কুমিল্লায় আদালত প্রাঙ্গণে জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধের একটি মামলার বাদীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন আসামিরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত ব্যক্তির নাম সুমন মিয়া। তিনি জেলার হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্দি এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করে পুলিশে দেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন। তাঁরা হলেন শ্রীমদ্দি এলাকার মতিন মিয়া (৪৮) ও সাদ্দাম হোসেন (২৯)।

এদিকে ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, আসামিদের হামলায় মামলার বাদী সুমন মারা গেছেন। তবে সুমন মিয়া শঙ্কামুক্ত আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন নগরের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মহিনুল ইসলাম।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার গাজী আরিফুল ইসলাম বলেন, সুমন নামের ওই ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর। তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) পাঠানো হয়েছে। তাঁরা তাঁকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আহত সুমনের বড় বোন ইয়াসমিন আরা বেগম জানান, গত ১৫ জানুয়ারি জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনায় প্রতিবেশী মতিন ও সাদ্দামের বাবা খালেক মিয়াসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন সুমন। এ ঘটনার জেরে ১৫ ফেব্রুয়ারি সুমনের বাবা দৌলত মিয়াকে পেটায় আসামিপক্ষ। এ ঘটনায় আবার থানায় অভিযোগ করে উভয় পক্ষ। এসব মামলায় আজ আসামিরা আদালতে আইনি পরামর্শ চাইতে এলে সুমন তাঁদের সামনে পড়েন। একপর্যায়ে আসামিরা তাঁকে বেধড়ক পেটান। এতে সুমন অচেতন হয়ে পড়েন। পরে আদালতে উপস্থিত লোকজন সুমনকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান এবং মতিন ও সাদ্দামকে আটক করে পুলিশে দেন।

আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, যাঁরা মামলার বাদী সুমনকে মেরেছেন, তাঁদের মধ্যে দুজনকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় সুমন বা তাঁর পরিবার চাইলে মামলা করতে পারে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে সুমন নামের বাদীকে মারধরে সময় উপস্থিত লোকজন মতিন ও সাদ্দাম নামের দুজনকে আটক করে পুলিশে দেন। তাঁদের থানায় আনা হয়েছে। আহত সুমন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, সুমনের অবস্থা উন্নতির দিকে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে ১ হাজার শয্যার হাসপাতালের দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন

চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত এক হাজার শয্যার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পঞ্চগড়ে স্থাপনের দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন করেছে জেলার বাসিন্দারা। পঞ্চগড় জেলা সমিতির আয়োজনে শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকায় অবস্থানরত জেলাটির কয়েক শতাধিক বাসিন্দা মানববন্ধনে অংশ নেন।

এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পঞ্চগড় জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ ড. আব্দুর রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, সমিতির সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আইনুল হক পিইঞ্জ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সফিউল আলম, আনজারুল হক, মুক্তার আলম, মাখদুম মাসুম মাশরাফি যুক্তি, মাসুদ, সরোয়ারসহ জেলা সমিতির অন্যান্য নেতারা।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পঞ্চগড় জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা 
মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঢাকা থেকে সবচেয়ে দূরের জেলা পঞ্চগড়। এই কারণে সম্ভবত পঞ্চগড়ের মানুষের আর্তনাদ আপনাদের কানে পৌঁছায় না। আপনারা ঢাকায় বসে অনুভব করতে পারবেন না, পঞ্চগড়ের ১২ লাখ মানুষের জন্য শুধু প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। এর পরের চিকিৎসার জন্য পারি দিতে হয় রংপুর অথবা দিনাজপুর। পথেই অসংখ্য মানুষকে মৃত্যুবরণ করতে হয়। 

তারা আরও বলেন, আমরা পঞ্চগড়ের মানুষ রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সে আর মৃত্যুবরণ করতে চাই না, চিকিৎসা নিয়ে নিজ মাটি পঞ্চগড়ে মৃত্যুবরণ করতে চাই। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে পঞ্চগড়ের অনেক এমপি, মন্ত্রী, স্পিকার দেখেছি, অনেক সরকার বাহাদুর দেখেছি। একটা উন্নত হাসপাতাল দেখি নাই। তাই ৫ আগস্ট এর পরের বৈষম্যহীন বাংলাদেশে বৈষম্যহীন সিদ্ধান্ত নিন, চীনা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল পঞ্চগড়ে স্থাপন করুন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের উত্তর জনপদের সম্ভাবনাময় জেলা পঞ্চগড়। সমতল ভূমিতে বিস্তৃর্ণ চা-বাগান, পাথর-নদীতে সমৃদ্ধ জেলাটির ভৌগলিক অবস্থান পর্যটনের অপার সম্ভাবনার হাতছানি দেয়। পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা (স্থলবন্দর) থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব মাত্র ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, শিলিগুড়ির দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পঞ্চগড়ে হলে ভুটান, নেপাল ও চীনের ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসবেন। চিকিৎসাসেবা নিতে আসবেন। পঞ্চগড়ের মানুষও বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা পাবেন।

দাবি না মানলে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ