দিঘলিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন
Published: 23rd, February 2025 GMT
বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাত, সরকারি জমি বিক্রি, আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা এবং আলোচিত খুলনার শেখ পরিবারের আস্থাভাজন দিঘলিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হায়দার মোড়লকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত উপজেলা চৌরাস্তা মোড়ে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। এ সময় বক্তৃতা করেন পথের বাজার মাংস ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম, স্থানীয় খসরুল মোড়ল, মিঠু, রাজু আহমেদ, রনি প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, দিঘলিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হায়দার আলীর বিরুদ্ধে স্ট্যাম্পে চুক্তি করে সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত জমির পজিশন বিক্রি করে মোটা অংকের অর্থ আদায়, আশ্রায়ন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাত, টিআর-কাবিটা প্রকল্পের কাজে নয়-ছয় করে অর্থ আত্মসাত, গভীর নলকূপের বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এলজি এসপি প্রকল্প, হাট বাজার, উন্নয়ন তহবিল, উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ ও কর্মসৃজন প্রকল্পসহ সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের ১০ শতাংশ কমিশন দিয়ে বহু ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনাসহ তার দোসররা দেশ ছেড়ে পালালেও আওয়ামী লীগের দোসর আলোচিত এই চেয়ারম্যান এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে মানববন্ধন
কুষ্টিয়ায় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলা, ওসি প্রত্যাহার
এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, হায়দার আলীর নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ রয়েছে। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে বলে। তিনি খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং শেখ পরিবার ও সাবেক এমপি সালাম মূর্শেদীর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। এ সুবাদে একাধিকবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
বিভিন্ন সময় চেয়ারম্যান হায়দার আলী বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে উল্লিখিত অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
সারা দেশে সব কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ আজ
ছয় দফা দাবিতে আজ রোববার সারা দেশে মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। সব কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে এ সমাবেশ হবে।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। মানববন্ধন শেষে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটকের নামফলক লাল কাপড়ে ঢেকে দেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল তাঁদের কর্মসূচি ছিল ‘রাইজ ইন রেড’। কর্মসূচি পালনকালে আন্দোলনকারীরা ‘মামা থেকে মাস্টার, মামাবাড়ির আবদার’, ‘এক হও এক হও, পলিটেকনিক এক হও’, ‘ষড়যন্ত্রের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব দাও’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মাসফিক ইসলাম মানববন্ধনে বলেন, আগামীকাল (রোববার) মহাসমাবেশের মাধ্যমে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নে চূড়ান্ত সময়সীমা ঘোষণা করবেন।
গত বুধবার ছয় দফা দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। সড়ক আটকে রাখায় তীব্র যানজটে পড়ে দিনভর ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। পরে তাঁরা সারা দেশে বৃহস্পতিবার ‘রেল ব্লকেড’ বা রেলপথ অবরোধ করার ঘোষণা দেন। পরে অবশ্য রেল ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল করা হয়।
বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের বৈঠক হয়, কিন্তু তাতে শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট হননি। এ অবস্থায় তাঁরা আন্দোলনের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি কোটা বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল, ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত, ২০২১ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
ঢাকার বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশগাজীপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের শিববাড়ী মোড়ে শিমুলতলী-শিববাড়ী সড়ক অবরোধ করে তাঁরা এ কর্মসূচি করেন। সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) ফটক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নগরের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিববাড়ী মোড়ে পৌঁছালে তাঁরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সমাবেশ শেষ করে তাঁরা ফিরে যান।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুর শহরের বায়তুল আমান এলাকায় অবস্থিত ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মসূচি পালিত হয়। ফরিদপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটকের সামনে রাস্তায় মানববন্ধন পালন করা হয় ও মানববন্ধন–পরবর্তী প্রতিষ্ঠানের মূল ফটক অনির্দিষ্টকালের জন্য লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।
গতকাল বেলা একটার দিকে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরের চৌমাথা এলাকায় এসে জড়ো হন। সেখান ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন তাঁরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাবির পক্ষে অবস্থান নেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা দাবি আদায় না করে রাজপথ ছাড়ব না।’ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, ‘আমরা এই হামলাকারীদের বিচার চাই।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা]