চিকিৎসক ও নার্স–সংকটে ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা
Published: 23rd, February 2025 GMT
কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও কর্মচারী–সংকটে রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে এক্স-রেসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ না থাকায় রোগীদের ছুটতে হয় জেলা সদরে।
হাসপাতালে চিকিৎসকের স্বল্পতা বিষয়ে চিকিৎসা কর্মকর্তা হোসেন মো. জুনাঈদ আনসারী প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের বহির্বিভাগে দৈনিক পাঁচ শতাধিক রোগীকে সেবা দেওয়ার মতো চিকিৎসক নেই। ২৭ পদের মধ্যে চিকিৎসক আছেন মাত্র ১০ জন। ২৯ নার্সের মধ্যে আছেন ৬ জন। পাঁচ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর একজনও নেই। তাতে হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতালে দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদ রয়েছে ১৩৫টি। এখন কর্মরত আছেন ৬২ জন। দীর্ঘদিন ধরে ৭৩টি পদ খালি পড়ে আছে। হাসপাতালে চিকিৎসক-কর্মচারীর সংকটের কথা তুলে ধরে আরএমও বলেন, একটি প্রকল্পের অধীনে বেসরকারি কয়েকটি সংস্থা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য হাসপাতালে কয়েকজন চিকিৎসক ও কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে চিকিৎসক-কর্মচারীরা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। ফলে জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে হাসপাতালে জরুরি সেবা, সিজার বিভাগ ও আলট্রাসনোগ্রাফি বিভাগ বন্ধ রয়েছে। রেডিওগ্রাফার না থাকায় এক বছর ধরে হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগ বন্ধ আছে। শ্বাসকষ্টের রোগীদের ঠিকমতো অক্সিজেন ও নেবুলাইজেশন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসক ও অবেদনবিদ নেই। গত ডিসেম্বর মাসে গাইনি বিভিাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট কেয়া দাস বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। ফলে সিজারসহ নানা অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এখন কেবল স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে।
এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা গত জানুয়ারিতে বদলি হওয়ার পর সে পদে এখন পর্যন্ত কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, দুটি লাইনে দেড় শতাধিক রোগী চিকিৎসার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। অধিকাংশ রোগী উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, চর্মরোগ ও সর্দি-কাশির সমস্যা নিয়ে এসেছেন। সেবা নিতে এসেছেন প্রসূতি নারীরাও। দুজন চিকিৎসক বিপুলসংখ্যক রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিলেন।
পুরুষ লাইনে দাঁড়ানো বড়ঘোপ ইউনিয়নের ধুরুং বাজারের লবণচাষি আলী আহমদ (৫৫) বলেন, কয়েক বছর ধরে তিনি হাঁপানিতে ভুগছেন। শীতকালে রোগীর তীব্রতা বাড়ে। সকাল ৯টায় হাসপাতালে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। বেলা ১১টা পর্যন্ত চিকিৎসকের দেখা পাননি।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) কাজী করিম নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ রোগী সেবা নিচ্ছেন। তবে জনবল কম থাকায় রোগীরা সেবা পাচ্ছেন না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চর্মরোগ, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত প্রচুর শিশুরোগী আসে। তবে চিকিৎসক ও নার্সের ঘাটতি থাকায় সবাইকে ঠিকমতো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
শূন্যপদে জনবল নিয়োগ দিতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ চলছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল হাসান। তিনি বলেন, আগামী মার্চের আগেই জনবলসংকটের নিরসন হতে পারে। তখন রোগীরা পুরোপুরি স্বাস্থ্যসেবা পাবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক ও
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পকলায় অনুষ্ঠিত হলো ‘সাধুমেলা’
মানবিকতা ও ঐক্যের শাশ্বত বার্তা সমাজের প্রতিটি হৃদয়ে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে গত ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধুমেলা “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি”।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সাধুমেলায় শুরুতে সমবেত কণ্ঠে লালনের ‘ভক্তিমূলক গান’ পরিবেশিত হয়। লালনসংগীত পরিবেশন করেন ফকির শামসুল সাঁই, ‘তিন পাগলে হলো মেলা’ পরিবেশন করেন মেহেরুন নেসা পূর্ণিমা। উপস্থাপনা করেন শেখ জামাল উদ্দিন টুনটুন। শ্রীকৃষ্ণ গোপাল পরিবেশন করেন ‘লীলার যার নাইরে সীমা’ এবং ‘দেখো দেখো মনো রায় হয়েছে’। গান পরিবেশন করেন দিপা মণ্ডল। ওমর আলী পরিবেশন করেন ‘আচলা ঝোলা তিলক মালা’। লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোঃ মিরাজ সিকদার ‘আমি ওই চরণে দাসের যোগ্য নই’, আকলিমা ফকিরানী এবং লাভলী শেখ ‘রসো প্রেমে ঘাট ভাড়িয়ে তরী বেওনা’।
পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন মোঃ সমির হোসেন, ফারজানা আফরিন ইভা পরিবেশন করেন ‘আমায় রাখিলেন সেই কূপজল করে’ এবং লালনের গান ‘মন তোর এমন জনম আর কী হবে রে’ পরিবেশন করেন মোঃ মুক্তার হোসেন। এরপর লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোসাঃ লিনা খাতুন ‘কোথায় সে অটল রূপে বারাম দেয়’, মনিরুল ইসলাম এবং আবু শাহীন খান ‘চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি’। সবশেষে সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় লালনের গান।