মাদারীপুর শহরের এক নারীকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণ ও সেই ধর্ষণের ভিডিও দেখিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযুক্ত রাহাত ওরফে শুভ (৩০) সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের মতিউর রহমান সেলিম ওরফে সেকান্দার শেখের ছেলে। এ ঘটনায় মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। শুভকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনার তদন্ত ও সঠিক বিচার চেয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে নতুন শহর এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী নারী। তিনি জানান, অভিযুক্ত শুভ তাঁর আত্মীয়। আত্মীয়তার সম্পর্কের সুবাদে শুভ মাঝেমধ্যে তাঁর বাবার বাড়িতে আসত। শুভ প্রাইভেটকার চালক হওয়ায় পারিবারিক প্রয়োজনে তাঁর গাড়ি ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়া হতো। 

ভুক্তভোগী বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই সুযোগে শুভ তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পরিকল্পনার কথা বলে। সে অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রাইভেটকারযোগে তাঁর স্বামীর কর্মস্থল রাজবাড়ীতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে বাসা থেকে নিয়ে যায় শুভ। পরে শহরের পাকদী এলাকায় নিয়ে গাড়ির মালিকের বাসায় একটু কাজ আছে বলে গাড়ি থামায় শুভ। এ সময় তাঁর মুখে নেশাদ্রব্য মেশানো রুমাল দিয়ে চেপে ধরে শুভ। তিনি অচেতন হয়ে পড়লে শুভ তাঁকে মাদারীপুর শহরের পাকদী এলাকার কাইয়ুম মিয়ার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। এর পর শুভ তাঁকে ধর্ষণ করে ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। এ ছাড়া কিছু অশ্লীল ছবিও তুলে রাখে। রাত ১০টার দিকে তাঁর চেতনা ফিরলে বাসায় কেন আনা হয়েছে জানতে চান তিনি। এ সময় শুভ কিছু অশ্লীল ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে বলে কাউকে এ ঘটনা বললে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। 

তিনি আরও বলেন, শুভকে তাঁর মোবাইল ফোন থেকে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলার অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। বরং ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মাদারীপুর শহরসহ ঢাকাতে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে তাঁকে কয়েকবার ধর্ষণ করে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় তাঁর কাছ থেকে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ব্র্যাক, আশা ও সিএসএস এনজিও থেকে তাঁকে স্ত্রী সাজিয়ে দুই লাখ টাকা লোন তুলে নেয়। এর কিস্তি তাঁকেই পরিশোধ করতে হয়। বিষয়টি শুভর পরিবারকে জানালে তারা কর্ণপাত করেননি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি বিকেলে ভয় দেখিয়ে ঘটমাঝি গ্রামে শুভর মামার নির্মাণাধীন ফাঁকা ভবনে নিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে শুভ।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি মোকসেদুর রহমান বলেন, আসামি শুভকে ৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাঁকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।


 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে কখন, কোথায় ঈদের জামাত

চট্টগ্রাম নগরের পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম ও প্রধান জামাত সকাল আটটায় অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় নগরের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে এই জামাত হবে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ঈদের জামাত আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নিরাপত্তাব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে মসজিদ প্রাঙ্গণ ও এর আশপাশের এলাকায়। আজ রোববার চাঁদ দেখা গেলে কাল সোমবার ঈদ হবে।

ঈদের দিন প্রথম ও প্রধান জামাতে ইমামতি করবেন জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী। একই মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে আটটায়। এই মসজিদের ঈদের জামাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরাও অংশ নেন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাও এখানে ঈদের নামাজ পড়তে আসেন।

নগরের প্রধান ঈদ জামাত কেন্দ্র করে মসজিদের আশপাশে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। নগর পুলিশের পক্ষ থেকে মসজিদ এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে নগরের আরও আটটি মসজিদে ঈদের জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হচ্ছে নগরের ২ নম্বর গেট এলাকার হজরত শেখ ফরিদ (র.) চশমা ঈদগাহ মসজিদ, পাঁচলাইশের সুগন্ধা আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, চকবাজার সিটি করপোরেশন জামে মসজিদ, নিউমার্কেট এলাকার জহুর হকার্স মার্কেট জামে মসজিদ, খুলশীর দক্ষিণ খুলশী (ভিআইপি) আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, আরেফীন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, সাগরিকা গরু বাজার জামে মসজিদ ও মা আয়েশা সিদ্দিকী চসিক জামে মসজিদ (সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামসংলগ্ন)।

এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ৪১টি ওয়ার্ডে একটি করে ঈদের জামাত মসজিদ ও ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ