সারা দেশে ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। এ সময় বিক্ষোভ মিছিল কয়েকটি সড়ক ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তাঁরা।

সমাবেশে বক্তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানান। একই সঙ্গে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত সময়ে দেখেছি, পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের সময় ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। আজ কিন্তু সেই সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নেই। তবুও আমরা সারা দেশে ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের ঘটনা প্রতিদিন দেখতে পাচ্ছি। গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম ধর্ষণের ঘটনা, ছিনতাইয়ের ঘটনা ও সন্ত্রাসের ঘটনা দেখব, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা যদি একটা সাম্য, মানবিক ও ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ গড়তে চাই, তাহলে সরকারকে প্রথমেই বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং সুশাসন গড়ে তুলতে হবে। একটি আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাইলে সাধারণ মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা আছে, সে আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘যদি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে তাঁকেও আমরা ক্ষমতা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামাব। আমরা কাউকে ক্ষমতায় বসাতে আন্দোলন করিনি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছি ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার যে ঘাটতি শেখ হাসিনার আমলে ছিল, সেটি যেন পূরণ হয়। এ জন্য অনেকে শহীদ হয়েছেন, অনেকে আহত হয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, দেশের যে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রয়েছে, সেখান থেকে বের হয়ে পুলিশ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সজাগ রাখতে হবে এবং দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে সমাপনী বক্তব্য দেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী নিবিড় ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘রাজধানী ঢাকাসহ পুরো বাংলাদেশের কোথাও নির্বিঘ্নে যাতায়াত করা যাচ্ছে না। জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। মনে হচ্ছে, এই বুঝি ছিনতাই করে নিল সবকিছু। অবিলম্বে প্রত্যেক নারী ও ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে দ্রুত ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুত যাতে বাংলাদেশের ল অ্যান্ড অর্ডার ফাংশন করে, তার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার যে দায়িত্ব সেটি পালন করতে হবে, তা না হলে জাহাঙ্গীরনগর থেকে আমরা ঘোষণা দিতে চাই, আপনাকে টেনেহিঁচড়ে নামাতে আমরা এক মিনিটও সময় নেব না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত করত সরক র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৫০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের দুই দফায় সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ও গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের কামালদিঘী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় একটি পক্ষের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

স্থানীয় লোকজনের দাবি, মাদকের পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে পুলিশের ভাষ্য, পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এই সংঘর্ষ হয়েছে। একটি পক্ষ ঘটনাটিকে ইয়াবা বড়ি বিক্রির ঘটনা সাজানোর চেষ্টা করছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ফান্দাউক ইউনিয়নের ফান্দাউক গ্রামের রুবেল শাহ একজন মাদক ব্যবসায়ী। কয়েক দিন আগে রুবেলের কাছ থেকে একই গ্রামের শাফায়েত মিয়া কিছু ইয়াবা বড়ি কেনেন। পাওনা টাকা চাওয়ায় কিছুদিন পরপর তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। মাদক বিক্রির পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে গতকাল রাত ১০টার দিকে রুবেল শাহ ও শাফায়েতের এক স্বজন পারভেজ মিয়ার মধ্যে ফান্দাউক গ্রামের কামালদিঘী পাড়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়েন। সে সময় উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ ৩০ জন আহত হন। সেই সংঘর্ষের জেরে আজ বেলা ১১টার দিকে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় শাফায়েতের পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে।

সংঘর্ষের পর দুই পক্ষের আহত ব্যক্তিরা চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।
সংঘর্ষের বিষয়ে রুবেল শাহ অভিযোগ করেন, ‘আমার বড় ভাই নাইম শাহ পাশের বাড়ির শাফায়েত ও পারভেজের কাছে ৭০ হাজার টাকা পাওনা আছেন। টাকা ফেরত চাওয়ায় শাফায়েতের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালান। দুই দফায় হামলায় আমাদের ৭০ থেকে ৮০ জন আহত হয়েছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে শাফায়েত মিয়া ও পারভেজ মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে পাওনা টাকা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে আজ আবার দুই পক্ষের লোকজন জমায়েত হয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতির কারণে কোনো সংঘর্ষ হয়নি। ২০ জনের মতো আহত হয়েছেন। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। একটি পক্ষ এটিকে ইয়াবার ঘটনা বলে প্রচার করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মৌলভীবাজারের ‘গলফ মাঠ’ এক টুকরা সবুজ ঘাসের দেশ
  • স্বামী হারিয়ে দুই সন্তান নিয়ে শঙ্কিত ইয়াসমিন
  • স্ত্রীর সামনে সাবেক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা, ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার নেই
  • স্ত্রীর সামনে সাবেক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা, মামলা পরও গ্রেপ্তার নেই
  • ধামরাইয়ে দিনদুপুরে স্ত্রীর সামনে স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা
  • জাবিয়ান ফুটসাল কার্নিভাল শুরু
  • ফুল দিতে যাওয়া ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের ভিডিও করায় সাংবাদিকের ওপর হামলা
  • এমসি কলেজে শিক্ষার্থীকে পেটানোর প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৫০