প্রস্তাবিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিটি দায়সারা
Published: 23rd, February 2025 GMT
নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির একটি খসড়া তৈরি করে নাগরিকদের মতামত চেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এটি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাড়াহুড়ায় করা প্রস্তাবিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি দায়সারা হয়েছে। এতে দেশের জ্বালানিনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। বরং জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবসার স্বার্থ রক্ষা করবে এবং তারা আরও বেশি মুনাফাভোগী হবে। জনগণের ওপর নতুন করে আর্থিক চাপ বাড়বে।
উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোটের (ক্লিন) উদ্যোগে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির একটি খসড়া নিয়ে রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ রোববার বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে উপস্থাপন করা লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা প্রণয়নে সব সময় সমন্বয়হীনতা লক্ষ করা যায়। এর ফলে এ খাতের সফলতা অধরা থেকে যাচ্ছে এবং ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আরও নির্ভরশীল হতে হচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রস্তাবিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালাটি প্রণয়নে সরকার বেশ তাড়াহুড়ো করছে। আগের সরকারের সময় করা খসড়া কিছুটা কাটছাঁট করে এটি তৈরি হয়েছে। সরকারের ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালায় আলাদা পরিকল্পনা থাকায় বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হতে পারেন। তাই সবার আগে জাতীয় জ্বালানি নীতিমালা তৈরি করা দরকার।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চের পরিচালক মো.
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ক্লিনের প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী। তিনি বলেন, সরকার একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা প্রণয়নে চার বছরের বেশি সময় নিয়েছে। আর মতামত দিতে নাগরিকদের মাত্র ২১ দিন সময় দিয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, খসড়া নীতিমালাটিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য কমানো হয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়। ২০৩০ সালের মধ্যে ৬ হাজার ১৪৫ মেগাওয়াট (২০%) এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ১৭ হাজার ৪৭০ মেগাওয়াট (৩০%) ধরা হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন কৌশল বা অর্থায়ন ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা খসড়ায় নেই। নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কোম্পানিগুলো ১০ বছর সম্পূর্ণ এবং ৫ বছর আংশিক কর অব্যাহতি পেলেও সাধারণ নাগরিকেরা কোনো কর–সুবিধা বা প্রণোদনা পাচ্ছেন না। অন্যদিকে অন্যান্য দেশে ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপনে সরাসরি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়, কিন্তু প্রস্তাবিত নীতিমালায় এমন কোনো সুবিধা রাখা হয়নি।
ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ এশিয়া প্যাসিফিকের সমন্বয়কারী বারিশ হাসান চৌধুরী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালার সংজ্ঞাগুলো অনেক ক্ষেত্রেই বিভ্রান্তিকর। এতে কার্বন নির্গমন হ্রাসের কথা উল্লেখ করেছে, তবে নির্দিষ্ট পরিমাণ বা সময়সীমা নির্ধারণ করেনি। নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া এই নীতিমালা একধরনের দিকনির্দেশনাহীন নৌকার মতো, যা বাস্তবে কার্যকর ফল দিতে পারবে না।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদ উদযাপনে বাড়ি ফিরে প্রাণ হারাল শিশু সুমাইয়া
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মহাসড়ক পারাপার হওয়ার সময় নূর পরিবহনের বাসের চাপায় সুমাইয়া আক্তার (৮) নামে এক শিশু প্রাণ হারিয়েছে। পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য মা-বাবার সাথে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরছিল সে। মুহূর্তে পরিবারের ঈদ আনন্দ বিষাদে রূপ নেয়।
শনিবার (২৯ মার্চ) সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের আহসানমারা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সুমাইয়া জয়কলস নোয়াগাঁও গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের মেয়ে৷
পুলিশ জানায়, শনিবার সকালে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য মা-বাবার সাথে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরে শিশু সুমাইয়া৷ পরে উপজেলার নোয়াগাঁও এলাকায় সড়ক পারাপারের সময় শিশটি বাসচাপায় সড়কেই প্রাণ হারায়। এসময় ক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়কে জড়ো হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়৷ পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় শান্তিগঞ্জ থানা ও জয়কলস হাইওয়ে পুলিশ যানচলাচল স্বাভাবিক করে৷
জয়কলস হাইওয়ে থানা পুলিশের এসআই নাজমুল ইসলাম বলেন, “বাসচাপায় এক শিশু নিহত হয়েছে। এতে স্থানীয় এলাকার জনতা সড়কে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে এলাকার সচেতন বাসিন্দাদের সহযোগিতায় পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক করে। এ ঘটনায় ঘাতক বাসটি জব্দ করা হয়েছে৷”
ঢাকা/মনোয়ার/টিপু