আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের (এআইইউবি) ২২তম সমাবর্তন শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. সাহাবুদ্দিনের সম্মতিক্রমে অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.

এস এম এ ফায়েজ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও ২০২৪ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন এআইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাদিয়া আনোয়ার, এআইইউবি’র ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান।

এআইইউবি’র ২২তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট ২,৫৪৭ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ ও সর্বোত্তম ফলাফল অর্জনকারী মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে পদক ও সম্মাননা প্রদান করা হয়।  এগুলোর মধ্যে রয়েছে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক ৩টি, সুম্মা কাম লাউড (স্বর্ণ) ৭৯টি, ডা. আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ পদক ২০টি, ম্যাগনা কাম লাউড (রৌপ্য) ১২৮টি, ভাইস চ্যান্সেলর পদক ২৩টি, কাম লাউড (ব্রোঞ্জ) ৩৯টি।

নবীন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘শিক্ষা সমতা আনয়নের বড় হাতিয়ার। শিক্ষা না থাকলেও অর্থ অর্জন করা যায়, কিন্তু শিক্ষা থাকলে তা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারে না। শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা কেউ কেড়ে নিতে পারে না। গ্র্যাজুয়েটরা প্রথমে নিজেদের পরিবারের প্রতি নজর রাখবেন, দেশের প্রতি নজর রাখবেন এবং মানুষের প্রতি যত্নশীল হবেন। শিক্ষকদের মান ও আন্তরিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি এআইইউবি’কে ধন্যবাদ জানাই, কারণ তারা এটি অর্জন করতে পেরেছে।’’

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ এআইইউবি’র সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানান।

তিনি ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘ভালো-মন্দ সবাই বিচার করতে পারে; তবে যারা শিক্ষায় আলোকিত, তারাই ভালোভাবে বিচার করতে পারে।’’

সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান নতুন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘‘সমাজকে আমরা কীভাবে ন্যায়ের পথে, মুক্তির পথে, স্বাধীনতার পথে পরিচালিত করতে পারি, সেই শিক্ষা আমাদের নেওয়া উচিত। আমি জেনে খুব আনন্দিত হলাম যে, এআইইউবি ২২টি সমাবর্তন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।’’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘সমাজে বিশ্ববিদ্যালয় কখনো প্রাইভেট হয় না; বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে দশের সম্পত্তি।’’

এআইইউবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাদিয়া আনোয়ার সকল স্নাতকের প্রতি তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘‘জীবনে তোমরা যেখানেই থাক, এআইইউবি তোমাদের জন্য উৎসাহ জোগাবে, তোমাদের সাফল্য উদযাপন করবে এবং যখন প্রয়োজন হবে, তখন পাশে থাকবে।’’

এআইইউবি’র ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের তার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের সাফল্যে আমরা গর্বিত। এই আনন্দ ও সাফল্যের মুহূর্তে, আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন তোমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করেন এবং চূড়ান্ত সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান।’’

এআইইউবি’র প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আগত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যে বলেন, ‘‘এআইইউবি’র পক্ষ থেকে আমরা সকল শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথিদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যারা আজ তাদের উপস্থিতির মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানকে সম্মানিত করেছেন।’’

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. হাসানুল আবেদীন হাসান, ইশতিয়াক আবেদীন ও ট্রাস্টি বোর্ডের সকল সদস্যরা, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কর্মকর্তারা, আমন্ত্রিত অতিথিরা, এআইইউবির ট্রেজারার, ডিন, রেজিস্ট্রার, শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

ঢাকা/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ফল য সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

পুড়ে যাওয়া মার্কেটের মালিকের কাছে চাঁদা চেয়েছিলেন যুবদল নেতা, অডিও ভাইরাল

খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে পুড়ে যাওয়া অস্থায়ী মার্কেটের মালিক রাসেল মিয়ার সঙ্গে যুবদল নেতা নাজমুল হুদা সাগরের চাঁদা চাওয়ার একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

গত ১৯ মার্চ আগুনে পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেট পুড়ে যায়। ফোনালাপটি এর কয়েকদিন আগের। সাগর খুলনা মহানগর যুবদলের সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। যুবদলের ওই কমিটির সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু গত ২৩ মার্চ রাতে মুক্তিপণের দাবিতে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ফোনালাপের শুরুতে মার্কেট মালিক রাসেলকে সাগর বলেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছো না, এটা কি ঠিক হচ্ছে তোমার?’

জবাবে রাসেল বলেন, ‘ভাই, আমি আছি খুব বিপদে।’

তখন সাগর বলেন, ‘তুমি আমারে বলছো টাকা দিয়ে যাবা, তুমি পাঁচ মাসেও আমার সঙ্গে যোগাযোগই করলে না। এটা তোমার কাছে আমি প্রত্যাশা করি?’

রাসেল বলেন, ‘ভাই টাকা ইনকাম করাই এখন কঠিন হয়ে গেছে।’

উত্তরে সাগর বলেন, ‘কেন ইনকাম কঠিন হয়ে গেল কেন? তুমি আমারে প্রথমে বললা ৫০ হাজার করে দিবা পিকচার প্যালেস থেকে। সেদিন বললা না ভাই ৩০ হাজার করে দিব। একটা টাকাও দিলা না। তুমি তো মেলাটেলা করতেছো।’

মার্কেট মালিক বলেন, ‘আমি মেলা করছি না। মন্টুর মেলায় কয়েকটি স্টল দিয়েছি।’ এরপর আরও কিছু কথা হয় দু’জনের মধ্যে।

শেষে যুবদল নেতা বলেন, ‘যাই হোক তুমি আমার সঙ্গে যে কমিটমেন্ট করেছো সেটা কি রাখবা, না রাখবা না ? সেটা বললেই হয়ে যায়।’

মার্কেট মালিক বলেন, ‘এখন পিকচার প্যালেসের যে অবস্থা, আছি খুব বিপদে। দোকানদারদের বেচাকেনা কম। টাকা-পয়সা ঠিকমতো দিতে পারছে না। আমিও আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেছি না।’

ব্যবসায়ীর বক্তব্য শেষে কিছুটা সময় চুপ করে রূঢ় কণ্ঠে সাগরকে বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’

অডিও রেকর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে নাজমুল হুদা বলেন, ‘কোনো মন্তব্য করব না।’ 

এ বিষয়ে রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমি শেষ হয়ে গেছি। পথে বইসে গেছি। আমারে আর শেষ কইরেন না’।

আগুনে পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেটের ৪৪টি দোকান পুড়ে যায়। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা জানান, ভেঙে ফেলা পিকচার প্যালেস সিনেমা হলের জায়গা ভাড়া নিয়ে এক বছর আগে অস্থায়ী মার্কেট তৈরি করেন ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া। তিনি শহরে মেলা রাসেল নামে পরিচিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ