মৃত্যুনিবন্ধন কীভাবে করতে হয়, কেন জরুরি
Published: 23rd, February 2025 GMT
পরিবারে কোনো শিশুর জন্ম হলে আমরা জন্মনিবন্ধন করি। জন্মনিবন্ধনের গুরুত্বটা এখন কমবেশি সবারই জানা। কিন্তু মৃত্যুনিবন্ধনও যে কখনো কখনো প্রয়োজনীয় হয়ে উঠতে পারে, তা আমরা ভাবি না। প্রিয়জনকে হারানোর শোকে অনেক সময় এসব বিষয় মাথায়ও আসে না। কিন্তু রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা, পারিবারিক সম্পত্তির বণ্টন, পেনশন প্রাপ্তি, জমিজমা বা সম্পত্তির নামজারিসহ নানা প্রয়োজনে ‘মৃত্যুনিবন্ধন’ করতে হয়।
এই নিবন্ধন কোথায় করবেন? কোথায় যাবেন? কার কাছেই–বা আবেদন করবেন? সেই আবেদন করতে কেমন খরচ? এসব খুঁটিনাটি বিষয়গুলো জানা থাকা প্রয়োজন। মৃত ব্যক্তির পূর্ণ তথ্য দিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা কার্যালয়ে গিয়ে এ আবেদন করতে হয়। আবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। আবেদনকারীর তথ্যও তাতে থাকতে হয়। অনলাইনে আপনি মৃত্যুনিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন।
সাধারণত মৃত্যুনিবন্ধন করতে মৃত ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন সনদ, মৃত্যুর তারিখ ও স্থান–সম্পর্কিত প্রমাণপত্র, আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি, আবেদনকারীর ঠিকানার তথ্য ও মুঠোফোন নম্বর দিতে হয়।
দেশের প্রত্যেক নাগরিকের যেমন জন্মসনদ থাকা প্রয়োজন, তেমন প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির নিবন্ধন থাকাটাও জরুরি। সরকারিভাবে যেকোনো নাগরিকের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে মৃত্যুর পরও যাবতীয় তথ্য রেজিস্ট্রারে সংরক্ষণ করা হয়।
অনলাইনে মৃত্যুনিবন্ধনের আবেদন করতে হয় এই লিংকের মাধ্যমে: bdris.
মৃত ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি
মৃত ব্যক্তির স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানার তথ্য
মৃত্যুর তারিখ ও মৃত্যুর স্থান
মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন বা সৎকারসংক্রান্ত প্রমাণপত্র।
কোথায় ও কীভাবে মারা গেছেন, সেই স্থানের ঠিকানা
মৃত ব্যক্তি যদি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বা কোনো দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে হাসপাতালের ছাড়পত্র ও হাসপাতাল থেকে দেওয়া মৃত্যুসনদ। অপঘাতে মৃত্যু হলে থানা থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহ করে নিতে হবে। তা না হলে পরে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে যিনি আবেদন করবেন, তাঁর জন্মনিবন্ধন নম্বর বা এনআইডির তথ্য আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন৮ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপানে চাকরির সুযোগ ২ ঘণ্টা আগেমৃত্যুনিবন্ধনের জন্য জন্মনিবন্ধন কেন জরুরিএকজন ব্যক্তির মৃত্যুনিবন্ধন করার সময় সেই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য জন্মনিবন্ধন সনদের প্রয়োজন হয়। যদিও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিয়েই তা নিশ্চিত করা সম্ভব। তবুও বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে মৃত্যুনিবন্ধন করার সময় জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন করা না থাকলে কী করবেন? প্রথমে আপনাকে অনলাইনে মৃত ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন করে নিতে হবে। এরপর আপনি মৃত্যুনিবন্ধন সনদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
মৃত ব্যক্তির ঠিকানার তথ্য দিতে হয় কেনমৃত্যুনিবন্ধন সনদ মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার শনাক্তের দলিল। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির পরিচিতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা। জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা নিশ্চিত করা যায়। ঠিকানা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ব্যক্তির নামে থাকা পানি, বিদ্যুৎ বা টেলিফোন বিলের রসিদের কপি সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে (যেমন ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা কার্যালয়) জমা দেওয়া যাবে।
আরও পড়ুন‘অনেক চাকরি নিয়ে বসে আছি, কিন্তু লোক পাচ্ছি না’১৯ জানুয়ারি ২০২৫মৃত্যুর প্রমাণপত্র কীমৃত্যুসনদ প্রস্তুত করতে ব্যক্তির মৃত্যুর তারিখ ও স্থানসংক্রান্ত প্রমাণপত্র অবশ্যই দিতে হবে। ব্যক্তি কত তারিখে মৃত্যুবরণ করেছেন? কীভাবে, অর্থাৎ স্বাভাবিক না অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন? কোন এলাকায় মৃত্যুবরণ করেছেন? এসবের উপযুক্ত প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। মৃত্যুর প্রমাণপত্রও মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও উত্তরাধিকারদের ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তির জন্য এটি প্রয়োজন।
হাসপাতালে অথবা কোনো চিকিৎসকের অধীন মৃত্যু হলে সেই চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে। যদি সড়ক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা বা অপঘাতে মৃত্যু হয়, সে ক্ষেত্রে ময়নাতদন্তের প্রয়োজন হয়। ময়নাতদন্ত করা হলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ফটোকপিও সংগ্রহে রাখতে হবে। মৃত ব্যক্তির লাশ যেখানে দাফন বা সৎকার করা হচ্ছে, সেখানকার রসিদ সংগ্রহে রাখুন।
যেকোনো একটি মৃত্যুর প্রমাণপত্র জমা দিলেও মৃত্যুনিবন্ধন করা যাবে। তবে আদালত থেকে উত্তরাধিকার সনদপ্রাপ্তির সময় উল্লেখিত প্রমাণপত্রগুলো প্রয়োজন হবে।
আবেদনকারীর তথ্যযেহেতু মৃত্যুসনদ গুরুত্বপূর্ণ দলিল, তাই মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া জরুরি। এ জন্য বিশ্বস্ত মাধ্যম ছাড়া এই সনদের নিবন্ধনের আবেদন গ্রহণ করা হয় না। মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য বা অন্যান্য অভিভাবক, অথবা সরকারিভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিই শুধু আবেদন করতে পারবেন। এ জন্য নিবন্ধকের কাছে আবেদন করার সময় আবেদনকারীর তথ্য হিসেবে জন্মনিবন্ধন নম্বর, মুঠোফোন নম্বর ও ঠিকানা দিতে হবে।
মৃত্যুনিবন্ধন ফিকোনো ব্যক্তির মৃত্যুর ৪৫ দিনের মধ্যে মৃত্যুনিবন্ধন করলে কোনো ফি দিতে হয় না। ব্যক্তির মৃত্যুবরণের ৪৫ দিন পেরিয়ে গেলে ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা ফি দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে আপনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সরাসরি ফি জমা দিতে পারেন। অথবা, অনলাইনে বিকাশের মাধ্যমেও ফি দেওয়া যায়।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর র জন য কর র স করব ন র সময় সনদ র
এছাড়াও পড়ুন:
মার্সেল পণ্য কিনে ১০ লাখ টাকা পাওয়ার সুযোগ
আসন্ন ঈদ উৎসবকে ঘিরে সারা দেশে শুরু হয়েছে শীর্ষস্থানীয় দেশীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড মার্সেলের ‘ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২’।
আগের মতো ক্যাম্পেইনের এই সিজনেও মার্সেল পণ্যের ক্রেতাদের জন্য থাকছে বিশেষ চমক। সিজন-২২ এর আওতায় দেশের যেকোনো শোরুম থেকে মার্সেল ব্র্যান্ডের ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার বা এসি, ওয়াশিং মেশিন ও সিলিং ফ্যান কিনে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন ক্রেতারা।
আরো রয়েছে লাখ লাখ টাকার ক্যাশভাউচারসহ নিশ্চিত উপহার। ক্রেতারা ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ থেকে চলতি বছরের ঈদুল আজহা পর্যন্ত এসব সুবিধা পাবেন।
আরো পড়ুন:
চাঁদপুরকে অনেক ভালোবাসি: আমিন খান
টাঙ্গাইলে মার্সেলের আয়োজনে ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত
গত বৃহস্পতিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সকালে রাজধানীতে মার্সেল কর্পোরেট অফিসে আয়োজিত ‘ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মার্সেলের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর চিত্রনায়ক আমিন খান, চিফ মার্কেটিং অফিসার জোহেব আহমেদ, মার্সেলের হেড অব বিজনেস মতিউর রহমান, মার্সেল ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্ক নর্থ জোনের ইনচার্জ কুদরত ই খুদা ও সাউথ জোনের ইনচার্জ নুরুল ইসলাম রুবেল প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জনপ্রিয় মডেল এবং অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অনলাইন অটোমেশনের মাধ্যমে গ্রাহকদের আরো দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে সারা দেশে ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে মার্সেল। পূর্বের প্রতিটি সিজনে গ্রাহকদের কাছ থেকে মিলেছে অভূতপূর্ব সাড়া। এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের নতুন সিজন শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, ক্রেতারা দেশের যেকোনো শোরুম থেকে মার্সেল ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন ও ফ্যান কেনার সময় পণ্যটির ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। এরপর ক্রেতার দেওয়া মোবাইল নম্বরে মার্সেল থেকে ফিরতি এসএমএসের মাধ্যমে উপহার পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট শোরুম ক্রেতাদেরকে প্রাপ্ত উপহার বুঝিয়ে দেবে।
ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতিতে ক্রেতার নাম, মোবাইল নম্বর এবং বিক্রি করা পণ্যের মডেল নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য মার্সেলের সার্ভারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ফলে, ওয়ারেন্টি কার্ড হারিয়ে ফেললেও দেশের যেকোনো মার্সেল সার্ভিস সেন্টার থেকে দ্রুত সেবা পাচ্ছেন গ্রাহক।
অন্যদিকে, সার্ভিস সেন্টারের প্রতিনিধিরাও গ্রাহকের ফিডব্যাক জানতে পারছেন। এ কার্যক্রমে ক্রেতাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে ক্যাম্পেইনের আওতায় এসব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/পলাশ/সাইফ