সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ উন্নয়নে ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া নিয়ে ফের মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছিল যেন তারা ‘উগ্র বাম কমিউনিস্টদের’ ভোট দিতে পারে।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটনে কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপিএসি) অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য এবং তাদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছিল, যাতে তারা উগ্র বামপন্থি কমিউনিস্টদের ভোট দিতে পারে। আপনাকে দেখতে হতো, তারা কাকে সমর্থন করছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ছাড়াও কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য ২০ মিলিয়ন ডলার, নেপালে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য ১৯ মিলিয়ন ডলার, এশিয়ায় শিক্ষার উন্নতির জন্য ৪৭ মিলিয়ন ডলার এবং ভারতের নির্বাচনের জন্য ১৮ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়। কেন? কেন আমরা কেবল কাগজের ব্যালট ব্যবহারে ফিরে যাই না? আমাদের নিজেদের নির্বাচনে সাহায্য করা উচিত, তাদের নয়।

তিনি বলেন, আমরা ভারতের নির্বাচনের জন্য অর্থ দিচ্ছি, অথচ তাদের কোনো অর্থের প্রয়োজন নেই। তারা আমাদের যথেষ্ট ভালোভাবে কাজে লাগায়। বিশ্বের অন্যতম উচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশ ভারত। আমরা যদি কিছু বিক্রি করতে যাই, তখন তাদের শুল্ক দিতে হয়।

এর আগে, গত শুক্রবারও বাংলাদেশে ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন ডলার অনুদান নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দাবি, মাত্র দুইজন কর্মী থাকা একটি নাম না জানা ছোট্ট প্রতিষ্ঠানের হাতে গেছে এই অনুদান।

হোয়াইট হাউজে গভর্নরদের ওয়ার্কিং সেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, ওরা ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। একটা চেক! ভাবুন তো, একটা ছোট প্রতিষ্ঠান, যেখানে সামান্য কিছু আয় হচ্ছে—১০ হাজার ডলার, ২০ হাজার ডলার—আর হঠাৎ করেই তারা ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়ে গেলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে।

ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, মাত্র দুজন কর্মী! আমি নিশ্চিত, তারা এখন খুব খুশি, অনেক ধনী হয়ে গেছে। শিগগির তারা শীর্ষ ব্যবসায়িক ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে থাকবে—শ্রেষ্ঠ প্রতারক হিসেবে!

ট্রাম্প তার বক্তব্যে ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ইউএসএআইডির ২১ মিলিয়ন ডলারের তহবিল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, আমরা আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের দেশে কী হবে? আমিও চাই এখানে ভোটার উপস্থিতি বাড়ুক!

বিএইচ

.

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে যুক্তরাষ্ট্র। খবর বাসসের

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেছেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এই খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা দশ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এই ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত।’

সিনহুয়া জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং মার্কিন সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এই অনুদান দেওয়া হলো।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে। শরণার্থীরা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা আরও খারাপ হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে ওয়াশিংটন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।

ট্রাম্প এবং বিলিয়নিয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সাথে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।

ওয়াশিংটন টাইমস জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে জানিয়েছে, ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।

সর্বশেষ উন্নয়নে, কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন প্রতি ব্যক্তিকে মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিওএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ভাসান চরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্যসহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিওএফপি পূর্বে জানানোর পর এই পরিবর্তন এসেছে।

৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিওএফপি থেকে একটি চিঠি পায়; যেখানে বলা হয় যে, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।

চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

তার সফরের সময় তাকে ৬ ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল, যা অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইউএসএআইডি বন্ধ করতে ট্রাম্প প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা ঘোষণা
  • ইউএসএআইডির সহায়তা স্থগিতে উন্নয়নকর্মীরা কেমন আছেন
  • রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
  • সরকারি অর্থায়ন বাড়ানোর বিকল্প নেই