চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি একসঙ্গে
Published: 23rd, February 2025 GMT
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আবেদনের বিষয়টি উল্লেখ করে আজ রোববার সময়ের আরজি জানান দুদকের আইনজীবী। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো.
মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এর আগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ৭ নম্বর ক্রমিকে ছিল। সকালে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে বিষয়টি উল্লেখ করে দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, দুদক লিভ টু আপিল করেছে। একসঙ্গে শুনানি জন্য সময়ের আরজি জানান তিনি।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের সঙ্গে দুদকের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসবে।’
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া এবং অপর দুজনের করা পৃথক আপিল মঞ্জুর করে গত ২৭ নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বাতিল করা হয়। মামলা থেকে খালাস পান খালেদা জিয়া ও অপর দুজন। এই দুজন হলেন হারিস চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম ও সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ চলতি মাসে লিভ টু আপিল করে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার দুদক একটি লিভ টু আপিল করে। এই দুই লিভ টু আপিলের ওপর এখন আপিল বিভাগে একসঙ্গে শুনানি হতে যাচ্ছে।
দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুদকের আবেদনটি কার্যতালিকায় ছিল না। তাই রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের সঙ্গে ট্যাগ করে একসঙ্গে শুনানির জন্য আরজি জানিয়ে সময় চাওয়া হয়। একসঙ্গে শুনানির জন্য আগামী সপ্তাহে আসবে।’
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়। একই সাজা হয় অপর আসামিদের।
বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ডের আদেশ স্থগিত করেন।
এর ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেন তাঁর আইনজীবীরা। আপিল শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে মামলার পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরির জন্য অনুমতি চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদন গত বছরের ৩ নভেম্বর মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। শুনানি শেষে এই আপিল মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ন ন র জন য র ষ ট রপক ষ র আইনজ ব একসঙ গ বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
মধ্যযুগের স্থাপনার অনন্য নিদর্শন নারায়ণগঞ্জের বন্দর শাহি মসজিদ
শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব তীরে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে অবস্থিত বন্দর শাহি মসজিদ। মধ্যযুগের স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন এই মসজিদ। কালো ব্যাসেল্ট পাথরের মসজিদের গায়ে লাগানো শিলালিপিতে মসজিদের নির্মাতা ও নির্মাণকাল সম্পর্কে জানা যায়, ১৪৮১-৮৮ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান জালাল উদ্দিন ফতেহ শাহের রাজত্বকালে মালিক আল মুয়াজ্জেম বাবা সালেহ মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।
১৯২০ সালের ২৬ নভেম্বর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদটি সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত প্রাচীন এই মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেছেন। মসজিদটিতে স্থানসংকুলান না হওয়ায় পূর্ব দিকে স্থানীয় উদ্যোগে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য বারান্দা নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ঝুঁকির কারণে ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ পাশে নতুন তিনতলা মসজিদ নির্মাণ করা হলে প্রাচীন মসজিদটিতে নামাজ পড়া বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৫৫০ বছর আগে নির্মিত মসজিদটি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ বহু মানুষ আসেন।
চুন-সুরকি দিয়ে ইটের তৈরি বর্গাকার এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ এটি। মসজিদের চার কোণে চারটি অষ্টভুজাকৃতি বুরুজ এবং তার ওপর ছত্রী আছে। চার কাতারে প্রাচীন মসজিদটিতে একসঙ্গে ৬০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। বর্তমানে নতুন মসজিদে একসঙ্গে ৫০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করেন।
৩৪ বছর ধরে বন্দর শাহি মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. মনিরুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনায়। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, নিখুঁত হাতে বন্দর শাহি মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মুসল্লিরা প্রাচীন এই মসজিদে নামাজ আদায় করতেন। মসজিদে শীতের সময় গরম এবং গরমের সময় ঠান্ডা অনুভব হতো। পুরোনো হওয়ায় ঝুঁকি বিবেচনায় এবং মেঝে নিচু হওয়ার কারণে বর্ষায় পানি ওঠায় ১৯৯৭ সালে প্রাচীন মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধ হয়ে যায়।
প্রায় ৫৫০ বছর আগে নির্মিত মসজিদটি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ বহু মানুষ আসেন