নাটকীয়তার অভাব ছিল না। ম্যাচের ২৩ মিনিটেই ১০ জনের দলে পরিণত হয়েছিল লিওনেল মেসির ইন্টার মিয়ামি ১০ জনের দলে পরিণত হয়েছিল। এরপর নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে পিছিয়েছিল গোলাপী জার্সির মিয়ামি। তবে সবাইকে অবাক করে রেফারি অতিরিক্ত ১১ মিনিট সময় যোগ করেন। সেই যোগ করা সময়ের দশম মিনিটে গিয়ে গোল করলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা মেসি। তাতেই যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে নিউইয়র্ক সিটির বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করে মাঠ ছাড়ে মিয়ামি।

রোববার (২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) ভোরে ঘরের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই মেসির জাদুতে এগিয়ে যায় মিয়ামি। সিটির পেনাল্টি বক্সে ঢুকে পড়া মেসি বাপ পায়ে বল ঠেলে দেন তমাস আভিলেসের কাছে। ২১ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন সেন্টারব্যাকের গোল করতে ভুল করেননি। 
সেই আভিলেসই ১৮ মিনিট পর লাল কার্ড দেখলে মায়ামি ১০ জনের দলে পরিণত হয়। নিউইয়র্ক সিটির আলোনসো মার্টিনেজের নিশ্চিত গোলের পথে পেছন থেকে টেনে ধরায় সরাসরি লাল কার্ড দেখেন এই আর্জেন্টাইন।

আরো পড়ুন:

গোলে ও অ্যাসিস্টে আলো ছড়ালেন মেসি

ইয়ামালই এই মুহূর্তে সেরা তবে মেসির পরে 

ম্যাচের ২১তম মিনিটে মিতিয়া ইলেনিচের গোলে সমতা ফেরায় নিউইয়র্ক সিটিকে। এই স্লোভেনিয়ান রাইটব্যাক গোল করে পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ট্রেডমার্ক ‘সিউ’ সেলিব্রেশন করেন। ব্যাপারটা সচেতনভাবেই করেছিলেন তিনি। মাঠের প্রতিপক্ষ যে মেসি! চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোর ‘সিউ’ সেলিব্রেশন করে মেসির আঁতে ঘা দিলেন ইলেনিচ।

বিরতির পর ৫৫ মিনিটে নিউইয়র্ক সিটিকে এগিয়ে দেন আলোনসো মার্তিনেজ। মহা বিপাকে পড়ে যায় মায়ামি। তাহলে কি পরাজয় দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু হবে? যোগ করা সময়ের দশম মিনিটে জাদু দেখান মেসি। মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে অনেকখানি দৌড়ে ডিফেন্সচেরা এক পাস বাড়ান বক্সে ঢুকে পড়া সেগোভিয়াকে। দারুণ গোলে সমতা টানেন এই ভেনেজুয়েলান মিডফিল্ডার।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ন উইয়র ক স ট

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা

বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন ঢাকা সফররত মার্কিন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরেন সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক।

বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার কার্যক্রম, দলগুলোর অর্থনৈতিক পলিসি ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর। বৈঠকে বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৭ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন তিন দলের নেতারা।

গতকাল বুধবার গুলশানে মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসায় পর্যায়ক্রমে তিন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন এ কূটনীতিক। প্রথম আলোচনা হয় জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে। এতে উপস্থিত ছিলেন আমির ডা. শফিকুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। 

বৈঠক শেষে শফিকুর রহমান বলেন, বৈঠকে রাজনীতি এবং নির্বাচন নিয়ে খোলামেলা কথা হয়েছে। চুলিক বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা, ক্ষমতায় গেলে জামায়াতের অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক নীতি কী হবে, তা জানতে চেয়েছেন। আঞ্চলিক বিষয়, সংখ্যালঘু, নারী অধিকার, শ্রমিক অধিকার নিয়েও জামায়াতের অভিমত জানতে চেয়েছেন। এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছি। বাংলাদেশ একটি নাজুক সময় পার করছে। আশা করি, তা উপলব্ধি করে যুক্তরাষ্ট্র সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে। 

দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় বিএনপির সঙ্গে। বিকেল সাড়ে ৪টার এ বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ অংশ নেন। বৈঠক বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচন ও সংস্কারের পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে অর্থনীতি ও ট্যারিফের বিষয়টা আসছে। সবাই মিলে শুল্ক কীভাবে প্রত্যাহার করা যায়, তা নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা বলেছি, শুল্ক একটা সহনীয় সীমার মধ্যে না আনলে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 

বিএনপির অর্থনৈতিক নীতি কী হবে, তা বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত দিনে যত সংস্কার হয়েছে, বিএনপির সময়ে হয়েছে। অর্থনীতির সংস্কার বিএনপির সময়ে হয়েছে; রাজনৈতিক সংস্কার বিএনপির সময়ে হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র, মুক্তবাজার অর্থনীতি থেকে শুরু করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা– সব সংস্কার বিএনপির সময়ে হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আমাদের সংস্কারের কারণে আসছে। আগামী দিনে আমরাও বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংস্কারে যাব।
সবার শেষে নিকোল চুলিকের সঙ্গে বৈঠক করেন এনসিপির প্রতিনিধিরা। বৈঠকে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে অংশ নেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা। 

আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, মূলত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার কার্যক্রম, নির্বাচন বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধি দলের আগ্রহ ছিল। এ ছাড়া সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাসহ বাংলাদেশের সামনের রাজনীতি কোন দিকে যাবে এবং এনসিপির গঠন প্রক্রিয়া, সাংগঠনিক কার্যক্রম, আদর্শ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। 

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে ব্যাখ্যা করেছি, আমাদের রাজনৈতিক দল কেন, কোন পরিপ্রেক্ষিতে এগিয়ে যাচ্ছে। সংস্কার বিষয়ে সংস্কার কমিশনে আমরা যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছি, সেটি আমরা বলেছি। আমাদের যে তিনটি দাবি– বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন; সেটা আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি। 

আওয়ামী লীগের বিচার এবং নির্বাচনে আসার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো আলোচনা হয়নি।

আমাদের যে দলীয় অবস্থান– আমরা বলেছি যে বিচারের আগে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক, রাজনৈতিক কার্যক্রম এবং নির্বাচনে আসার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনও চেয়েছেন বলে জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ