নেতানিয়াহু ‘নোংরা খেলা’ খেলছেন: হামাস
Published: 23rd, February 2025 GMT
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বানচাল করতে নেতানিয়াহু ‘নোংরা খেলা’ খেলছেন বলে মন্তব্য করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। দলটির দাবি, ইসরায়েল সরকার চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের বিষয়ে কোনো আলোচনা করছে না, যা ১ মার্চ শেষ হওয়ার কথা।
এই চুক্তির দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায় ছয় সপ্তাহের প্রথম পর্যায়ের মধ্যে চূড়ান্ত করার কথা ছিল। প্রথম পর্যায়ে ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছেড়ে দেওয়া, গাজা থেকে আংশিকভাবে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়। ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় পর্যায় চূড়ান্ত হলে সব ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা।
শনিবার আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সিনিয়র সদস্য বাসেম নাইম বলেন, আমরা মনে করি, এটি ডানপন্থি সরকারের একটি কৌশল, যা চুক্তি বানচাল ও যুদ্ধের দিকে ফেরার বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।
তিনি জানান, হামাস এখনো চুক্তিতে অটল রয়েছে এবং তাদের সব শর্ত মেনে চলেছে। তবে তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
নাইম বলেন, প্রথম পর্যায়ে ১০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, নির্ধারিত মানবিক সহায়তার অধিকাংশ গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি, এবং নেতজারিম করিডোর (গাজার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে সংযোগকারী সংকীর্ণ পথ) থেকে সেনা প্রত্যাহার বিলম্বিত করা হয়েছে।
এর আগে, নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, হামাসের অভিযোগ সত্য। তবে সরকারিভাবে ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইসরায়েল ৬০ হাজার ভ্রাম্যমাণ ঘর এবং ২ লাখ তাঁবু গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। গাজার ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে ৯০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং অঞ্চলটির বিশাল অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) আরও ছয় জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর বিনিময়ে ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা থাকলেও তা অমান্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
রোববার ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, তারা শত শত ফিলিস্তিন বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা পিছিয়ে দিয়েছে, যতক্ষণ না হামাস তাদের শর্ত পূরণ করে। এই সিদ্ধান্ত গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভঙ্গুরতা প্রকাশ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস রোববার ভোরে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েল ৬২০ জন ফিলিস্তিন বন্দী ও আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছে, যতক্ষণ না পরবর্তী দফায় জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত হচ্ছে এবং অপমানজনক আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া তাদের হস্তান্তর করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৪৮ হাজার ৩১৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা ১৩ হাজার জনেরও বেশি মানুষকেও মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামাসের ওই দিনের হামলায় অন্তত ১১৩৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ২৪০ জনকে বন্দী করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল পর য য় ত হয় ছ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম-কুনমিং রুটে ফ্লাইট চালুর ঘোষণা
বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে চীনের উনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিংয়ের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করার ঘোষণা দিয়েছে চীন। একইসঙ্গে বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য কুনমিংয়ের চারটি হাসপাতালকে ‘ডেডিকেটেড’ ঘোষণা করা হয়েছে।
শনিবার (২৯ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, কুনমিংয়ে বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য ডেডিকেট করা চারটি হাসপাতালে ফি কম। এসব হাসপাতালে স্থানীয়রা যে ফি পরিশোধ করেন, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া রোগীরাও একই ফি পরিশোধ করে চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন।
কুনমিং রুটে ফ্লাইট ভাড়া বেশি হওয়ায় চট্টগ্রাম থেকে কম খরচে ফ্লাইট সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ঢাকা-কুনমিং রুটেও বিমান ভাড়া কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেছে, তারা বাংলাদেশিদের জন্য আরো বেশি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত করবে। কুনমিংয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিদর্শনে এপ্রিলে বাংলাদেশ থেকে সাংবাদিকদের বড় একটি দলকে পাঠানো হবে। গত মাসে প্রায় অর্ধশত বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য প্রথমবারের মতো কুনমিং ভ্রমণ করেছেন। তারা সেখানকার হাসপাতালের মানের প্রশংসা করেছেন। তবে, যাতায়াত খরচ বেশি বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে কুনমিং রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স। কুনমিং ও চট্টগ্রামের মধ্যে পরিকল্পিত ফ্লাইট ভ্রমণ ব্যয় এবং ভ্রমণের সময় কমিয়ে আনবে, যা চীনে আরো বেশি বাংলাদেশির জন্য স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার পথ প্রশস্ত করবে।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক