গ্রেপ্তার দুজনের দায় স্বীকার, একজন পাঁচ দিনের রিমান্ডে
Published: 23rd, February 2025 GMT
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অপর একজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলা করায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার (এএসআই) আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলো– মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মহিত, শরীয়তপুরের জাজিরা থানার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো.
গতকাল নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার তিনজনের বরাতে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন টাঙ্গাইলের এসপি মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, গত সোমবার রাতে রাজশাহীগামী ইউনিক রয়েল রোড পরিবহন বাসে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে তিন-চার ঘণ্টা ধরে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাত ২টার দিকে বাসযাত্রী ওমর আলী মির্জাপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলা করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মির্জাপুর থানা পুলিশ ও টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাভার মডেল থানায় অভিযান চালায়।
শুক্রবার বিকেলে গেণ্ডা এলাকা থেকে তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোনসেট, একটি ছুরি এবং নগদ ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার মহিতের বিরুদ্ধে দুটি বাস ডাকাতিসহ মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, আমরা বাসের যাত্রীদের খুঁজে বের করেছি। নারী যাত্রীদের ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা আমরা আমলে নিয়ে কাজ করছি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মালপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ‘টাচে’ যেতে পারে এবং তা শ্লীলতাহানি পর্যন্ত যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার কারণে মির্জাপুর থানার এএসআই আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি মোশারফ হোসেন।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগী বাসযাত্রীরা যখন মির্জাপুর থানায় আসেন, তখন থানার ডিউটি অফিসার ছিলেন আতিকুজ্জামান। তিনি কোনো কাজ না করে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে বলেন। যাত্রীরা কয়েক মিনিট পর চলে গেলেও ডিউটি অফিসারের কাছে তাদের নাম-ঠিকানা বা মোবাইল নম্বর ছিল না। এভাবে দায়িত্বে অবহেলা করায় এসপি তাঁকে সাময়িক বরখাস্তের ঘোষণা দেন। শুক্রবার রাতে আতিকুজ্জামানকে মির্জাপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
২ দিনেও মামলা হয়নি, আটক নেই কেউ
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গুলি করে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় দুই দিন পার হলেও আজ রোববার সকাল পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। এ ঘটনায় কাউকে আটকও করা হয়নি।
গত শুক্রবার রাতে শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মাঠে তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নিহত হন ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের হানেফ আলী (৫৬), তাঁরই শ্যালক একই উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের লিটন হোসেন (৩৫) ও কুষ্টিয়া সদরের পিয়ারপুর গ্রামের রাইসুল ইসলাম (২৫)।
এই তিনজন একসময় চরমপন্থী দলের নেতা–কর্মী ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। হানেফ পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (জনযুদ্ধ) আঞ্চলিক নেতা ছিলেন। তিনি একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন, পরে তিনি সাধারণ ক্ষমা পেয়ে মুক্তি পান। তাঁদের সবাইকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুনঘটনাস্থলে দুই দশকে আরও ৮ খুন, দায় স্বীকার নিয়ে ধোঁয়াশা, পরিস্থিতি থমথমে১৮ ঘণ্টা আগেআরেক চরমপন্থী দল জাসদ গণবাহিনী বার্তা পাঠিয়ে এই হত্যার দায় স্বীকার করেছে। ঘটনার পরপরই ঝিনাইদহে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হয়। বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ‘তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। কালু জাসদ গণবাহিনী।’ তবে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে এই বার্তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, ঘটনা অন্যদিকে মোড় দিতে হয়তো বার্তা পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুনস্থানীয়রা রাতে কয়েকটি গুলির শব্দ পান, তবে ভয়ে বের হননি কেউ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুম খান বলেন, এখনো মামলা হয়নি, তবে আজ হবে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি বলে তিনি জানান।