখতে হবে– সরকারঘেঁষা কোনো দল সহজে জনপ্রিয় হয় না। ‘এনসিপি’কে বুঝতে হবে আধুনিক দুনিয়ায় কোনো চরম পন্থার স্থান নেই এবং যারা
চরম ডান বা চরম বামের রাজনীতি করছেন, তাদেরকেও ভবিষ্যতে সাচ্চা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে। আশা করি, এনসিপির গঠনতন্ত্রে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ধারা দেখতে পাব।
নুরুল আমিন: নিবন্ধকার, ঢাকা
cuzamanctg@gmail