৩১ দফা বাস্তবায়নে শরীয়তপুরে বিএনপির জনসমাবেশ
Published: 23rd, February 2025 GMT
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শরীয়তপুরের প্রত্যন্ত চরাঞ্চল কাঁচিকাটায় বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার বিকেলে ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের মুন্সিবাজার এলাকায় আয়োজিত এই জনসমাবেশে প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন, যা সভাস্থলকে জনস্রোতে রূপ দেয়।
স্থানীয় বিএনপি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি ছিলেন জেলার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। মিছিল-মিটিং করতে না পারা, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাবাসের কারণে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। গত ৫ আগস্ট বিএনপির আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শরীয়তপুর বিএনপি নতুন করে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ঘোষণা দেন, সেই দফাগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটায় এই জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়। দুপুর গড়াতেই পদ্মা নদীবেষ্টিত এই প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে নেতাকর্মীরা ফেস্টুন, ব্যানার হাতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ট্রলার ও পায়ে হেঁটে সভাস্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। তাদের অংশগ্রহণে মুহূর্তেই সভাস্থল জনস্রোতে পরিণত হয়।
জনসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি সফিকুর রহমান কিরণ। তিনি বলেন, সর্বপ্রথম প্রয়োজন সংসদ নির্বাচন। যে দল ক্ষমতায় আসবে, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে কীভাবে স্থানীয় নির্বাচন পরিচালিত হবে। এটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নয়। অচিরেই সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হোক এবং সেই নির্বাচন সর্বদলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হোক। একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ীরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে এবং তারাই সংসদ গঠন করবে, যেখানে পরবর্তী সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা হবে।
সমাবেশে কাঁচিকাটা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির মোয়াল্লেম বেপারীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম এ হামিদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জিল্লুর রহমান মুকুল, নড়িয়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর, সখিপুর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মোজহারুল ইসলাম সরদারসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র স জনসম ব শ ন ত কর ম গঠন ক রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ: স্যান্ডার্সের সমাবেশে মানুষের ঢল
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে সমাবেশের আয়োজন করেন নির্দলীয় সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ এবং তাঁর প্রশাসনের অধীনে রাজনৈতিক ও করপোরেট অলিগার্কের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন হাজার হাজার মানুষ। স্যান্ডার্সের ‘অলিগার্কবিরোধী লড়াই’ নিয়ে সফরের অংশ হিসেবে শনিবার আয়োজিত এ সমাবেশে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ। স্যান্ডার্স বলেছেন, ট্রাম্প দেশকে একটি কর্তৃত্ববাদী সমাজের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আমরা সেদিকে যেতে চাই না। আর এওসি নামে বেশি পরিচিত ওকাসিও-কর্টেজ ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও বিপর্যয়কর পরিকল্পনা আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটি দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নয়, বরং বাজার কারসাজির জন্য করা হয়েছে।
এদিকে চীনা পণ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা সম্পূরক শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। এর মাধ্যমে ওয়াশিংটনের ভুল শুধরে নেওয়া উচিত বলেও মনে করেন চীনা কর্মকর্তারা।
দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, দুই মাস ধরে চলমান স্যান্ডার্সের ‘ফাইটিং অলিগার্ক’ সফরটি ট্রাম্প প্রশাসন এবং তাঁর নীতির বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধ আন্দোলনের অংশ। এই আন্দোলন প্রচুর জনসমাগম ঘটিয়েছে। দলটি তিন সপ্তাহ আগে অ্যারিজোনায় সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সমাবেশের রেকর্ড করেছিল। কলোরাডোর ডেনভারে ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন, যা ৮৩ বছর বয়সী স্যান্ডার্সের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ জনসমাগম। শনিবার লস অ্যাঞ্জেলেসে জনসমাগমের আরেকটি রেকর্ড তৈরি হয়েছে। সেখানে কমপক্ষে ৩৬ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে সস্তা ভোগ্যপণ্যের এক যুগের সমাপ্তি শেষ হতে যাচ্ছে। চার দশক ধরে মার্কিন নাগরিকরা স্মার্টফোন থেকে শুরু করে ক্রিসমাসের অলংকার পর্যন্ত সবকিছুর জন্য চীনা কারখানার ওপর নির্ভর করে আসছে। হঠাৎ দেশটির ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক চীনা পণ্যকে অনেক দামি করে তুলেছে। পাল্টা হিসেবে চীনও মার্কিন পণ্য আমদানিতে ১২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে।
আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি মুডিস গতকাল জানিয়েছে, মার্কিন বাণিজ্যনীতি ঘিরে অনিশ্চয়তা ব্যবসায়িক আস্থা ও ভোক্তাদের মনোভাবকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এটি এশিয়ার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
ট্রাম্প চীন বাদে পাল্টা শুল্ক আরোপের মেয়াদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। যদিও ১০ শতাংশ ভিত্তি শুল্ক অব্যাহত রয়েছে।
বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইলেকট্রনিক্স ও চিপ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে বাড়তি শুল্ক থেকে রেহাই দেওয়ার ঘোষণা আসার পর এক প্রতিক্রিয়ায় গতকাল রোববার চীন শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহারের ওই আহ্বান জানিয়েছে। চীনা কর্মকর্তারা বলেন, শুল্ক প্রত্যাহার করে ওয়াশিংটনের উচিত ভুল শুধরে নেওয়া।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘সম্পূরক শুল্কের ভুল চর্চা পুরোপুরি বন্ধ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার পথে ফিরে আসতে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগে মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা কার্যালয় এক নোটিশে জানায়, ট্রাম্প যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন তা থেকে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, মেমোরি চিপ ও অন্যান্য কিছু পণ্যকে ছাড় দেওয়া হবে। গত শনিবার রাতে মিয়ামি সফরের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এই ছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পরে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এসব পণ্যে ছাড় খুবই ছোট পদক্ষেপ। চীন এর প্রভাব পর্যালোচনা করছে।