সফটওয়্যার ও রোবট নিয়ন্ত্রণে মাইক্রোসফটের নতুন এআই টুল
Published: 23rd, February 2025 GMT
সফটওয়্যার ও রোবট নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল ম্যাগমা নিয়ে কাজ করছে মাইক্রোসফট। মাইক্রোসফট রিসার্চের অধীনে তৈরি এই মডেল ভিজ্যুয়াল এবং ভাষা প্রক্রিয়াকরণের সক্ষমতাকে একত্র করে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার উভয় ক্ষেত্রেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারবে।
মাইক্রোসফট বলছে, বর্তমান মাল্টিমোডাল এআই প্রযুক্তিগুলো সাধারণত তথ্য বিশ্লেষণ ও কার্য সম্পাদনের জন্য আলাদা আলাদা মডেলের ওপর নির্ভরশীল। তবে ম্যাগমা একই সঙ্গে ভাষা, ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করতে পারবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সফটওয়্যার পরিচালনা বা রোবট নিয়ন্ত্রণে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ম্যাগমার উন্নয়নে মাইক্রোসফটের সঙ্গে কাজ করেছে কোরিয়ার কোরিয়ান অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড, ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-ম্যাডিসন ও ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন। নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বা একক নির্দেশের বাইরে এই এআই মডেল স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিকল্পনা করতে পারবে এবং জটিল কাজ একাধিক ধাপে সম্পন্ন করতে পারবে।
গবেষকদের মতে, ম্যাগমা নির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুযায়ী পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারে। এটি ভাষাগত ও ভিজ্যুয়াল তথ্য বিশ্লেষণ করে জটিল কাজ সম্পাদন করতে পারে, যা ভার্চ্যুয়াল ও বাস্তব দুই ক্ষেত্রেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এর ফলে এটি উৎপাদন, স্বাস্থ্যসেবা, রোবোটিকস এবং ডিজিটাল অটোমেশনসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারবে।
এআই প্রযুক্তির বিকাশে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে রয়েছে। ওপেনএআই তাদের ‘অপারেটর’ প্রকল্পের মাধ্যমে ওয়েব ব্রাউজারে স্বয়ংক্রিয় কার্য সম্পাদনের জন্য এআই তৈরি করছে। অন্যদিকে গুগল তাদের জেমিনি ২.
সূত্র: ইন্ডিয়াটুডে
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রমজানে শেষ নয় রোজা
রাসুল (সা.) রমজান চলে যাওয়ার পরও সাহাবিদের রোজা পালন অব্যাহত রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন। অর্থাৎ, রোজা শুধু রমজানের ইবাদত নয়। রমজানের রোজা তো ফরজ, বাকি সারা বছর আরও রোজা আছে সেগুলো সুন্নত।
বছরের অন্যান্য সময়ের রোজা
রাসুল (সা.) অধিক পরিমাণে নফল রোজা পালন করতেন। রোজার জন্য নিষিদ্ধ পাঁচ দিন ছাড়া বছরের যেকোনো সময় নফল রোজা রাখা যায়। তবে নির্দিষ্ট কিছু কিছু সময়ের রোজা সাধারণ নফল রোজার থেকে বেশি ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সা.) গুরুত্বসহকারে সেই রোজাগুলো পালন করতেন। তিনি আরও যেসব নফল রোজা পালন করতেন তা হলো :
১. শাওয়াল মাসের রোজা : নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে অত:পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে সে যেন গোটা বছর রোজা রাখে। ইবনে মাজাহ, হাদিস ২৪৩৩
২. আরাফা দিবসের রোজা : জিলহজ মাসের নয় তারিখে—যাকে আরাফা দিবস বলা হয়—রোজা রাখা সম্পর্কে নবীজিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন : আরাফা দিবসের রোজা সম্পর্কে আল্লাহর কাছে আশা করি যে, তা বিগত এক বছর ও আগত এক বছরের পাপের কাফফারা হবে। (মুসলিম, হাদিস: ২,৮০৩)
তবে যারা হজ পালন করছেন, তারা এ দিন রোজা রাখবে না।
আরও পড়ুনউয়ায়েস করনির কাহিনি০৮ মার্চ ২০২৫৩. মহররম মাসের রোজা : রাসুল (সা.) বলেন, রমজান মাসের পর সর্বোত্তম রোজা হলো আল্লাহর মাস মহররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম নামাজ হল রাতের নামাজ। (মুসলিম, হাদিস: ২,৮১২)
৪. আশুরার রোজা : আশুরা অর্থাৎ, মহররমের ১০ তারিখ উপলক্ষে রোজা সম্পর্কে নবীজিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, তা বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা। (মুসলিম, হাদিস: ২,৮০৪; তিরমিজি, হাদিস: ২,৮০৯)
তবে রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা আশুরা দিবসে রোজা পালন কর এবং তাতে ইহুদিদের বিরোধিতা কর। তোমরা আশুরার একদিন পূর্বে অথবা একদিন পরে (যুক্ত করে) রোজা পালন করবে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২,১৫৪)
৫. শাবান মাসের রোজা : আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে শাবান মাস ব্যতীত অন্য মাসে অধিক পরিমাণে নফল রোজা রাখতে দেখি নি। (বুখারি, হাদিস: ১,৯৬৯)
৬. প্রতি মাসে ৩ দিন রোজা রাখা : প্রতি চান্দ্র মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখে রোজা রাখা নবীজির (সা.) আমল ছিল। এই তিন দিনকে হাদিসের পরিভাষায় ‘আইয়ামুল বিয’ বলা হয়। আইয়ামে বিযের রোজা সম্পর্কে ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) সফরে ও শহরে কোনও অবস্থাতেই এ-রোজা ত্যাগ করতেন না।’ (নাসায়ি, হাদিস: ২,৩৪৫)
আরও পড়ুনযে সাহাবির মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল ০৮ মার্চ ২০২৫রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মাসে তিনটি রোজা ও এক রমজানের পর পরবর্তী রমজানে রোজা পালন পূর্ণ বছর রোজা পালনের সমান।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৮০৪)
৭. সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজা : সপ্তাহের এই দু’দিন—সোমবার ও বৃহস্পতিবার—রোজা পালন করা সুন্নত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর সমীপে উপস্থাপন করা হয়। কাজেই আমি পছন্দ করি যখন আমার আমলের উপস্থাপন হবে তখন আমি রোজা অবস্থায় থাকব।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৭২৫)
৮. একদিন পর পর রোজা পালন : ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে (নফল রোজার মধ্যে) সবচে’ প্রিয় রোজা হলো দাউদ (আ.)-এর রোজা। তিনি একদিন রোজা রাখতেন এবং একদিন ভাঙতেন। (মুসলিম, হাদিস: ১,১৫৯)
রমজানের পরে রোজা আদায়কারীর কাছে প্রত্যাশা থাকে, রমজানের শিক্ষা থেকে সে আরও বেশি করে রোজার ইবাদত পালনের মধ্য দিয়ে আল্লাহর আনুগত্য প্রদর্শন করবে। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) এমনভাবে নফল রোজা পালন করতেন যে আমরা ধরে নিতাম তিনি আর বিরতি দেবেন না। আবার এমনভাবে রোজা পরিত্যাগ করতেন যে আমরা মনে করতাম তিনি আর রোজা পালন করবেন না। (বুখারি, হাদিস: ১,৯৬৯)
আরও পড়ুনশয়তানের ধোঁকার কাহিনি০৭ মার্চ ২০২৫