নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় এক দোকানির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম আবদুস সাত্তার (৪০)। আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রফিকপুর গ্রামের ফরাজী বাড়ি এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত আবদুস সাত্তার ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। স্থানীয় চৌমুহনী বাজারে একটি কাপড় বিক্রির দোকান রয়েছে তাঁর। পরিবারের অভিযোগ, জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া নিয়ে এলাকার কিছু মানুষের সঙ্গে আবদুস সাত্তারের বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জেরেই তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত আবদুস সাত্তারের ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তাঁদের জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় ইটভাটার মালিকসহ একটি প্রভাবশালী চক্র। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ওই চক্রের লোকেরা কৌশলে সাত্তারকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যান। ভোর পর্যন্ত তাঁর ভাই ঘরে না ফেরায় তাঁদের সন্দেহ হয়। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তাঁরা দেখেন বাড়ির এক পাশের একটি গাছের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের লাশ ঝুলছে। তিনি বলেন, ‘ওই চক্রের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে গলায় রশি বেঁধে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছেন। আমরা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি চাই।’

জানতে চাইলে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, জমির মাটি কেটে নেওয়া নিয়ে আবদুস সাত্তারের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাইসহ এলাকার কিছু লোকের বিরোধ রয়েছে। আবদুস সাত্তারের মৃত্যুর সঙ্গে এ বিরোধের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তি শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার মো.

আবদুল্লাহ আল ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া নিয়ে বিরোধের বিষয়টি তিনিও জেনেছেন। বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা গুরুত্বের সঙ্গে ঘটনাটি তদন্ত করছেন। পরিবারের অভিযোগের আলোকে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ স স ত ত র র

এছাড়াও পড়ুন:

বাসে বাড়তি ভাড়া গুনে ঢাকা ছাড়ছেন নগরবাসী

বড় কোম্পানির বাসগুলোর টিকিট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে। ছোট কোম্পানির বাসগুলোয় আসন ফাঁকা আছে, তবু নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে টিকিটপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা বেশি খরচ করে ঢাকা ছাড়ছেন নগরবাসী।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল, মাজার রোড ও কল্যাণপুরের বাস কাউন্টারগুলোয় গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র।

ঈদের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শেষ কর্মদিবস। গতকাল বিকেল থেকেই কাউন্টারগুলোয় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। বাস কাউন্টার মাস্টাররা জানান, এবার লম্বা ছুটি থাকায় প্রান্তিক জেলাগুলোর যাত্রীরা ধাপে ধাপে রাজধানী ছেড়েছেন।

হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, এনা পরিবহন, শাহ ফতেহ আলীর মতো বড় কোম্পানির বাসগুলো এখন আগাম টিকিটের যাত্রী পার করছে। এসব বাসে অগ্রিম টিকিটেও অন্তত ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। ছোট কোম্পানির বাসগুলোয় ডেকে ডেকে যাত্রী নিলেও সেখানেও বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

গাবতলীর হানিফ এন্টারপ্রাইজের বাস কাউন্টারে স্ত্রী–সন্তানকে নিয়ে বাসের জন্য বসে আছেন সৈয়দপুরের মো. এনায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ‘অগ্রিম দুটি টিকিট কেটেছি। তাও দুই টিকিটের জন্য নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে এক হাজার টাকা বেশি দিতে হয়েছে।’

রংপুর যেতে আজ সকালে মো. শাহেদ হোসেন নামের বেসরকারি এক চাকরিজীবী গাবতলী টার্মিনালে আসেন। কিন্তু বেশ কয়েকটি বাসের কাউন্টার ঘুরেও তিনি টিকিট জোগাড় করতে পারেননি। মো. শাহেদ হোসেন বলেন, ‘বড় কোম্পানির বাসগুলোতে টিকিট নাই। ছোট কোম্পানির বাসে সিট আছে, কিন্তু তারা ভাড়া কম রাখবে না। সবগুলো বাসে একই রকম ভাড়া চাচ্ছে। রংপুরে নন–এসি বাসের মূল ভাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা; কিন্তু এখন সেটা ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা রাখছে।’

আজ থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শুরু হয়েছে। আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটিতে থাকবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। তার আগে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৬ মার্চ সরকারি ছুটি থাকায় মূল ঈদের ছুটি শুরুর আগেই ধাপে ধাপে মানুষ রাজধানী ছাড়তে শুরু করেন।

তবে শেষ কর্মদিবস থাকায় গতকাল থেকে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেড়েছে বলে জানান বাস কাউন্টার মাস্টাররা।

গাবতলী বাস টার্মিনালে হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার মাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, গতকাল পর্যন্ত যাত্রীর চাপ কিছুটা কম ছিল। কালকের পর থেকে চাপ বেড়েছে। এখন কোনো বাসে সিট নেই। অনেক যাত্রী ফেরত যাচ্ছেন।

আলম এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বাসগুলো ফিরতি ট্রিপে ফাঁকা আসন নিয়ে আসছে। যে টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে, সেটা আসলে বেশি না। এর চেয়ে কম ভাড়া নিলে ঈদযাত্রায় কোম্পানি পোষাতে পারবে না।

বাড়তি ভাড়া আদায় করলেও বিষয়গুলো যাত্রীরা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে অভিযোগ করছেন না বলে জানান কর্মরত পুলিশ সদস্যরা।

গাবতলী বাস টার্মিনালের পুলিশ কন্ট্রোল রুমের উপপরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘মানুষ বাড়ি ফিরতে পারলেই খুশি। কন্ট্রোল রুম থেকে আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দিকে বেশি নজর রাখছি। কিন্তু কোনো যাত্রী বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করছে না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ