সন্ধ্যায় নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্র, রাতে মিলল মরদেহ
Published: 23rd, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাড়ির পাশের লিচুবাগানে পাওয়া গেছে ইব্রাহিম মিয়া (৯) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রের মরদেহ। শুক্রবার রাতে সোনারগাঁ পৌরসভার জয়রামপুর গ্রামে তার লাশ পাওয়া যায়। একই দিন সন্ধ্যা থেকে ইব্রাহিমের সন্ধান পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা।
নিহত ইব্রাহিম জয়রামপুরের মহব্বত আলীর ছেলে। সে বৈদ্যেরবাজার গাজী আক্তারুজ্জামান মিলাতুল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলাধুলা করছিল ইব্রাহিম। হঠাৎ সন্ধ্যার দিকে সে নিখোঁজ হয়। তার বাবা মহব্বত আলী রাতেই সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। রাত ১১টার দিকে বাড়ির পাশের লিচুবাগানে ইব্রাহিমের লাশ পাওয়া যায়।
মহব্বত আলী বলেন, এলাকাবাসী রাত ১১টার দিকে লিচুবাগানে তাঁর ছেলের লাশ পাজামা দিয়ে গলা বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে ছেলেকে উদ্ধারের পর সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাতেই নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) আসিফ ইমাম, সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী ও পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ছেলেটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
বটির কোপে স্ত্রীকে ও ছেলেকে শ্বাসরোধে হত্যা, আদালতে জবানবন্দি
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজিতে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে হত্যার পর বস্তাবন্দী করে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন গ্রেপ্তার ইয়াছিন আলী। বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামসুর রহমানের আদালতে তিনি এ জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত পুলিশ পরিদর্শক মো. কাইউম খান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তিন খুনের ঘটনায় আসামি ইয়াছিন মিয়াকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডের চতুর্থ দিনে গতকাল ইয়াছিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জানা গেছে, তিন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি বাড়ির কাছে একটি পুকুর থেকে সোমবার দুপুরে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে ওই একই পুকুর থেকে রক্তমাখা জামাকাপড়ভরা একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম বলেন, স্ত্রী লামিয়া আক্তার, ৪ বছরের সন্তান আব্দুল্লাহ ও লামিয়ার বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে ইয়াছিন একাই হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে ইট-সুরকির নিচে চাপা দেন। গত ১১ এপ্রিল দুপুরে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয় এবং ওই দিনই ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন পুলিশের কাছে স্বীকার করে, সে একাই স্ত্রী সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করে। মাদকের টাকার জন্য মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগে সৎ মায়ের দায়ের করা মামলায় তাকে পুলিশ ২৭ রমজান গ্রেপ্তার করে। ঈদুল ফিতরের ২ দিন আগে সে জামিনে ছাড়া পায়।
পুলিশ আরও জানায়, ইয়াছিনের স্ত্রী লামিয়া ছেলে লাবীব ও বড়বোন স্বপ্না আক্তারকে নিয়ে মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার আক্তার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতো। ইয়াছিন জামিন পাওয়ার পর গত ৮ এপ্রিল স্ত্রী বাসায় যায়। এ সময় লামিয়া ও ইয়াছিন এর মধ্যে ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে লামিয়ার বড়বোন স্বপ্না বটি নিয়ে তেড়ে আসেন। তার কাছ থেকে বটি কেড়ে নিয়ে ইয়াছিন স্ত্রীর গলায় কোপ দিলে দেহ থেকে গলা বিচ্ছিন্ন হয়। তখন স্বপ্না আক্তার চিৎকার শুরু করলে ইয়াছিন তাকেও কুপিয়ে গলা, হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এবং ছেলে লাবীবকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। পরে লামিয়া ও স্বপ্নার বিচ্ছিন্ন মাথা ও হাত-পা বস্তায় ভরে। আর দেহ দুটি আরেকটি বস্তায় ধরে। এছাড়া ছেলের মরদেহ কম্বলে পেঁচিয়ে ফেলে। সেই তিনটি মরদেহ নিয়ে রাস্তার পাশে ইট-সুরকির নিচে চাপা দেয় ইয়াছিন।
পুলিশকে ইয়াছিন আরও জানায়, ৮ এপ্রিল রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে সে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।