দেশের ৭৭ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যহানিকর পণ্যে উচ্চ হারে কর চান
Published: 23rd, February 2025 GMT
স্বাস্থ্যহানিকর পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর আরোপ করা উচিত বলে মনে করেন দেশের ৭৭ শতাংশ মানুষ। নারী-পুরুষ সবারই মত প্রায় সমান। ১৮ বছরের বেশি বয়সী সব মানুষের মনোভাব মোটামুটি একই।
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্যের ওপর কর আরোপের ব্যাপারে মানুষের এ ধরনের মতামত উঠে এসেছে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারবিষয়ক জনমত জরিপে। কমিশনের অনুরোধে জাতীয় এই জরিপ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বিবিএস গত সপ্তাহে জরিপের প্রাথমিক প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিয়েছে।
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্যের তালিকায় আছে কোমল পানীয় বা কোল্ড ড্রিংকস, শক্তি বৃদ্ধিকারী পানীয় বা এনার্জি ড্রিংকস, ফাস্ট ফুড, চিপস, নুডলস, বিড়ি-সিগারেট ও তামাক। এসব পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর বসানো উচিত কি না, তা ৬৪ জেলার শহর ও গ্রামের মানুষের কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিবিএসের জরিপকারীরা।
জরিপে দেখা গেছে, উচ্চ হারে কর বসানোর পক্ষে মত দিয়েছেন ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। কর বসানোর বিপক্ষে ২০ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে বাকি ২ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তাঁরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ নারী ও ৭৭ শতাংশ পুরুষ মোটামুটি একই হারে কর বসানোর পক্ষে। গ্রামের মানুষের মধ্যে ৭৬ দশমিক ২ শতাংশের চেয়ে কর বসানোর মনোভাব শহরের মানুষের মধ্যে বেশি। ৮০ দশমিক ৩ শতাংশ শহরবাসী কর বসাতে চান।
তবে সব বিভাগের মানুষের মধ্যে একই মনোভাব দেখা যায়নি। উচ্চ হারে কর আরোপের পক্ষে সবচেয়ে বেশি খুলনা বিভাগের মানুষ (৮৯ দশমিক ৬ শতাংশ)। এই হার সবচেয়ে কম ঢাকা বিভাগে (৭০ দশমিক ৭ শতাংশ)। অন্য বিভাগগুলোর অবস্থান পর্যায়ক্রমে এ রকম: চট্টগ্রাম (৮৫), ময়মনসিংহ (৮০ দশমিক ৩), বরিশাল (৭৫ দশমিক ৭), রাজশাহী (৭৪ দশমিক ১), রংপুর (৭৩ দশমিক ৪০) ও সিলেট (৭৩ দশমিক ৩)।
বিড়ি-সিগারেট বা তামাক নানা ধরনের ক্যানসারের কারণ। আবার ফাস্ট ফুড বা কোমল পানীয় স্থূলতার কারণ। এসব খাবার হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এসব পণ্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে নানা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারবিষয়ক কমিশনের একাধিক সদস্য প্রথম আলোকে বলেছেন, উচ্চ হারে কর বসালে স্বাস্থ্যহানিকর কিছু পণ্যের ব্যবহার মানুষ কম করবে বলে আশা করা যায়। অন্যদিকে এসব পণ্য থেকে পাওয়া কর স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজে লাগানো যাবে কি না, তা নিয়েও সুপারিশ থাকবে সংস্কার কমিশন প্রতিবেদনে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক-প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে শিক্ষা উপদেষ্টার তাগিদ
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে তাগিদ দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল ইসলাম আবরার। তিনি শিল্পের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এ বিষয়গুলোতে নজর রেখে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে দক্ষতা ও বাস্তবমুখী করা জরুরি।
মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক নয়, বরং সহায়ক কর্তৃপক্ষ হিসেবে ভূমিকা রাখবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসন ও শিক্ষাক্রমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে তাদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া গুণগতমান উন্নয়ন ও গবেষণা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে নীতিগত সহায়তা দেওয়া হবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর প্রক্রিয়া চলমান। এর মাধ্যমে গবেষণা ও নতুন উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা দেশ ও জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যথাসম্ভব সহায়তা করবে।
উপদেষ্টার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিয়া ও শিল্পখাতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে। আগামীতে এ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান ড. সবুর খান অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর করারোপ প্রসঙ্গে বলেন, যে পরিমাণ অর্থ কর হিসেবে আদায় করা হয়েছে, তা গবেষণা কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য পুনরায় বরাদ্দ করা উচিত। এ অর্থ উদ্ভাবনী গবেষণা, প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যয় হলে উচ্চশিক্ষা খাত আরও সমৃদ্ধ হবে।
বৈঠকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপউপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের পদ্ধতি প্রসঙ্গে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আবেদীন বলেন, প্রতিটি পদের জন্য ১৫-২০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তিনজন অধ্যাপকের নাম প্রস্তাব করতে হয়। সে হিসাবে সহস্রাধিক মানসম্পন্ন অধ্যাপক পাওয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমিতির কোষাধ্যক্ষ কে বিএ ম মঈন উদ্দিন চিশতি বলেন, একটি মানসম্পন্ন ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য কয়েকশ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে নিজস্ব অর্থায়নে জমি কেনার পর ক্যাম্পাস নির্মাণে অর্থের সংস্থান করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তিনি স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ পাওয়ার বিষয়ে সরকারি সহায়তার কথা উল্লেখ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য কাইয়ূম রেজা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।