সৈকতে উৎসবে মাতল ২১ জাতিগোষ্ঠীর মানুষ
Published: 22nd, February 2025 GMT
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গত দুই দিন ছিল অন্যরকম আমেজ। বসন্তের মৃদু হাওয়ার দোলায় এমনিতেই মন উতলা হয়, এর মধ্যে শুক্র ও শনিবার সেই অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দেয় ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’। চাকমা, মারমা, ম্রো, বাঙালিসহ ২১টি জাতিগোষ্ঠী এই উৎসবে অংশ নেয়। সেখানে একুশের গান এবং দেশের গান থেকে শুরু করে ‘মারমা পাখা নৃত্য’, ‘বম জীবনধারা নৃত্য’সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সৈকতের লাবণী পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের উন্মুক্ত মঞ্চে শুক্র ও শনিবার ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’ হয়। এ উৎসবকে ঘিরে পর্যটকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২১টি জাতিগোষ্ঠীর পরিবেশিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরাই ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’-এর মূল লক্ষ্য। উৎসবে অংশ নেয় চাকমা, মারমা, ম্রো, ত্রিপুরা, লুসাই, খুমি, বম, খেয়াং, চাক, পাংখোয়া, তঞ্চঙ্গ্যা, মণিপুরি, সাঁওতাল, মাহালী, ওরাওঁ, মালপাহাড়িয়া, গারো, হাজং, কোচ, রাখাইন সম্প্রদায়ের শিল্পীরা। এ ছাড়া কক্সবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমি, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি এবং স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের বাঙালি শিল্পীরাও উৎসবে যোগ দেন।
শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন ভাষায় ‘একুশের গান’ পরিবেশন করেন শিল্পীরা। সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’ গানটি। এরপর ‘মারমা পাখা নৃত্য’, ‘বম জীবনধারা নৃত্য’ এবং ‘সংগীত’ পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া ‘খুমি মাছ ধরা নৃত্য’, ‘ময়ূর নৃত্য’, ‘চাকমা গান’, ‘তঞ্চঙ্গা নৃত্য’, ‘ম্রো জুম নৃত্য’, ‘ত্রিপুরা গান’ ‘চাকমা প্রদীপ নৃত্য’, ‘লুসাই বাঁশ নৃত্য’, ‘সংগীত ও সম্প্রীতি নৃত্য পরিবেশিত হয়। ‘দেশাত্মবোধক গান’ (মাহালী সাঁওতালি পাহাড়িয়া) পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সমতলের শিল্পীদের পরিবেশনা শুরু হয়। তার পর ‘দাসাই নৃত্য’ (সাঁওতালি), ‘পাহাড়িয়া নৃত্য’ এবং ‘কমেডি’ পরিবেশন করা হয়।
এ ছাড়া শিল্পীরা পরিবেশন করেন ‘ওরাওঁ নৃত্য’ ও ‘মাহালী নৃত্য’। সবশেষে ‘মণিপুরি মৃদঙ্গ নৃত্য’ ও ‘মণিপুরি রাস নৃত্য’। একইভাবে বান্দরবান জেলার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীদের নৃত্য ও গানের মধ্য দিয়ে শনিবার রাতে শেষ হয় দুই দিনের ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’। শুক্রবার কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড.
তিনি বলেন, শিল্পকলা একাডেমি জনগণের মাঝে জনবান্ধব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করতে চায়। সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার ফাহমিদা আকতার বলেন, কক্সবাজার সৈকতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে এ রকম একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখে এবারের ভ্রমণ সার্থক হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, কক্সবাজার সৈকতে ২১টি জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে ‘বিচ ফেস্টিভ্যাল’ পর্যটকদের ভিন্নভাবে বিনোদন দিয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন শ ল পকল পর ব শ এক ড ম
এছাড়াও পড়ুন:
পর্দা নামল তিন দিনব্যাপী বগুড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার প্রদানের মধ্যদিয়ে পর্দা নামলো তিনব্যাপী ৫ম বগুড়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। পুণ্ড্রনগর চলচ্চিত্র সংসদ বগুড়ার আয়োজনে উৎসবটি দুটি ভেন্যুতে শুরু হয় ২০ ফেব্রুয়ারি। তিনদিনে বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দেখানো হয় ৩৩ দেশের দেশের ৯৭টি চলচ্চিত্র।
শনিবার সন্ধ্যায় উৎসবের সমাপনী দিনে ৬টি বিভাগে ৬টি সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার প্রদান করা হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা (পিপিএম)।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুরি মেম্বার ফিল্ম সাউন্ড ডিজাইনার নাহিদ মাসুদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো. তাওকীর ইসলাম, সাংবাদিক ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাটক নির্বাচক কমিটির সদস্য অপূর্ণ রুবেল, লেখক ও সাংবাদিক অনিন্দ্য মামুন।
বিধান রায়ের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন। তিনি বলেন, এইবার ৬টি ক্যাটাগরিতে দেয়া হয় উৎসবের সেরা ৬টি চলচ্চিত্রের পুরস্কার। উৎসবে আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় ইরানের চলচ্চিত্র ‘লন্ড্রি’, সেরা প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ‘দ্যা টেস্ট অব হানি’, ওপেন ডোর শর্ট বিভাগে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নেপাল থেকে ‘জুনকো’, সেরা বাংলাদেশি চলচ্চিত্র বিভাগের পুরস্কার পায় ‘সওদা’, সেরা অ্যানিমেশন বিভাগে রাশিয়ার ‘মুনখা’, সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে তুর্কির ‘এ পিচ অব গ্রেইন’ এবং উৎসব মেনশন অ্যাওয়ার্ড পায় নেপালের ‘বুলাকী’।
সেরা চলচ্চিত্র মনোনয়নের জন্য জুরিবোর্ডে ছিলেন ভারত থেকে চলচ্চিত্র নির্মাতা রাকেশ আন্দানিয়া, অমল ভাগাত, মিশর থেকে ইল সাকুরি, বাংলাদেশের থেকে ফিল্ম সাউন্ড ডিজাইনার নাহিদ মাসুদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো. তাওকীর ইসলাম, লেখক ও সাংবাদিক অপূর্ণ রুবেল, অনিন্দ্য মামুন, চলচ্চিত্র নির্মাতা শায়লা রহমান তিথি এবং অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। মাস্টার ক্লাস পরিচলানা করেন যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার আহম্মেদ তাওকীর এবং ফিল্ম সাউন্ড ডিজাইনার নাহিদ মাসুদ।
উৎসব পরিচালক সুপিন বর্মন জানান, এইবার দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাসহ নেপাল, ভারত, ইটালি ও মালয়েশিয়া থেকে ৩৫ জন চলচ্চিত্র নির্মাতা, কলাকুশলী বগুড়ায় আসেন। তাঁরা ২১ এ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।