পারমাণবিক চুল্লির নতুন রেকর্ড
Published: 23rd, February 2025 GMT
ফরাসি বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম সূর্য হিসেবে এক চুল্লির তাপামাত্রা তৈরির বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করেছেন। ফ্রান্সের ওয়েস্ট টোকামাক নামের একটি প্লাজমা তৈরির চুল্লিতে ১৩৩৭ সেকেন্ড ধরে প্লাজমা ধরে রেখে রেকর্ড স্থাপন করেছে, যা চীনের আরেকটি টোকামাকের পূর্বের রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছে। স্থিতিশীল পারমাণবিক ফিউশন তৈরির জন্য এই রেকর্ড নতুন এক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কৃত্রিম সূর্য নামে পরিচিত টোকামাক যন্ত্র নক্ষত্রের মধ্যে ঘটে যাওয়া প্রক্রিয়ার প্রতিলিপি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পৃথিবীতে স্থিতিশীল পারমাণবিক ফিউশন ব্যবহার করে একটি শক্তিশালী ও টেকসই শক্তির উৎস হিসেবে এসব চুল্লি ব্যবহারের সুযোগ আছে।
ফিউশন চুল্লিটি ফ্রান্সের বিকল্প শক্তি ও পারমাণবিক শক্তি কমিশন পরিচালনা করছে। এই চুল্লির পুরো নামে টাংস্টেন এনভায়রনমেন্ট ইন স্টেডি-স্টেট টোকামাক বা ওয়েস্ট। এই চুল্লিতে একটি ডোনাটের মতো কাঠামো থাকে, যার মধ্যে প্লাজমা শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা আবদ্ধ থাকে। সেখানে ফিউশন প্রক্রিয়া দেখা যায়। এমন চুল্লির মাধ্যমে বৃহৎ আকারের শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করতে কয়েক দশক সময় লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নক্ষত্রের কেন্দ্রে যে চরম তাপমাত্রা ও চাপ দেখা যায়, তার প্রতিলিপি পৃথিবীতে তৈরি করা বেশ চ্যালেঞ্জের। পারমাণবিক ফিউশনের জন্য প্লাজমার দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। সেই অনুরূপ আবহ তৈরির জন্য টোকামাক ব্যবহার করছেন বিজ্ঞানীরা।
গত মাসে চীনের ইস্ট নামের উন্নত সুপারকন্ডাক্টিং টোকামাক মেশিন ১০৬৬ সেকেন্ডের জন্য স্থিতিশীল প্লাজমা অবস্থা অর্জন করে রেকর্ড করেছিল। ২০২৩ সালে ৪০৩ সেকেন্ডের আরেকটি রেকর্ড ছিল।
সূত্র: নিউজ১৮ ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র র জন য র কর ড ফ উশন
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের ৭৭ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যহানিকর পণ্যে উচ্চ হারে কর চান
স্বাস্থ্যহানিকর পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর আরোপ করা উচিত বলে মনে করেন দেশের ৭৭ শতাংশ মানুষ। নারী-পুরুষ সবারই মত প্রায় সমান। ১৮ বছরের বেশি বয়সী সব মানুষের মনোভাব মোটামুটি একই।
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্যের ওপর কর আরোপের ব্যাপারে মানুষের এ ধরনের মতামত উঠে এসেছে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারবিষয়ক জনমত জরিপে। কমিশনের অনুরোধে জাতীয় এই জরিপ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বিবিএস গত সপ্তাহে জরিপের প্রাথমিক প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিয়েছে।
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্যের তালিকায় আছে কোমল পানীয় বা কোল্ড ড্রিংকস, শক্তি বৃদ্ধিকারী পানীয় বা এনার্জি ড্রিংকস, ফাস্ট ফুড, চিপস, নুডলস, বিড়ি-সিগারেট ও তামাক। এসব পণ্যের ওপর উচ্চ হারে কর বসানো উচিত কি না, তা ৬৪ জেলার শহর ও গ্রামের মানুষের কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিবিএসের জরিপকারীরা।
জরিপে দেখা গেছে, উচ্চ হারে কর বসানোর পক্ষে মত দিয়েছেন ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। কর বসানোর বিপক্ষে ২০ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে বাকি ২ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তাঁরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ নারী ও ৭৭ শতাংশ পুরুষ মোটামুটি একই হারে কর বসানোর পক্ষে। গ্রামের মানুষের মধ্যে ৭৬ দশমিক ২ শতাংশের চেয়ে কর বসানোর মনোভাব শহরের মানুষের মধ্যে বেশি। ৮০ দশমিক ৩ শতাংশ শহরবাসী কর বসাতে চান।
তবে সব বিভাগের মানুষের মধ্যে একই মনোভাব দেখা যায়নি। উচ্চ হারে কর আরোপের পক্ষে সবচেয়ে বেশি খুলনা বিভাগের মানুষ (৮৯ দশমিক ৬ শতাংশ)। এই হার সবচেয়ে কম ঢাকা বিভাগে (৭০ দশমিক ৭ শতাংশ)। অন্য বিভাগগুলোর অবস্থান পর্যায়ক্রমে এ রকম: চট্টগ্রাম (৮৫), ময়মনসিংহ (৮০ দশমিক ৩), বরিশাল (৭৫ দশমিক ৭), রাজশাহী (৭৪ দশমিক ১), রংপুর (৭৩ দশমিক ৪০) ও সিলেট (৭৩ দশমিক ৩)।
বিড়ি-সিগারেট বা তামাক নানা ধরনের ক্যানসারের কারণ। আবার ফাস্ট ফুড বা কোমল পানীয় স্থূলতার কারণ। এসব খাবার হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এসব পণ্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে নানা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারবিষয়ক কমিশনের একাধিক সদস্য প্রথম আলোকে বলেছেন, উচ্চ হারে কর বসালে স্বাস্থ্যহানিকর কিছু পণ্যের ব্যবহার মানুষ কম করবে বলে আশা করা যায়। অন্যদিকে এসব পণ্য থেকে পাওয়া কর স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজে লাগানো যাবে কি না, তা নিয়েও সুপারিশ থাকবে সংস্কার কমিশন প্রতিবেদনে।