সারা দেশে ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ মিছিল
Published: 23rd, February 2025 GMT
সারা দেশে ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। এ সময় বিক্ষোভ মিছিল কয়েকটি সড়ক ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তাঁরা।
সমাবেশে বক্তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানান। একই সঙ্গে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত সময়ে দেখেছি, পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের সময় ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। আজ কিন্তু সেই সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নেই। তবুও আমরা সারা দেশে ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের ঘটনা প্রতিদিন দেখতে পাচ্ছি। গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম ধর্ষণের ঘটনা, ছিনতাইয়ের ঘটনা ও সন্ত্রাসের ঘটনা দেখব, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা যদি একটা সাম্য, মানবিক ও ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ গড়তে চাই, তাহলে সরকারকে প্রথমেই বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং সুশাসন গড়ে তুলতে হবে। একটি আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাইলে সাধারণ মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা আছে, সে আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘যদি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে তাঁকেও আমরা ক্ষমতা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামাব। আমরা কাউকে ক্ষমতায় বসাতে আন্দোলন করিনি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছি ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার যে ঘাটতি শেখ হাসিনার আমলে ছিল, সেটি যেন পূরণ হয়। এ জন্য অনেকে শহীদ হয়েছেন, অনেকে আহত হয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, দেশের যে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রয়েছে, সেখান থেকে বের হয়ে পুলিশ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সজাগ রাখতে হবে এবং দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে সমাপনী বক্তব্য দেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী নিবিড় ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘রাজধানী ঢাকাসহ পুরো বাংলাদেশের কোথাও নির্বিঘ্নে যাতায়াত করা যাচ্ছে না। জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। মনে হচ্ছে, এই বুঝি ছিনতাই করে নিল সবকিছু। অবিলম্বে প্রত্যেক নারী ও ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে দ্রুত ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুত যাতে বাংলাদেশের ল অ্যান্ড অর্ডার ফাংশন করে, তার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার যে দায়িত্ব সেটি পালন করতে হবে, তা না হলে জাহাঙ্গীরনগর থেকে আমরা ঘোষণা দিতে চাই, আপনাকে টেনেহিঁচড়ে নামাতে আমরা এক মিনিটও সময় নেব না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত করত সরক র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান, ১৪৪ ধারা জারি
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে যাওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নড়িয়া পৌরসভা এলাকায় এ আদেশ বলবৎ থাকবে।
সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ১৪৪ ধারার আদেশ প্রচার করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ১৪৪ ধারার নোটিশে বলা হয়, নড়িয়া উপজেলার বিএনপির দুটি পক্ষ একই স্থানে কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষায় পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এ সময়ের মধ্যে কোনো সভা, জমায়েত, মাইক ব্যবহার বা আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থী কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ উঠেছে, নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদের নেতৃত্বে পদ্মা নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করছে একটি চক্র। ফরিদ আহমেদ নড়িয়ার চরআত্রা এলাকার স্তূপ করা ১০ কোটি ঘনফুট বালু নিলামে কিনেছেন। কিন্তু তিনি ড্রেজার লাগিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এতে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ ও ফসলি জমি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ১৪, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল নড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহম্মেদ, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এস এম ফয়সাল, ঢাকার কলাবাগান থানা মহিলা দলের সভাপতি শামীমা জামানসহ নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
আরও পড়ুনপদ্মার বালু উত্তোলন ঘিরে নড়িয়ায় বিএনপির দুই পক্ষ মুখোমুখি৪ ঘণ্টা আগেনড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নড়িয়ায় বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে যায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নড়িয়ায় বিএনপির দুটি পক্ষ একই সময়ে একই স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নদীর তীরে স্তূপ করে রাখা ড্রেজিং মাটি বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হলেও নির্ধারিত এলাকা ছাড়িয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছি। তারা নির্দেশনা না মানলে, তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হবে।’