সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। শনিবার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভায় কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে। আমরা ছাত্র সংগঠনগুলোকে বলব, ধীরে চলুন, না হলে আপনাদের অবস্থা ছাত্রলীগের মতো হবে। যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, খুনিদের সহযোগী ছিল, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই, তাদের একটি নিয়মের মধ্য দিয়ে নিয়ে আসতে হবে। তারা যদি ক্ষমা না চায়, তাহলে বাংলাদেশে তাদের জায়গা হবে না। আগামী নির্বাচনের ব্যালট পেপার সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং লড়াই করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) রোকন উদ্দিন, মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মেহেদী হাসান, গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) মো. খালেদ হোসাইন, ক্যাপ্টেন (অব.) শুভ আফ্রিদি প্রমুখ। জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ছাড়াও মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার উপস্থিত ছিলেন।

সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সারজিস আলম বলেন, আপনারা সন্ত্রাসী এবং দখলদারিত্ব সমর্থন করবেন? ক্ষমতার অপব্যবহার সমর্থন করবেন? খুনি শেখ হাসিনা একা গিয়েছে। কিন্তু তার যে চর্চা ১৬ বছরের, তা রয়ে গেছে। ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করতে হবে।

সাবেক এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, আমাদের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পরিবারগুলোতে ১ কোটির বেশি ভোটার রয়েছেন। আগামী নির্বাচনে এ ভোটাররা আমাদের রিজার্ভ হিসেবে থাকবেন। ইতোমধ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে এ বিষয়ে একমত হয়েছি। বিএনপিরও অনেকে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।   


 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ২০ সংগঠনকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানমঞ্চে তুলতে প্রশাসনের নিষেধ

‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ অভিযোগ তুলে প্রায় ২০টি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ডিসি হিলের পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মঞ্চে তুলতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসন থেকে সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন পরিষদের সংগঠকদের কাছে এই তালিকা পাঠানো হয়। পরে ফোন করে তালিকাভুক্ত সংগঠনগুলোকে আগামীকাল সোমবারের অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ার জন্য বলা হয়।

এর আগে সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে সম্মিলিত বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন মঞ্চ নামে একটি সংগঠন মানববন্ধন করে। ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার চিহ্নিত দোসরদের নেতৃত্বে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন আয়োজনের প্রতিবাদে’ এই মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মূলত জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস), বিএনপির সহযোগী সংগঠন মিলে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক বরাবরে দেওয়া স্মারকলিপিতে এই সংগঠনগুলোকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনের বিষয়ে জাসাস চট্টগ্রামের সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ (শিপন) প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের দোসররা নববর্ষ অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। আমরা এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছি। ডিসিকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি। তারা নববর্ষের অনুষ্ঠান করতে পারবে না।’

সংগঠনগুলোর মধ্যে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, নরেন আবৃত্তি একাডেমি, খেলাঘর, রক্তকরবী, ওডিসি অ্যান্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট, স্কুল অব ওরিয়েন্টাল ড্যান্স, ঘুঙুর নৃত্য একাডেমি অন্যতম।

ডিসি হিলে আগামীকাল সকাল সাড়ে ৬টা থেকে নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এখানে প্রায় ৫৫টি সংগঠন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার জন্য নাম নিবন্ধন করেছে। শুরু থেকে ডিসি হিলে অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়েও দেনদরবার করতে হয় অনেক। এখন নতুন করে ২০টি সংগঠনকে বাদ দিতে বলায় বিপাকে পড়েছেন আয়োজকেরা।

সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন পরিষদের সমন্বয়ক সুচরিত দাশ আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার আমাকে একটা তালিকা পাঠান। পরে ফোন দিয়ে বলা হয় এই সংগঠনগুলোকে মঞ্চে তোলা যাবে না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তারা নাকি ফ্যাসিস্টের দোসর।’

সুচরিত দাশ আরও বলেন, ‘স্টাফ অফিসারকে আমরা জানিয়ে দিয়েছি কোনো সংগঠনকে বাদ দিতে আমরা পারব না। প্রয়োজনে ডিসি হিলের অনুমতি বাতিল করে চিঠি দিয়ে দিক আমাদের। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাকে মঞ্চে তুলব না। কিন্তু সংগঠন বাদ দিতে পারব না।’

জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার মো. ইস্রাফিল জাহান তালিকা পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার শাহীদ ইশরাক ভালো বলতে পারবেন।

সহকারী কমিশনার শাহীদ ইশরাক প্রথম আলোকে বলেন, নাগরিক কমিটি, রাজনৈতিক দলসহ সুশীল সমাজ থেকে কিছু সংগঠনের বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। তাদের অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধনও হয়েছে। তাদের একটি তালিকা আয়োজকদের দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা উদীচী কীভাবে ফ্যাসিস্টের দোসর হলো এমন এক প্রশ্নে শাহীদ ইশরাক বলেন, ‘আসলে বিষয়টা বিব্রতকর। আমরা নানামুখী ঝামেলায় আছি।’

তবে বর্ষবরণের অপর অনুষ্ঠান সিআরবির শিরীষতলার আয়োজকদের কাছে কোনো সংগঠনের তালিকা পাঠানো হয়নি বলে জানা গেছে। এই সংগঠনগুলোর অনেকে ওখানেও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে ২০ সংগঠনকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানমঞ্চে তুলতে প্রশাসনের নিষেধ