আনসারদের রেশন বাড়ছে, জুলাই থেকে কার্যকর
Published: 23rd, February 2025 GMT
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অঙ্গীভূত ৫৫,২৮২ জন আনসার সদস্যের বিদ্যমান রেশনের সঙ্গে অতিরিক্ত ১ কেজি ভোজ্য তেল, ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি ডাল (মুগ) যুক্ত হচ্ছে। জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে রেশন বৃদ্ধি সংক্রান্ত এ প্রস্তাবটি সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয়ের সূত্রটি জানায়, গত ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়য়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অঙ্গীভূত আনসার সদস্যের বিদ্যমান রেশন সামগ্রী বৃদ্ধির প্রস্তাবের বরাতে কতিপয় তথ্য-উপাত্ত জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়। সে প্রেক্ষিতে রেশন সামগ্রীর পরিমাণসহ প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় সংশোধিত প্রস্তাব পাঠায়।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অঙ্গীভূত আনসার সদস্যগণ রাজস্ব খাত থেকে প্রদেয় দৈনিক ভাতাভিত্তিক সদস্য।
বর্তমানে অঙ্গীভূত আনসার সদস্যের সংখ্যা ৫৫,২৮২ জন, তারমধ্যে ৪৭,১৮৭ জন বিবাহিত এবং ৮,০৯৫ জন অবিবাহিত। এ সংখ্যক আনসার সদস্যগণ সবাই সাশ্রয়ী মূল্যে রেশন সামগ্রী পেয়ে থাকেন। বর্তমান প্রস্তাবে বিবাহিত/অবিবাহিত নির্বিশেষে অতিরিক্ত ১ লিটার ভোজ্য তেল, ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি ডাল (মুগ) দাবি করা হয়েছে।
প্রস্তাবমতে রেশন সামগ্রী বৃদ্ধি করা হলে বাৎসরিক অতিরিক্ত আর্থিক সংশ্লেষ দাঁড়াবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা (২৯ কোটি ৯৯ লক্ষ ৪৯ হাজার ৭৫ টাকা ৬০ পয়সা)।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ৩২৫৪১০২-নং খাদ্যদ্রব্য (আনসার) কোডে মোট ১১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আনসার অধিদপ্তরের পত্রে প্রদত্ত ব্যাখ্যা অনুসারে, অঙ্গীভূত আনসার সদস্যগণের জাতীয়করণের দাবীর বিপরীতে রেশন বৃদ্ধির মাধ্যমে আনসারের বর্তমান চলমান অস্থিরতা প্রশমিত করতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও, আনসার সদস্যগণকে যে পরিমাণ রেশন প্রদান করা হয় তা দিয়ে ন্যূনতম মানের জীবন যাপন কষ্টকর।
বিষয়টি বিবেচনায় এ বাহিনীতে কর্মরত অঙ্গীভূত সব বিবাহিত ও অবিবাহিত আনসার সদস্যদের বর্তমানে প্রাপ্ত রেশন সামগ্রীর সঙ্গে অতিরিক্ত পরিমাণ ১ কেজি ভোজ্য তেল, ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি ডাল (মুগ) অন্তর্ভুক্ত করা যৌক্তিক মর্মে প্রতীয়মান হয়। তবে চলতি অর্থবছর বরাদ্দ না থাকায় আগামী অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে এ প্রস্তাবটি কার্যকর করার সুপারিশ করেছে অর্থ বিভাগ।
এ অবস্থায়, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বর্তমান ৫৫,২৮২ জন স্মার্ট কার্ডধারী অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের অনুকূলে বিদ্যমান প্রাপ্য রেশন সামগ্রীর সঙ্গে অতিরিক্ত ১ কেজি ভোজ্য তেল, ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি ডাল (মুগ) অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
বর্তমানে অঙ্গীভূত আনসারদের মধ্যে যারা বিবাহিত/অবিবাহিত সদস্যরা বর্তমানে ২৮ কেজি চাল, ২৮ কেজি গম/আটা, ২ লিটার ভোজ্য তেল, বিবাহিতরা ২ কেজি চিনি ২ কেজি মুগ ডাল এবং অবিবাহিতরা ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি মুগ ডাল পাচ্ছেন। প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ অনুযায়ী এই রেশনের সঙ্গে অতিরিক্ত ১ লিটার ভোজ্য তেল, ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি মুগ ডাল যোগ হবে।
সূত্র জানায়, অঙ্গীভূত আনসারদের রেশন বাড়ানোর জন্য প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড.
শর্তগুলি হচ্ছে-
(ক) আগামী ১ জুলাই তারিখ থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে;
(খ) আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সংস্থার রিসোর্স সিলিং এর মধ্যে এ সংক্রান্ত ব্যয় সংকুলান করতে হবে;
(গ) এ সংক্রান্ত সব প্রশাসনিক ও আর্থিক বিধি-বিধান প্রতিপালন করতে হবে;
(ঘ) রেশন সামগ্রী বিতরণে চাল ও গমের বিক্রয়মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাজেট অনুবিভাগ, অর্থ বিভাগ-এর ৩০ জুন ২০২৪ তারিখের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে;
(ঙ) ৫৫,২৮২ জন স্মার্ট কার্ডধারী অঙ্গীভূত আনসার সদস্যগণ, যারা রেশন প্রাপ্ত হবেন তাদের পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেস প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষণ করতে হবে; এবং
(চ) এ বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সরকারি আদেশ (জি.ও) জারি করে ৪ কপি পৃষ্ঠাংকনের জন্য অর্থ বিভাগে প্রেরণ করতে হবে।
ঢাকা/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অব ব হ ত র বর ত
এছাড়াও পড়ুন:
আপেল, কমলা, আঙুরসহ তাজা ফলের শুল্ক–কর কমানোর সুপারিশ
আপেল, কমলা, আঙুর, নাশপাতি, আনারসসহ তাজা ফলের ওপর আরোপিত শুল্ক–কর কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। সংস্থাটি মনে করছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও শুল্ক–কর বাড়ানোর কারণে আমদানি করা তাজা ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা ভোক্তার ওপর অসহনীয় চাপ সৃস্টি করেছে।
সম্প্রতি তাজা ফল আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন তা আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করেছে ট্যারিফ কমিশন। এ ছাড়া তাজা ফল আমদানিতে অগ্রিম কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ এবং ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক যৌক্তিক করারও সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
গত সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানকে এ–সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে ট্যারিফ কমিশন। চিঠির অনুলিপি অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন বলেছে, ডলারের দাম ও শুল্ক–কর বৃদ্ধির ফলে তাজা ফল আমদানি কমে গেছে। সর্বশেষ ২০২৩–২৪ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় আপেল আমদানি ৫১ শতাংশ, মাল্টা ৭০ শতাংশ, আঙুর ২৯ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোয় গত জানুয়ারিতে মেন্ডারিন ৫১ শতাংশ, আঙুর ২১ শতাংশ, আপেল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, নাশপাতি ৪৫ শতাংশ, আনার ও ড্রাগন ৩২ শতাংশ আমদানি কমেছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়। বর্তমানে ৮৬ টাকা মূল্যের ফল আমদানি করা হলে তার জন্য ১২০ টাকা কর দিতে হয় বলে জানিয়েছে ট্যারিফ কমিশন।
শুল্ক–কর কমানোর জন্য ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংস্থাটির প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে।
এনবিআরের হিসাবে বিদেশি ফল আমদানিতে ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে। প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ১১৭ টাকা ধরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। আর জাহাজভাড়া, বিমাসহ সব মিলিয়ে এ খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকায়। ফল আমদানি থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করেছে ৫ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।