সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভাষা শহীদদের স্মরণে এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মাহাত্ম্য তুলে ধরতে প্রবাসীদের উদ্যোগে জমকালো ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে।

প্রবাসীদের উচ্ছ্বাস এবং স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণের কারণে আয়োজিত ফুটবল টুর্নামেন্ট রঙিন উৎসবে পরিণত হয়। আজমানের স্থানীয় ফুটবল গ্রাউন্ডে প্রবাসী ব্রাদার্স স্পোর্টস ক্লাবের আয়োজনে জমজমাট ফাইনালে মুখোমুখি হয় ফ্রিডম ফাইটার গোল্ড সুক বনাম রামাস ফার্নিচার রাশিদিয়া। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুই দল ১-১ গোলে সমতায় থাকায় ম্যাচ গড়ায় ট্রাইব্রেকারে। শেষ মুহূর্তের রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনায় ফ্রিডম ফাইটার গোল্ড সুক জয় ছিনিয়ে নেয়।

ফাইনাল ম্যাচটি শুরু থেকেই ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। দুই দলই প্রথমার্ধে একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করলেও গোলরক্ষকদের দৃঢ়তায় ম্যাচটি রোমাঞ্চকর মোড় নেয়। দ্বিতীয়ার্ধে এক গোল করে সমতায় ফেরায় রামাস ফার্নিচার রাশিদিয়া। তবে ট্রাইব্রেকারে নিজেদের দক্ষতা ও স্নায়ু নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ফ্রিডম ফাইটার গোল্ড সুক চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।  

এই জমকালো ফুটবল যুদ্ধে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের স্বীকৃতিও তুলে ধরা হয়।  ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন রিয়াজউদ্দিন। এছাড়াও সেরা গোলরক্ষক আরফানুল ইসলাম বাপ্পি ও ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হন মিরাজুল ইসলাম।  

প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ এহসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক মেহেদী মোল্লার সঞ্চালনায় আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সমিতি শারজার সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো.

জাহাঙ্গীর আলম সিআইপি, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই-এর সভাপতি মামুনুর রশিদ, সহ-সভাপতি এস এম মোদাসসের শাহ, ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান, প্রবাসী ব্রাদার্স স্পোর্টস ক্লাবের সভাপতি মো. এনামুল হক, প্রধান উপদেষ্টা মিজানুর রহমান বিন এনাম, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মিজবাহ উদ্দিন মিজানুল হক ও এস এম ফরহাদ উদ্দিন। 

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা মো. আলমগীর, মো. নাজিম উদ্দিন, সাদেক রহমান, রিয়াজউদ্দিন এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরা। তাদের মধ্যে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আরফাদুল ইসলাম বাপ্পি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাজান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজান চৌধুরী, ক্রীড়া সম্পাদক মো. আফসার উদ্দিন এবং দলের অন্যতম সদস্য জাহেদ, আরাফাত, বশির, মিরাজ। 

ঢাকা/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় দেখা মিলেছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলা সাহিত্যের অমর কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন, ফকির লালন সাঁই, মুঘল সম্রাট আকবর, গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথসহ অন্তত ৩৮ জন বিখ্যাত মনীষীর। তবে তারা আসল নয়, ডামি। ডামি হলেও তাদের মাধ্যমে দারুণভাবে ফুটেছে বিখ্যাত ব্যক্তিদের চেহারা ও অবয়ব। তাদের দেখে মুগ্ধ নতুন প্রজন্মের দর্শনার্থীরা।

এছাড়াও শোভাযাত্রায় বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানের সচিত্র দেখা গেছে।

সোমবার সকালে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এমন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল সাগে ৯টায় কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমি থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে উপজেলা প্রশাসন। আনন্দ শোভাযাত্রাটি হলবাজার, গণমোড়, থানামোড়, গোলচত্বর, উপজেলা সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় আবুল হোসেন তরুণ অডিটোরিয়ামে চত্বরে শেষ হয়। পরে সেখানে দই চিড়া খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমীর ১২৫ জন সংগীত ও নৃত্যশিল্পী নেন এবং শোভাযাত্রায় কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে কুমারখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুহিনা ইসলাম প্রজ্ঞা বলেন, বৈশাখী শোভাযাত্রায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পিয়ারী সুন্দরী, কাজী মিয়াজান, মীর মশাররফ হোসেনসহ অসংখ্য মনীষীদের দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে।

কলেজ ছাত্র শুভ মোল্লা বলেন, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি জাঁকজমক হয়েছে আয়োজন। বন্ধুরা মিলে খুবই আনন্দ করছি।

সুবর্ণা খাতুন নামের এক শিশু জানায়, পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে নৃত্য করেছি। দই চিড়া খেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে।

প্রায় ১৮ ধরে বৈশাখের শোভাযাত্রায় মীর মশাররফ হোসেনের ডামি চরিত্রে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান মানু। তিনি বলেন, প্রতি বৈশাখে একই চরিত্রে থাকি। নিজের কাছে খুবই ভালো লাগে। যতদিন বাঁচি, এ চরিত্রেই থাকতে চাই।

আধুনিকতার বাইরে এসে যেন বাংলা সংস্কৃতি ধরে রাখতে পারি। সেজন্য সম্রাট আকবরের ডামি সেজেছিলাম। কথাগুলো বলছিলেন চয়ন শেখ।

পরিচয় জানতেই 'বল বীর, বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারই নত শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!' কবিতার কয়েকটি লাইন বলতে থাকেন পান্টি এলাকার মিলন হোসেন। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ডামি ছিলেন।

নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির ইতিহাস ঐহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিত করতে রবীন্দ্রনাথ, মশাররফ, কাঙাল, বাঘা যতীনসহ ৩৮টি ডামি চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা, ২৪ এর গণ অভ্যর্থান, প্যালেস্টাইনের চিত্র দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে জানান ডামি পরিচালক কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাস।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাস বলেন, আনন্দ শোভাযাত্রায় বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের চরিত্র দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। তা দেখে মুগ্ধ সব শ্রেণি পেশার মানুষ। ডামি ছাড়াও চিড়া দই খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চড়ক মেলায় মেতে উঠেছিল নাটোরের শংকরভাগ 
  • কুমারখালীতে অন্যরকম আনন্দ শোভাযাত্রা
  • নববর্ষেও বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ: দুলু
  • আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন
  • আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা
  • হালখাতা আছে, নেই নিমন্ত্রণ
  • মারমাদের মাহা সাংগ্রাই উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
  • ‌‘তৌহিদী জনতার’ চিঠিতে বাতিল হলো শেষের কবিতা নাটকের প্রদর্শনী
  • রাষ্ট্র ও সমাজকে পথশিশুদের প্রতি মানবিক হতে হবে
  • চন্দনাইশের ‘হাতপাখা’ গ্রামে ১০ কোটি টাকার ব্যবসা