অভিভাবকহীন নগরীতে পদে পদে ভোগান্তি
Published: 23rd, February 2025 GMT
জন্ম-মৃত্যু সনদ, প্রত্যয়নপত্র আগে দিনে আবেদন করে দিনেই পাওয়া যেত। এখন তা পেতে অপেক্ষা করতে হয় কমপক্ষে এক সপ্তাহ। কাউন্সিলররা ওয়ার্ড কার্যালয়ে বসে সেবাগ্রহীতার সামনে সঙ্গে সঙ্গে স্বাক্ষর করে সেবা দিতেন। এখন সরকারি কর্মকর্তা কাউন্সিলরের দায়িত্বে থাকায় তা আর পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, খানাখন্দে ভরা রাস্তাও সংস্কার হচ্ছে না। মশার কামড়ে নগরবাসী অতিষ্ঠ হলেও নিধনে নেই কোনো কার্যকর ব্যবস্থা। একসময়ের সবুজ ও পরিচ্ছন্ন নগরীর খ্যাতি পাওয়া নগরী হয়ে উঠেছে আবর্জনার ভাগাড়। অভিভাবকহীন নগরীতে এক গভীর শূন্যতার মধ্যে পড়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পিয়ন কাবিল হোসেন ছাড়া কেউ নেই। তিনি অপেক্ষা করছেন ওয়ার্ড সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বুলুর। সচিব জন্ম-মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ, প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য গেছেন বিটিসিএল কোম্পানির রাজশাহীর উপমহাব্যবস্থাপক শেখ মাহফুজুর রহমানের কাছে। তিনি নগরীর ১২ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের দায়িত্বে রয়েছেন।
অফিস সহায়ক বলেন, আগে যখন কাউন্সিলর ছিলেন, তখন নাগরিক সেবার আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে সেবা দেওয়া হতো। সরকারি কর্মকর্তারা নিজেদের অফিসের নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। আমাদের গিয়ে সারাদিন বসে থাকতে হয় সই করার জন্য। সব কাজ শেষ করে তিনি কাউন্সিলর দায়িত্বের কাজ শুরু করেন। সপ্তাহে দু’দিন নাগরিক সেবার বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেন। কোনো দিন পাই, কোনো দিন পাই না।
সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বুলু কিছু সনদে সই নিয়ে ফেরেন দুপুর ২টায়। তিনি বলেন, কর্মকর্তাদের নিজ কার্যালয়ে গিয়ে সই করাতে হয়। সই করতে যাতায়াত খরচ চলে যায় ১০০ টাকার ওপরে। এটা অফিস দেবে না, ব্যক্তিগত খরচ হিসেবে যায়। এভাবে মানুষের কাজ হচ্ছে।
নগরীর ঘোড়ামারা দিলদুয়ারবাগ এলাকার জিতেন্দ্রনাথের স্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রমীলা রানী সাহা মারা গেছেন বেশ কিছুদিন আগে। তাঁর স্বামী পাবেন পেনশনের টাকা। এ জন্য জিতেন্দ্র দ্বিতীয় বিয়ে করেননি– এমন একটি প্রত্যয়নপত্রের প্রয়োজন। তিনি গত বৃহস্পতিবার আবেদন করেন। ২২ নম্বর ওয়ার্ড সচিব তাঁর অংশে সই করে নিয়ে যান দায়িত্বরত কাউন্সিলরের স্বাক্ষর নিতে। কিন্তু দায়িত্বে থাকা কাউন্সিলর বিটিসিএল কর্মকর্তা সই করতে আপত্তি করেন।
ওয়ার্ড সচিব বলেন, তিনি সরকারি কর্মকর্তা, নাগরিককে চিনবেন না– এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমি কেন্দ্র সচিব হিসেবে সই করার পর তিনি সই করবেন। কারণ, আমি নাগরিকদের চিনি এবং দায়িত্বশীল। অথচ বারবার ঘুরেও তাঁর সই নিতে পারিনি।
এ সময় বরেন্দ্র কলেজের প্রভাষক নগরীর সাগরপাড়া এলাকার বাসিন্দা গোলাম মর্তুজা রুবেল যান নাগরিক সনদ নিতে। অফিস থেকে এ সময় তাঁকে বলা হয়, রোববার যোগাযোগ করতে। কারণ, রোববার আর বুধবার সপ্তাহে এই দু’দিন সময় দিয়ে রেখেছেন কাউন্সিলরের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তা। গোলাম মর্তুজা বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা দায়িত্বে থাকলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। দ্রুত নির্বাচিত কাউন্সিলরদের হাতে দায়িত্ব না এলে ভোগান্তি কমবে না।
এ সমস্যার চিত্র প্রতিদিনের, সব ওয়ার্ডেরই। সেবা না পেয়ে ফিরে যান নাগরিকরা, বাড়ে ভোগান্তিও। এ বিষয়ে কথা বলতে বিটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বরত কাউন্সিলর শেখ মাহফুজুর রহমানকে গত দু’দিন ধরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ক্লিন সিটি নর্দমার ভাগাড়
নির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলররা যখন দায়িত্ব পালন করেছেন, তখন প্রতি রাতেই নগরীর সব রাস্তাঘাট ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করে রাখা হতো। এখনও কিছু রাস্তায় রাতে ঝাড়ু দেওয়া হয়। তবে অধিকাংশ রাস্তা থাকছে অপরিষ্কার। নর্দমার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে অধিকাংশ রাস্তা।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় রাজশাহী কোর্ট স্টেশন এলাকার রাস্তায় দেখা যায় নর্দমার বিশাল ভাগাড়। আব্দুল মালেক নামের এক বাসিন্দা বলেন, প্রায় তিন মাস থেকে এখানে ময়লা ফেলা হয়। কিন্তু পরিষ্কার খুব একটা হয় না। দুর্গন্ধে এদিক দিয়ে চলাচল করাই কঠিন। এখন সপ্তাহে এক দিনও পরিষ্কার করা হয় না।
পরে বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরীর ঝাউতলা মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আবর্জনার স্তূপ করে রাখা। আমেনা বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, আগে বাসার সামনে ময়লা নিতে গাড়ি
আসত। এসে বাঁশি বাজাত। এখন কেউ ময়লা নিতে আসে না। তাই সবাই এখানে ময়লা ফেলেন। এ কারণে ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। কিন্তু এটা ডাস্টবিন নয়। মাঝে মাঝে সিটি করপোরেশন থেকে গাড়ি এসে এসব ময়লা নিয়ে যায়, তাও নিয়মিত নয়।
শুধু এ দুই এলাকাই নয়, শহরের বিভিন্ন স্থানে এমন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় দেখা যায়। এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো.
নগরজুড়ে বেড়েছে মশা
শহরের রাস্তাঘাট, নদীতীর, অফিস কিংবা বাসা– কোথাও শান্তি নেই। সর্বত্রই শুধু মশা আর মশা। নগরবাসী বলছেন, আগে মশা নিধনে ফগার মেশিন ব্যবহার করলেও এখন আর তা ব্যবহার হয় না। লার্ভা নিধনের ওষুধও প্রয়োগ হয় না। ফলে মশার আক্রমণে অতিষ্ঠ মানুষ। নগরীর আলুপট্টি এলাকার সোহেল রানা বলেন, মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের কোনো কার্যক্রমই চোখে পড়ে না। মশার অত্যাচার বেড়েছে। এ কারণে এবার ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও অনেক বেশি ছিল।
এ বিষয়ে রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা বলেন, আমরা লার্ভা নিধনের কীটনাশক নিয়মিত ড্রেনে দিই। ফগার মেশিন ব্যবহার করি না। রমজানের আগে এক সপ্তাহ ফগার মেশিন ব্যবহার করব। মশার প্রজনন মৌসুম হওয়ায় মশা এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
গলির রাস্তায় খানাখন্দ
শহরের প্রধান সড়কগুলো কিছুদিন আগেই নির্মাণ ও মেরামত করা হয়। কিছু সড়কে ফ্লাইওভার নির্মাণ করায় চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে নগরীর রেলগেট ও বন্ধগেট এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণ করায় চলাচল অযোগ্য হয়ে আছে প্রায় এক বছর ধরে। এ ছাড়া বেশ কিছু গলিপথ সংস্কার হয়নি বছরের পর বছর।
নগরীর তালাইমারী-আলুপট্টি নদীর বাঁধের রাস্তা খানাখন্দে ভরা। নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের শেখেরচকের বুধু রজক বলেন, অনেকেই রিকশা থেকে পড়ে আহত হন এই রাস্তায়। এলাকার মঞ্জু রজক বলেন, ‘শেখেরচকের রাস্তা এতটা খারাপ, কিছুদিন আগে রিকশার ঝাঁকুনিতে অন্তঃসত্ত্বা এক নারী সড়কেই বাচ্চার জন্ম দেন। পরে আমরা নবজাতককে পরিষ্কার করে হাসপাতালে পাঠাই।
সুজনের জেলা সভাপতি আহমেদ সফি উদ্দীন সমকালকে বলেন, শহরের ৩০টি ওয়ার্ডের নিয়মিত কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। যারা দায়িত্বে আছেন, তারা সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় সময় দিতে পারেন না। সাংঘাতিক সংকটময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আগের চেয়ে মানুষ বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অবিলম্বে সভা করে নাগরিকদের সমস্যা শুনে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
গলিপথের দুরবস্থা নিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. এ বি এম শরীফ উদ্দিন বলেন, রাস্তা সংস্কারকাজ নিয়মিত প্রক্রিয়া। এলাকাবাসী সমস্যা নিয়ে লিখিত দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউন্সিলরের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের হয়রানির বিষয়ে তিনি বলেন, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ১৭ জন কর্মকর্তা কাউন্সিলরের দায়িত্বে আছেন। অনেকে ওয়ারিশান সনদ, প্রত্যয়নপত্রসহ বেশ কিছু কাজ জটিল হওয়ার কারণে সতর্কতার সঙ্গে করেন। আবার অনেকে নিজের অফিসের কাজ করে হয়তো সময় সমন্বয় করতে পারেন না। এ কারণে সময় বেশি লাগতে পারে। তবে কারও গাফিলতির অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসব বিষয়ে কথা বলতে সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদের নম্বরে ফোন করলে ফোনটি রিসিভ করেন রাজশাহীর স্থানীয় সরকার পরিচালক পারভেজ রায়হান। তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনার স্যার বিসিএস কনফারেন্সে গেছেন। রাসিকের দায়িত্বে স্যার আছেন। আমি শুধু বিভাগীয় কমিশনারের রুটিন দায়িত্ব পালন করছি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প ফ জ র রহম ন পর ষ ক র ব যবহ র ব যবস থ এল ক র সরক র সমস য নগর র শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে মুক্তি পেয়েছে দাগি, অপেক্ষায় বরবাদ ও জংলি
বেশ কয়েক বছর হয় বিদেশেও তৈরি হয়েছে বাংলা ছবির বাজার। ফলে দেশে সিনেমা মুক্তির পর বিদেশে মুক্তি দিতেও চলে তোড়জোড়। বিদেশে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশি ছবির শোও হাউসফুল হয়, হয় আলোচনা, প্রযোজক পান মুনাফা। এবারের ঈদুল ফিতরে বাংলাদেশে ছয়টি ছবি মুক্তি পেয়েছে।
এর মধ্যে মেহেদি হাসান হৃদয়ের ‘বরবাদ’, এম রাহিমের ‘জংলি’ ও শিহাব শাহীনের ‘দাগি’ দারুণভাবে আলোচনায়। তিনটি ছবি দর্শকদের কাছে তুমুল প্রশংসিত হচ্ছে। সিনেমাগুলো দেখতে সিনেপ্লেক্সে উপচে পড়ছে দর্শকের ভিড়। টিকিট না পেয়ে ফিরে গেছেন অনেক দর্শক। এ ছাড়াও চক্কর ও জ্বীন ছবি দুটিও দর্শক দেখেছেন ঈদের আমেজে। মুক্তিপ্রাপ্ত ছয় ছবির তিনটি যথাক্রমে বরবাদ, দাগি, জংলি ইতোমধ্যে বিদেশে মুক্তির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় হাউজফুল দাগি
অস্ট্রেলিয়া দিয়ে শুরু দাগির ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় মুক্তি পেয়েছে শিহাব শাহীন পরিচালিত সিনেমা ‘দাগি’। দেশটির সিডনিতে গত ১২ এপ্রিল সিনেমাটি মুক্তির পর থেকে হাউসফুল যাচ্ছে বলে খবর আসছে। নির্মাতা শিহাব শাহীন জানান, পথ প্রোডাকশন এবং ঈগল এন্টারটেইনমেন্টের পরিবেশনায় ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় ১৫টি শোর অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলছে। একই পরিবেশকের অধীনে নিউজিল্যান্ডে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। এরপর পর্যায়ক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ আরও অনেক দেশে মুক্তির কথা রয়েছে। পথ প্রোডাকশনসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুক্তির পর অলরেডি শো হাউসফুল যাচ্ছে।
শুরুতে অস্ট্রেলিয়ায় ১৫টি শো চলার কথা থাকলেও, দর্শক চাপে আরও ৫টি শো বেড়ে ২০টি শো চালানো হবে। দাগিতে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো। এই সিনেমার মাধ্যমে দুই বছর পর সিনেমা হলে ফিরেছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা, সুনেরাহ বিনতে কামাল, শহীদুজ্জামান সেলিম প্রমুখ। প্রযোজনা করেছে এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট।
জংলিও প্রস্তুত
ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া অন্যতম আলোচিত ও প্রশংসিত ছবি জংলি। এম রাহিম পরিচালিত সিনেমাটি দারুণ দর্শক টানছে মাল্টিপ্লেক্সে। সিনেমাটি মুক্তির আগে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়া জানিয়েছিল, ২৫ এপ্রিল দেশের বাইরে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। প্রথম পর্যায়ে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন ও অস্ট্রেলিয়ায় মুক্তি পাবে জংলি। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে জংলির পরিবেশক স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো। ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রোর সঙ্গে সহপরিবেশক হিসেবে থাকছে রেভেরি ফিল্মস। সুইডেনে মুক্তি পাবে ফ্রেন্ডস মুভিজ ও অস্ট্রেলিয়ায় বঙ্গজ ফিল্মসের পরিবেশনায়। জংলি সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ, শবনম বুবলী, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, শহীদুজ্জামান সেলিম, শিশুশিল্পী নৈঋতা প্রমুখ।
বরবাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিবেশনায় শাকিব খান
শাকিব খানের নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মস (শাকিব খান ফিল্মস) এবার আন্তর্জাতিক পরিসরে সিনেমা পরিবেশনা শুরু করল। এখন থেকে নিয়মিত নর্থ আমেরিকা (এসকে ফিল্মস ইউএসএ) এবং গলফে (এসকে ফিল্মস ইউএই) সিনেমা পরিবেশনা করবে। গত ৯ এপ্রিল স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরাঁয় এসকে ফিল্মস ইউএসএ-এর আন্তর্জাতিক যাত্রা শুরুর বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হয়। এসকে ফিল্মস ইউএসএ জানায়, আগামী ১৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ও ১৯ এপ্রিল কানাডায় ‘বরবাদ’ মুক্তির মাধ্যমে এসকে ফিল্মস ইউএসএ আন্তর্জাতিকভাবে ফিল্ম ডিসট্রিবিউশন শুরু করছে। অচিরেই মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়াতে এসকে ফিল্মস ডিসট্রিবিউশন শুরু করবে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঈদুল ফিতরে বাংলাদেশের ১২০টি সিনেমা হলে মুক্তির পর ব্যাপক আলোচনায় রয়েছে ‘বরবাদ’। মুক্তির ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও দর্শকদের এ সিনেমা নিয়ে আগ্রহ কমেনি। সিনেপ্লেক্স, মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিঙ্গেল স্ক্রিন হাউসফুল যাচ্ছে। বাংলাদেশের দর্শকদের ‘বরবাদ’ দেখে উল্লাস ও আগ্রহ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার প্রবাসী বাঙালিদের। শাকিব খানের প্রিয়তমা, রাজকুমার, তুফান দেখে মুগ্ধ হওয়া প্রবাসী দর্শকরা এখন বরবাদের জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন। যেসব স্টেটে বাঙালি কমিউনিটি রয়েছে সেসব স্থানের থিয়েটারগুলোতে চলবে ‘বরবাদ’। প্রথম সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০টি থিয়েটারে ‘বরবাদ’ চলবে। ১৮ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব শহরে ‘বরবাদ’ চলবে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে– নিউইউর্ক, বোস্টন, ভার্জিনিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি, আটলান্টা, মিশিগান, সানফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস, ম্যারিল্যান্ড, বাফেলো, ফিলাডেলফিয়া। ১৯ এপ্রিল কানাডার বাঙালি জনবসতিপূর্ণ মন্ট্রিয়ল, অটোয়া এবং টরন্টো– এ তিন শহরে চলবে ‘বরবাদ’। মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত ‘বরবাদ’ ছবিতে শাকিব খানের নায়িকা ইধিকা পাল। আরও আছেন মিশা সওদাগর, ফজলুর রহমান বাবু, শহীদুজ্জামান সেলিম, যীশু সেনগুপ্ত, শ্যাম ভট্টাচার্য, মানব সাচদেভ প্রমুখ।