চট্টগ্রাম নগরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর নাম মো. আলাউদ্দিন (৩৬)। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে নগরের হালিশহর থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ ঘটনায় আলাউদ্দিনের স্ত্রী নুর জাহানকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত আলাউদ্দিন পেশায় দিনমজুর। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার মতি আলম বাজারের মইন উদ্দিনের ছেলে তিনি। পুলিশ বলছে, নুর জাহান স্বামী আলাউদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তাঁকে না জানিয়ে পঞ্চম বিয়ে করায় ক্ষোভ থেকে স্বামীকে হত্যা করেন নুর জাহান।

হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মনিরুজ্জামান আজ রোববার প্রথম আলোকে বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্ত্রী। স্বামী আলাউদ্দিন একেক সময় একেক ধরনের কাজ করতেন। কখনো রিকশা চালিয়ে আবার কখনো ইটভাটায় কাজ করে সংসার চালাতেন। নিহত আলাউদ্দিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর ভাই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ওসি আরও বলেন, আটক নুর জাহান নিহত আলাউদ্দিনের চতুর্থ স্ত্রী। এর আগের তিন স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন তিনি। ৯ বছর আগে নুর জাহান ও আলাউদ্দিনের বিয়ে হয়। তাঁদের একটি সন্তান রয়েছে। দেড় মাস আগে স্ত্রী নুর জাহানকে না জানিয়ে পঞ্চম বিয়ে করেন আলাউদ্দিন। সেই স্ত্রীকে গ্রামের বাড়িতে রাখেন। সম্প্রতি বিষয়টি জানতে পারেন নুর জাহান। আর এই ক্ষোভ থেকে দা দিয়ে কুপিয়ে স্বামীকে খুন করার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন নুর জাহান।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আজ ঢাকায় আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই কর্মকর্তা 

সংস্কার, মানবাধিকার, গণতন্ত্রসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করতে আজ বুধবার ঢাকায় আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক। এ ছাড়া মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে এদিন আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পূর্ব এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু আর হেরাপ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর এটাই তাঁর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরে অ্যান্ড্রু আর হেরাপের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা মিয়ানমারে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের।

মার্কিন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক চুলিক তাঁর চার দিনের সফরে বাংলাদেশে সংস্কার কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা এবং গণতান্ত্রিক পথে ফেরার বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ করার কথা। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, নিকোল অ্যান চুলিক বর্তমানে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হলেও, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি না থাকায় এ দপ্তরের দায়িত্ব তিনি পালন করছেন। সফরকালে তিনি সংস্কারে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সে চাহিদাগুলো জানতে চাইবেন। পাশাপাশি গণমাধ্যমগুলোতে জঙ্গিবাদের মাথাচাড়া দেওয়ার খবর আসায় বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ এবং মানবাধিকার বিষয়ও আসতে পারে।

তিনি বলেন, ১/১১-এর সময় সংস্কারে জোর না দেওয়াটা এক প্রকার ভুল মনে করে মার্কিনিরা। সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাওয়ায় সহযোগী হিসেবে থাকতে চায় দেশটি।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পূর্ব এশিয়া বিষয়ে অভিজ্ঞ কূটনীতিক অ্যান্ড্রু আর হেরারের বৈঠকে মিয়ানমার পরিস্থিতি প্রাধান্য পাবে। সফরকালে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভসহ বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁর বৈঠক করার কথা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এটিকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) বাস্তবায়নে বাধা হিসেবে দেখছে। কারণ মিয়ানমারের কিছু এলাকা বাদে দেশটিতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বর্তমানে মিয়ানমার মাদক চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা, বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অপহরণ করে আটকে রাখা, নারী ও শিশুসহ মানব পাচারের অন্যমত কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতিও রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে দেশটির সেনাবাহিনীসহ বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠনগুলো জড়িত। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের অপরাধীরা অপরাধমূলক কার্যক্রম মিয়ানমারের মাটিতে বসে চালাচ্ছে। তাই পুরো পরিস্থিতি আলোচনায় আসবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ