নাহিদ উপদেষ্টার পদ ছাড়বেন মঙ্গলবার, দল ঘোষণা পরদিন
Published: 23rd, February 2025 GMT
তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল আসছে আগামী বুধবার। ওই দিন জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দলটির আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে। এর আগের দিন মঙ্গলবার উপদেষ্টার পদ ছাড়বেন নাহিদ ইসলাম। জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা জানান, মার্চ থেকে রোজা। ফলে ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের দল আসছে। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ১ লাখ লোকের সমাগম ঘটাতে চান তারা। সে লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে বেশ কয়েকটি কমিটি কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে অনুষ্ঠান প্রস্তুতি কমিটি। গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র তৈরি নিয়ে পৃথক কমিটি রয়েছে। এসব কমিটি দফায় দফায় সভা করছে। সর্বশেষ গত শুক্রবারও বৈঠক হয়েছে।
এর আগে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন শুরু করে নাগরিক কমিটি। এতে সাড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষ মতামত দিয়েছে। এসব মতামত যাচাই করছেন তারা।
জানতে চাইলে নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন সমকালকে বলেন, ‘শৃঙ্খলা, গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র প্রণয়নসহ বিভিন্ন কমিটি করা হয়েছে। কয়েকটি সভায় আত্মপ্রকাশের সময়, আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের ধরন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ জনমত জরিপ কর্মসূচি শুরু করেছি। সেখানে আমাদের কাছে লক্ষাধিক উপাত্ত এসেছিল। আমরা সেগুলো নিয়ে নিজেদের মধ্যে পর্যালোচনা করেছি। দল তৈরির জন্য ইতোমধ্যে নানা ধরনের প্রস্তুতিমূলক কমিটি হয়েছে। আশা রাখি, সপ্তাহের শেষ দিকে আমরা আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করতে পারব।”
আত্মপ্রকাশের সময় প্রায় চূড়ান্ত হলেও দলের নাম-সাংগঠনিক কাঠামো এখনও চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। শীর্ষ পদগুলো নিয়ে এখনও জাতীয় নাগরিক কমিটি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মতবিরোধ দূর হয়নি। শুধু আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলাম চূড়ান্ত। সদস্য সচিব পদে আখতার হোসেনও অনেকটা নির্ধারিত বলে জানিয়েছেন ছাত্রনেতারা।
এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবেন। তবে কে কোন পদে থাকবেন, তা নিয়ে দরকষাকষি চলমান। এই বিরোধ মেটাতে সব পক্ষকে নিয়ে এখন পর্যন্ত সভা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে নাগরিক কমিটির নেতারা একটি সমাধানে পৌঁছার চেষ্টা করছেন বলে কয়েকজন জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ইঙ্গিত করে আলী আহসান জুনায়েদ ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যে কোনো নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রাথমিক ধাপে নানাবিধ অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটিতেও তা হচ্ছে। এটা খারাপ চোখে দেখার কিছু নেই। জাতীয় নাগরিক কমিটিতে বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং স্বচ্ছতার অভাব আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ ধরনের সমস্যা যেন নতুন দলে না থাকে, সেজন্য এর গঠন প্রক্রিয়া এবং নেতৃত্ব নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘নাগরিক কমিটিতে থাকা জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠন থেকে আসা প্রতিনিধি, সাবেক পরিষদ, কওমি-হেফাজত অংশ, সাবেক শিবির ইত্যাদি সবাই মিলে একত্রে এই দাবি তুলেছি। দুঃখজনকভাবে বর্তমানে যেভাবে এই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব গঠন হচ্ছে, তা গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হচ্ছে না। আমি মনে করি, নাগরিক কমিটির সবাইকে সঙ্গে নিয়ে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা উচিত।’
এ বিষয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘সংগঠনের নেতৃত্ব এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলমান। গ্রহণযোগ্যতা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও ভিশন-মিশনে একাত্মবোধের জায়গাগুলো বিবেচনায় নিয়ে বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব নির্বাচন করব।’
ছাত্রদের দল চূড়ান্ত
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নতুন সংগঠন আজকালের মধ্যে ঘোষিত হতে পারে। প্রাথমিকভাবে দলটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হিসেবে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার এবং সদস্য সচিব হিসেবে জাহিদ আহসান, মুখ্য সংগঠক পদে রশিদুল ইসলাম রিফাত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের এবং সদস্য সচিব পদে মহির আলম আসতে পারেন। এ ছাড়া অন্যান্য পদে আলোচনায় আছেন সানজানা আফিফা অদিতি, রাফিয়া রেহনুমা হৃদি, হাসিব আল ইসলাম প্রমুখ। এগুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
আবু বাকের মজুমদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফজলুল হক মুসলিম হলের ছাত্র, অন্যদিকে জাহিদ আহসান ইতিহাস বিভাগ, আবদুল কাদের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজয় একাত্তর হল, মহির আলম গণিত বিভাগের অমর একুশে হলের ছাত্র। তারা তিনজনই ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত ন হ দ ইসল ম র জন ত ক আহস ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
এ বছরই নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে: শামসুজ্জামান দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এ বছরই নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে। বিএনপির খেলা এখনও দেখে নাই। শুধু কয়টা জনসভা শুরু হয়েছে।
শনিবার বিকেলে পঞ্চগড় জেলা শহরের সড়ক জনপদের মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন তিনি। নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি, নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ নানা দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ভাই আপনি ভালো লোক, জ্ঞানীগুণী মানুষ, দেশে-বিদেশে আপনার সুনাম আছে, এদের পাল্লায় পড়িয়েন না, বিএনপিকে রাস্তায় নামায়েন না, যদি একবার রাস্তায় নামে....। ফুলের মালা দিয়ে আপনাকে বরণ করেছি, ফুলের মালা দিয়েই বিদায় করতে চাই।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ১৭ বছরে ৬০ লাখ মামলার আসামি হয়েছে। বাড়িতে ঘুমাতে পারে নাই। পঞ্চগড়ের ছেলেটাই বাঁচার জন্য ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালিয়েছে। সে ছাত্রদলের, যুবদলের, শ্রমিক দলের, কৃষক দলের বা বিএনপির। আমার বোনটা, একা তার সন্তানকে রেখে গিয়েছিল, স্বামীর দেখা পায়নি, কখনো বকে নাই। কয়টা ছেলে নামলো, কয়টা, এতই যদি শক্তি, এতই যদি ক্ষমতা, তাহলে ইলেকশন করেন না কেন, বিরোধিতা করেন কেন? পার্টি বানাবেন, ঘোষণা করবেন, সরকার সমর্থন দেবে, তারপর বুঝে দেখবেন ইলেকশন করবেন কিনা, বিএনপিকে চিনেন নাই এখনও।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন দলটির পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, পঞ্চগড় সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রিনা পারভিন ও রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস শেখ, মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল, আদম সূফি, এম এ মজিদসহ আরও অনেকে।