৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পর যখন দেশে স্বস্তি ফিরে আসে ঠিক তখনই আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরীন। 

তিনি বলেন, একজন নারীকে রাজপথে প্রতিযোগিতা করে উঠে আসতে হয়। সেখানে আনুপাতিক হারে খুব অল্প সংখ্যক নারীই রাজনীতিতে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারেন। আমি সেই ভাগ্যবানদের একজন- একেবারে তৃণমূল থেকে উঠে এসেছি। কিন্তু কিছু নষ্ট-ভ্রষ্টরা আমার ক্ষতি করতে উঠেপড়ে লেগেছে। রাজপথে টিকতে না পেরে অন্ধকার দিয়ে তার পথরোধ করার চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করে বলেন, তিনি একদিকে যেমন মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখেন তেমনি রাজনৈতিক আদর্শ জিয়া পরিবারের প্রতিও আস্থা পোষণ করেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান যেভাবে তার প্রতি আস্থা রেখেছেন সেটা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। একইভাবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান তিনি। 

তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ছয়দিনের ব্যবধানে ১১ আগস্ট দলের সব পদ-পদবি স্থগিত করা হয় বিলকিস জাহান শিরিনের। একটি গণমাধ্যমে ‘বরিশালে ১০ কোটি টাকার পুকুর দখল বিএনপি নেত্রী শিরীনের’ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে তার এই পদ স্থগিত করা হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে একই গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে আরেও অনেক সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সেসব বিষয় নিয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।

বিলকিস জাহান শিরীন বলেন, ‘পুকুর দখল’ কথাটি মিথ্যা ও বানোয়াট এবং ষড়যন্ত্রমূলক। বিগত ৭০ বছরের পূর্বে ক্রয়সূত্রে আমার দাদা এই জমির রেকর্ডীয় মালিকানায় ভোগ দখল করে আসছেন। ওই জমিতে ২০ থেকে ২৫ জনের অধিক ওয়ারিশ রয়েছে। খাজনাসহ সরকারি অন্যান্য ফি তারাই পরিশোধ করতেন। ইতোমধ্যে অনেক ওয়ারিশ তাদের অংশ বিক্রি করেছে এবং সেখানে জলাশয় ভরাট করে স্থাপনাও নির্মিত হয়েছে। ওয়ারিশ হিসেবে আমার বাবা ৩ শতকের মালিক যেখানে বাবার ওয়ারিশ হিসেবে আমি আধা-শতাংশের কম অংশের মালিক। অথচ উদ্দেশ্যেমূলকভাবে আমাকে জড়িয়ে ১০ কোটি টাকার মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে আমার, আমার পরিবার, এবং আমার দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে এবং প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এছাড়া ওই জলাশয়টি ২০ থেকে ২৫ বছর পূর্বেই অধিকাংশ ভরাট করা হয়েছিল। তাছাড়া জলাশয় ভরাটের ক্ষেত্রে আমার কোনো হাত নেই। কারণ ওয়ারিশরা কেউ আমার অধীনস্থ না। তারা সকলেই ওয়ারিশ সূত্রে মালিক।

তিনি বলেন, আমাকে জড়িয়ে একের পর এক মিথ্যা ও বানোয়াট ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ‘অর্ধকোটি টাকা নিয়ে ফের বিতর্কে শিরীন’ শিরোনামে ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে অসত্য সংবাদ প্রচার করে। অথচ ওই ঘটনার সঙ্গে দূরবর্তী কোনো সম্পৃক্ততাও আমার নেই। 

শিরীন বলেন, আমার প্রতি এই প্রতিহিংসাপরায়ন আচরণের প্রেক্ষিতে আমার সামাজিক ও রাজনৈতিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। আমি সম্পূর্ণভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার। এর মাধ্যমে একটি চিহ্নিত মহল আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে। যেখানে তারা সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করছে বলে আমি মনে করি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র জন ত ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

কোনো কাজেই গতি নেই নাগরিক সেবা লাটে

স্থানীয় সরকার বিভাগে কোনো কাজেই গতি আসছে না। সরকার পতনের পর অনেক জনপ্রতিনিধি পালিয়ে যাওয়া এবং বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করায় স্থবির হয়ে পড়ে স্থানীয় সরকারগুলোর কার্যক্রম। সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে আরেকটি বড় ধাক্কা লাগে মন্ত্রণালয়ে। বর্তমানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কাজ চলছে দুটি ভিন্ন স্থান থেকে। এ কারণে রুটিন কাজও সঠিকভাবে চালানো যাচ্ছে না। দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট সংস্কার, স্যানিটেশন, পানি সরবরাহ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সনদ প্রদানসহ সেবামূলক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এতে বাড়ছে জনঅসন্তোষ।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিন মাস পরপর আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হতো। গত ২৫ ডিসেম্বর সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে সম্মেলন কক্ষটি পুড়ে যায়। এখন মন্ত্রণালয়ের বৈঠক করার মতো সভাকক্ষ নেই। গত ছয় মাসে একটিও আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়নি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সম্মেলন কক্ষে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠক হয় মাঝেমধ্যে। অগ্নিকাণ্ডের পর পুরো এক মাস কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বসার জায়গাই ছিল না। তড়িঘড়ি করে ডিএসসিসি নগর ভবনের ১৩ থেকে ১৫ তলার ৭৫টি কক্ষ খালি করা হয়। সেখানে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর কিছু কর্মকর্তা পুড়ে যাওয়া ভবনের দ্বিতীয় তলায় অফিস করছেন। দুটি স্থান থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করায় কাজের গতি কমে গেছে। এ ছাড়া আগুন লেগে অনেক ফাইল পুড়ে যাওয়ায় দ্রুত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। মন্ত্রণালয় থেকে ৪০ বস্তা ফাইলপত্র নেওয়া হয়েছে নগর ভবনে। সেগুলোর মধ্যে মাত্র ছয়-সাতটি বস্তা এখন পর্যন্ত খোলা হয়েছে।

স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি না থাকায় জন্ম ও মৃত্যুসনদ, প্রত্যয়নপত্র পাওয়াসহ নানা ধরনের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ। নগরীগুলোয় নামকাওয়াস্তে চলছে মশক নিয়ন্ত্রণসহ পরিচ্ছন্নতা কাজ। অতীতে মেয়রদের কার্যক্রম থাকত মাঠ পর্যায়ে। বর্তমানে পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনে প্রশাসক বসানো হলেও মাঠ পর্যায়ে তাদের কোনো তদারকি নেই। স্থানীয় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম থমকে পড়ায় দেশজুড়ে অনেক সড়ক বেহাল।

দেশের ১২ সিটি করপোরেশনের মধ্যে চট্টগ্রাম ছাড়া কোথাও মেয়র নেই। চট্টগ্রামের ডা. শাহাদাত হোসেন মামলা করে মেয়রের পদ ফিরে পেয়েছেন। অন্যসব সিটি করপোরেশন চলছে প্রশাসক (কর্মকর্তা) দিয়ে। সিটি করপোরেশনগুলোয় প্রায় ০০ কাউন্সিলরের পদ শূন্য। একই রকম অবস্থা দেশের ৩৩১ পৌরসভায়। পৌরসভার প্রায় চার হাজার জনপ্রতিনিধি না থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে সেবা কার্যক্রম। 

অভিজ্ঞতায় ঘাটতি অনেক কর্মকর্তার
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুই জায়গায় বসায় প্রয়োজনের সময় যোগাযোগ করতেও অনেক সময় চলে যায়। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর পর বেশ কিছুদিন মন্ত্রণালয়ে সচিবের পদ শূন্য ছিল। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নজরুল ইসলামকে। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন ডিএসসিসির প্রশাসক। দুই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে তাঁকে। পরে নজরুল ইসলামকে সরিয়ে দিলে প্রশাসকের পদ শূন্য হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের পদ পূরণ হলেও ডিএসসিসির প্রশাসকের পদ ছিল শূন্য। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহান মিয়াকে দেওয়া হয় প্রশাসকের দায়িত্ব।

এদিকে, অনেক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোয় কনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে হয়। সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে একের পর এক পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত সচিব করার ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু এই কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকার কারণেও মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে। একসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এসব দায়িত্ব পালন করাও কঠিন।

ওয়াসার কার্যক্রমে স্থবিরতা
দেশের চারটি ওয়াসার মধ্যে ঢাকা ওয়াসায় এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফজলুর রহমানকে। বাড়তি হিসেবে স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ শাখার অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাঁকে। তিনি সকাল থেকে আধাবেলা অফিস করে সচিবালয়ে চলে যান। অথচ ঢাকা ওয়াসার মতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য সার্বক্ষণিক একজন এমডি থাকা প্রয়োজন। তিনি সর্বক্ষণ সময় দিতে না পারায় ওয়াসার কার্যক্রমও গতিহীন। এ ছাড়া একজন ডিএমডির পদ শূন্য। আরেকজনের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় তিনি অনেকটা চুপচাপ অফিস করেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেট ওয়াসার কার্যক্রমেও চলছে চরম স্থবিরতা।

ইউনিয়ন পরিষদের অনেকেই পলাতক
ইউনিয়ন পরিষদগুলোর জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত করা হয়নি। তবে তাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। তাদের অনেকেই পলাতক। স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরে দেশের ৪ হাজার ৫৭৮টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ১ হাজার ৪১৬টির চেয়ারম্যান পলাতক ছিলেন। অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু হওয়ার পর গা-ঢাকা দিয়েছেন অনেকে। প্রকাশ্যে যারা আছেন, তাদের কর্মতৎপরতা নেই বললেই চলে।

সংশ্লিষ্টরা যা বলেন
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, আগে পৌরসভার কাউন্সিলররাও এলাকার রাস্তাঘাট-সড়কবাতির জন্য মন্ত্রণালয়ে তদবির করতে আসতেন। এখন কেউ আসেন না। আওয়ামী লীগের দু-একজন আত্মগোপনে থেকে ফোন দেন কাজ করে দেওয়ার জন্য। বিএনপি বা অন্য দলের যে দু-চারজন জনপ্রতিনিধি ছিলেন, তারা মাঝেমধ্যে আসেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তাদের কারও এখন কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কাউন্সিলর ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাঁর পক্ষে এই অতিরিক্ত কাজ পরিচালনা করা কঠিন।

সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সরকারগুলো জনপ্রতিনিধিশূন্য থাকায় উন্নয়ন কার্যক্রম থমকে পড়েছে। রাস্তা মেরামত, পরিচ্ছন্নতা, সড়কবাতি, মশক নিয়ন্ত্রণসহ নানা ধরনের কাজ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আগে সরাসরি তদারক করতেন। সিটি করপোরেশনগুলোতে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের দায়িত্ব আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের (আনিক) দেওয়া হয়েছে। এখন একজন কর্মকর্তাকে নিজস্ব দাপ্তরিক কাজ ছাড়াও ১০ থেকে ১৫টি ওয়ার্ডের কার্যক্রম তদারকি করতে হচ্ছে। এতে কোনো কাজই ঠিকমতো হচ্ছে না।

স্থানীয় সরকার বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আগে জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতেন। সরকারি ও বিদেশি অর্থায়নে সেগুলো বাস্তবায়ন হতো। গত ছয় মাসে একটিও নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। নতুন প্রকল্প না থাকলে স্বাভাবিকভাবেই উন্নয়ন কার্যক্রম থেমে যায়। আগে মেয়র-কাউন্সিলররা তাদের স্বার্থেই এসব প্রকল্প গ্রহণ ও বরাদ্দের জন্য সর্বক্ষণ তদবির-সুপারিশ করতেন। স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর দপ্তরে সব সময় সারাদেশের জনপ্রতিনিধিরা আসতেন। এখন সেখানে দু-একজন সমন্বয়ক ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ছাড়া তেমন কাউকে দেখা যায় না।

অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, আগে সপ্তাহে একজন হলেও বিদেশি দাতা সংস্থার প্রতিনিধি স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করতেন। তারা নানাভাবে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার আশ্বাস দিতেন। সেই কার্যক্রম এখন একেবারে নেই বললেই চলে। প্রতিদিন মন্ত্রণালয়ে একাধিক সভা হতো মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থার কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ে। প্রতি তিন মাস অন্তর আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক হতো। সভাকক্ষটি পুড়ে যাওয়ায় কার্যত মন্ত্রণালয়ের বৈঠক করার কোনো স্থান নেই।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ সমকালকে বলেন, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে দেশে সব সেবা কার্যক্রম প্রান্তসীমা পর্যন্ত যায়। সব ধরনের নাগরিক সুবিধা তাদের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়। হাজার হাজার জনপ্রতিনিধির শূন্যতার কারণে দেশের সাধারণ মানুষ এ সুবিধা পাচ্ছেন না। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জন্মনিবন্ধন, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ব্যাপক মাত্রায় ব্যাহত হচ্ছে। সেই ঘাটতি পূরণের জন্য প্রশাসক বসানো হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রশাসক কখনোই জনপ্রতিনিধির মতো কাজ করতে পারবেন না– এটাই বাস্তবতা। সুতরাং স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন যেভাবেই চিন্তা করি না কেন, তা খুবই জরুরি। এতে কিছুটা হলে অবস্থার উন্নতি হবে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করা উচিত। কালক্ষেপণ না করে আন্তরিকতার সঙ্গে দ্রুত সংস্কার সম্পন্ন করা প্রয়োজন এবং দেরি না করে নির্বাচনের মাধ্যমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা উচিত।

‘অগ্নিকাণ্ডের কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে’
মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব নিজাম উদ্দিন সমকালকে বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণে কিছু সমস্যা তো হচ্ছে, এটি অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। জনপ্রতিনিধির যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, সেটি অতিক্রম করার জন্য কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা এখন দুই-তিন গুণ কাজ করে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করছেন। দুই স্থান থেকে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রেও তেমন সমস্যা হচ্ছে না। এখন তো ইন্টারনেট-মোবাইল ফোনেই সব কথা বলা যায়। পুড়ে যাওয়া ফাইলপত্র নিয়েও তেমন সমস্যা হচ্ছে না। বাইরে আগুন লাগলেও দেখা যাচ্ছে, অনেক ফাইলের কাভার পুড়েছে; ভেতরে ঠিক আছে। আবার অনেকগুলো পোড়েনি, শুধু ধোঁয়ায় কালো হয়ে গেছে।

সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমের বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনেই প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নতুন দেওয়া হয়েছে। তারা কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। এখন কাজে গতি আসবে। নাগরিক সেবাও বাড়বে। উপদেষ্টার অভিজ্ঞতার ঘাটতি প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘হি ইজ ডুইং ভেরি ওয়েল। আমরা আলোচনা করে কাজগুলো করছি। আর উনার দপ্তরেও কোনো ফাইল আটকে থাকছে না। সব মিলিয়ে কোনো সমস্যা নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইমানের রোকন কয়টি ও কী কী
  • চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি: লুট করা মুঠোফোনের বিনিময়ে গাঁজা কেনেন আসামিরা
  • এফবিআইপ্রধান ক্যাশ প্যাটেলকে মাদক, তামাক, আগ্নেয়াস্ত্রবিষয়ক ব্যুরোর দায়িত্বও দিচ্ছেন ট্রাম্প
  • বিদেশে গেলেই লোকে ভাবে পাত্রের খোঁজে গিয়েছি: পায়েল
  • বিদেশে ঘুরতে গেলেই লোকে ভাবে পাত্রের খোঁজে গিয়েছি : পায়েল
  • ফ্রান্সে ছুরি নিয়ে হামলায় নিহত ১, আহত ৩ পুলিশ
  • ইউক্রেন যুদ্ধের ৩ বছর: ‘ট্রাম্প একজন অপ্রত্যাশিত বিজয়ী’
  • সংস্কার কমিশনের সুপারিশ: মেয়র ও চেয়ারম্যান পদে সরাসরি ভোট নয়
  • কোনো কাজেই গতি নেই নাগরিক সেবা লাটে