ম্যাটস শিক্ষার্থীদের অযৌক্তিক চার দফা দাবির বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে ক্লাস বর্জন করে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ চত্বরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভকারীরা জানান, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে একটি মৌলিক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। পাঁচ দফা দাবি স্বাস্থ্য খাতে একটি বিপ্লব ঘটাতে পারে। দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থা ও অনিশ্চয়তা দূর হবে, তেমনি অন্যদিকে রোগী ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী জুয়েল রানা বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবিতে দেশের বেশ কিছু মেডিকেল কলেজে কয়েক দিন ধরে আন্দোলন চলছে। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চললেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার রয়েছে। তারা আমাদের দাবি পূরণের কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না। তাদের এই উদাসীনতায় আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা মনে করি, তারা আমাদের দাবিগুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছে না।’

শিক্ষার্থী শাওরিন ইসলাম বলেন, ‘আমরা এত কষ্ট করে পড়ছি; কিন্তু এসএসসি পাস করে ম্যাটসের শিক্ষার্থীরা ডাক্তার সেজে বসে। এসব নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে। আমাদের কেন কর্মসূচি দিতে হবে, রাষ্ট্র কেন অবিবেচকের মতো আজগুবি সিদ্ধান্ত নেয়।’

আরও পড়ুন৫ দফা দাবিতে রংপুরের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, সড়ক অবরোধ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী হারুন অর রশিদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মেডিকেলে ম্যাটসদের ডাক্তার পদবি ব্যবহার নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে এলেও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তাই সারা বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজগুলোর সঙ্গে একমত হয়ে আমরা আজকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে সমবেত হয়েছি। আমাদের যৌক্তিক পাঁচ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরব না। দাবি শিগগিরই না মানলে কাল থেকে হাসপাতাল ও ক্যাম্পাস কমপ্লিট শাটডাউন করতে বাধ্য হব।’

বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ম ড ক ল কল জ ম ড ক ল কল জ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিচার সেবা দেওয়া দ্রুত ও কার্যকর নিশ্চিত করাই লক্ষ্য: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “জনগণকেন্দ্রিক বিচার সেবা প্রদান ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং সাধারণ জনগণের জন্য দ্রুত ও কার্যকর সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।”

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি সেমিনারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “এই সেমিনারের সময়সূচি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের সেমিনার সিরিজের পঞ্চম এবং রাজধানীর বাইরে অনুষ্ঠিত চতুর্থ সেমিনার।”

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপিপন্থিদের জয় 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি

তিনি বলেন, “সেমিনারটি এমন একটি সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন দেশ ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন খাতভিত্তিক সংস্কার প্রস্তাবের ওপর রাজনৈতিক ঐক্যমত্য গঠনের প্রচেষ্টা চলছে।”

তিনি বলেন, “বিচার বিভাগ গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে সংস্কার কার্যক্রমের ক্ষেত্রে একটি অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে, যা সর্বোচ্চ আদালতের নেতৃত্বে বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিচার বিভাগের বিস্তৃত এবং বিশদ খাতভিত্তিক সংস্কার প্রস্তাবসমূহ প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সংস্কার কমিশনগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করা হয়েছে এবং তাদের প্রস্তাবে সেগুলোর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।”

প্রধান বিচারপতি বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপির সহযোগিতায় আয়োজিত সংস্কার রোডশো এখন একটি শক্তিশালী গতি অর্জন করেছে। ফলে জেলা আদালত এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেসি নিজেদের সংস্কার কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

প্রধান বিচারপতি বলেন, “২০২৫ সালের ১০ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারিতে রাজশাহী জেলা আদালত, মেট্রোপলিটন সেশন আদালত এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চালু হওয়া হেল্পলাইন, যা সুপ্রিম কোর্ট হেল্পলাইন অনুসরণ করে চালু করা হয়েছে। রাজশাহীর এই উদ্যোগটি সুপ্রিম কোর্টের ১২ দফা নির্দেশনার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো জনগণকেন্দ্রিক বিচারসেবা প্রদান ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং সাধারণ জনগণের জন্য দ্রুত ও কার্যকর সেবা নিশ্চিত করা।”

প্রধান বিচারপতি বলেন, “এখন ময়মনসিংহ সেমিনারের মূল উদ্দেশ্য হবে এই সংস্কার প্রক্রিয়াকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমাদের এখন সময় এসেছে, আমাদের সংস্কার প্রচেষ্টার স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার উপায় খুঁজে বের করার।”

জেলা বিচার বিভাগ এবং ম্যাজিস্ট্রেসিকে তাদের নিজ-নিজ অবস্থান থেকে সংস্কারক এবং উদ্ভাবক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি। ২১ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতির অভিভাষণে উপস্থাপিত সংস্কার কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে স-স ক্ষেত্রে আন্তরিক হতে গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, “আগামী সপ্তাহ এবং মাসগুলো জেলা বিচার বিভাগ এবং ম্যাজিস্ট্রেসির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই সময় আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসন এবং ভবিষ্যৎ সংস্কারের পথে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। এই সংস্কার রোডশোগুলোর মাধ্যমে আমরা সঠিক প্রক্রিয়া এবং চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার কার্যকর পথ খুঁজে পেয়েছি।”

প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমার বার্তা খুবই স্পষ্ট দায়িত্ব নিন। আমি আশা করি, এই বার্তা সারাদেশে শক্তিশালীভাবে প্রতিধ্বনিত হবে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর মাইকেল মিলার। সেমিনারে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা অংশ নেন।

সেমিনারে স্বাগত বক্তৃতায় ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার দেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন। উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস দেয় ইউএনডিপি।

ঢাকা/মিলন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
  • বিড়ালপ্রেমীদের মিলনমেলা
  • বিচার সেবা দেওয়া দ্রুত ও কার্যকর নিশ্চিত করাই লক্ষ্য: প্রধান বিচারপতি
  • সংস্কার কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগ অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে: প্রধান বিচারপতি
  • লালগালিচায় নানা ভঙিমায় বিড়ালের ‘ক্যাটওয়াক’
  • ফাগুনের দুপুরে রাজধানীতে বৃষ্টি
  • ময়মনসিংহে পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ৩
  • ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাস থেকে দেশি অস্ত্র উদ্ধার, জমা পড়েছে তদন্ত প্রতিবেদন
  • নদী খননের দাবিতে সড়ক অবরোধ