নানামুখী সংকটের মাঝেও ব্যাংকিং খাত কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে। অতীতের অনিয়ম ও লুটপাটে দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে কয়েকটি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া, রিজার্ভ সুরক্ষা ও আমদানি বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে, যার ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে পর্ষদ পুনর্গঠন হয়েছে, এমন কোনো কোনো ব্যাংকে আমানত বাড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ সুশাসন জোরদার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি ব্যাংকিং খাতের পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের পরপরই আতঙ্কের কারণে টাকা উত্তোলনের ব্যাপক চাপ তৈরি হয়। সংকট মেটাতে ৬টি ব্যাংককে গত নভেম্বর মাসে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তারল্য সহায়তা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ধরনের টাকা দেওয়া সরাসরি টাকা ছাপানোর মতো। উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে এভাবে টাকা দেওয়ায় ওই সময় ব্যাপক সমালোচনা হয়। যদিও গভর্নর জানান, প্রয়োজন হলে ব্যাংকগুলোকে আরও টাকা দেওয়া হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এরই মধ্যে আমানতকারীর আস্থা ফেরায় টাকা তোলার চাপ কমেছে। যে কারণে নতুন করে আর কোনো ব্যাংকে টাকা ছাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ নিয়ে সবচেয়ে চিন্তিত ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটি থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে নামে-বেনামে ঋণ হিসেবে অন্তত ৮৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে এস আলম গ্রুপ। তবে ব্যাংকটি প্রচুর আমানত পাওয়ায় এরই মধ্যে আবার ঋণ দেওয়া শুরু করেছে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন গভর্নর ড.

আহসান এইচ মনসুর। পুনর্গঠন হওয়া অন্য ব্যাংকের মধ্যে এসআইবিএল এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের উত্তোলনের চেয়ে জমা বেশি হচ্ছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে ৮ আগস্ট। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসেবে ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়। খেলাপি ঋণের প্রকৃত অবস্থা নির্ণয় এবং বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর সম্পদের প্রকৃত মান নির্ধারণ, ফরেনসিক নিরীক্ষা পরিচালনা এবং আর্থিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে এ টাস্কফোর্স।

এসব উদ্যোগের ফলে কিছু ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর যে ১২টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়, তার মধ্যে ইউসিবি অন্যতম। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো প্রণোদনা সহায়তা গ্রহণ না করেই ব্যাংকটি শক্তিশালী অবস্থানে ফিরেছে। ইউসিবি সূত্রে জানা গেছে, মাত্র দেড় মাসে ইউসিবির সব শাখা, উপশাখা, এজেন্ট আউটলেট ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এক লাখেরও বেশি নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থারই প্রতিফলন। ইউসিবিতে ব্যক্তিশ্রেণি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের হিসাব খোলার পরিমাণ বেড়েছে। এই শ্রেণির মধ্যে ব্যাংকের প্রতি আস্থা বাড়ছে।
এ ব্যাপারে ইউসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ মামদুদুর রশীদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভালো উদ্যোগের ফলে মানুষ আবার ব্যাংকের ওপর ভরসা করতে শুরু করেছে। আমানত ও ঋণের পরিমাণ বাড়ছে, যা ইতিবাচক। সংস্কার ও সুশাসনের এই ধারা অব্যাহত থাকলে খুব শিগগিরই ব্যাংকিং খাত আরও শক্তিশালী ও স্থিতিশীল হবে।
শুধু ইউসিবি নয়, আরও কিছু ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ বাড়ছে। হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে বিধ্বস্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আমানতকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ২০২৪ সালে সোনালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। জানা গেছে, হলমার্কের ঘটনার পর সোনালী ব্যাংক বড় কোনো অর্থায়ন করেনি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং রপ্তানি পণ্য উৎপাদন করে এমন ব্যবসায় বেশি ঋণ দিয়েছে। এই কৌশলেই ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। তবে পুরোনো কিছু খেলাপি গ্রাহক, হলমার্ক কেলেঙ্কারির দায় এখনও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে ব্যাংকটিকে।
এক হিসাবে দেখা গেছে, গত ছয় মাসে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে ফিরে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি বলেছেন, ‘সংস্কার উদ্যোগের ফলে ব্যাংকিং খাত দ্রুতই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। যে ১০টি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে ছিল, সেগুলোও এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র ইউস ব গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসি-ইউএনওদের জন্য কেনা হবে ৫০ জিপ

জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ৫০টি নতুন জিপ গাড়ি কিনবে সরকার। প্রতিটি অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির মিৎসুবিশি পাজেরো (কিউএক্স) জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে ৫০টি জিপ কিনতে মোট ব্যয় হবে ৮৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

সূত্র জানিয়েছে, জনপ্রশাসনের কাজে গতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ডিসি ও ইউএনওর কার্যালয়ের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ২০০টি জিপ গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে পিপিআর ২০০৮ এর ৭৫ ও ৭৬ বিধি মোতাবেক ডিপিএম পদ্ধতিতে প্রতিটি জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হিসেবে ২০০টি জিপ গাড়ি কেনার জন্য ৩০৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ের সম্মতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের অধীন সরকারি সড়ক পরিবহন শাখার মোটরযান ক্রয় খাতে বরাদ্দকৃত ৩৭৭ কোটি টাকা থেকে এ ব্যয় নির্বাহ করা হবে।

অর্থ বিভাগ থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই তারিখে জারিকৃত ৪৯৪ নম্বর স্মারক অনুসারে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা (রেজিট্রেশন, ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ) নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর তারিখে জারি করা ৭৪৯ নম্বর স্মারকের মাধ্যমে একই পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জিপ গাড়ির দাম ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা (রেজিস্ট্রেশন, ভ্যা ও ট্যাক্সসহ) নির্ধারণ করা হয়।

জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা জেলা ও উপজেলাতে দপ্তর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাদেরকে মাঠ পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, পরিদর্শন, তদারকি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ নানাবিধ সরকারি দায়িত্ব পালন করতে হয়। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গ্রেড-১ বা গ্রেড-২ পর্যায়ের কর্মকর্তা না হলেও দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজন ও প্রকৃতি বিবেচনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২০০টি অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ি কেনার সম্মতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ৩১ জুলাই জারি করা ৪৯৪ নম্বর স্মারকের শর্ত শিথিল করে অর্থ বিভাগ থেকে ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট তারিখে ৫২ নম্বর স্মারকের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির ২৬১টি জিপ গাড়ি কেনার জন্য ৩৮১ কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ের সম্মতি দেওয়া হয়েছিল। ইতোপূর্বে যেহেতু শর্ত শিথিল করে অর্থ বিভাগ থেকে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ি কেনার সম্মতি দেওয়া হয়েছে, সেহেতু জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাপ্তরিক কাজের প্রয়োজন ও প্রকৃতি বিবেচনায় ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর তারিখে ৭৪৯ নম্বর স্মারক অনুযায়ী অনূর্ধ্ব ২ হাজার ৭০০ সিসির জিপ গাড়ি কেনার সম্মতি দেওয়া যৌক্তিক হবে বলে প্রতীয়মান হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের অধীন সরকারি মোটরযান ক্রয় খাতে বরাদ্দকৃত ৩৭৭ কোটি টাকা থেকে অর্থ বিভাগের ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবরের জারি করা ৭৪৯ নম্বর স্মারক অনুযায়ী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ২০০টির পরিবর্তে ৫০টি নতুন জিপ গাড়ি কেনার জন্য ৮৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ের সম্মতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

এর প্রেক্ষাপটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী ডিসি এবং ইউএনওর কার্যালয়ে সবকারি কাজে ব্যবহারের জন্য ৫০টি জিপ গাড়ির প্রতিস্থাপক হিসেবে ৫০টি নতুন জিপ গাড়ি কেনার জন্য (অনূর্ধ্ব ২৭০০ সিসি) ৮৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে শর্তসাপেক্ষে সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

শর্তগুলো হচ্ছে: 
ক. গাড়ি কেনার আগে পুরাতন গাড়িগুলো অকেজো ঘোষণা সংক্রান্ত বিআরটিএর পরিদর্শকদলের অনুমোদনের অনুলিপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে। 

খ. গাড়ি কনডেমনেশন-সংক্রান্ত কমিটির সিদ্ধান্ত/কার্যবিবরণীর অনুলিপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।

গ. অকেজো ঘোষণাকৃত গাড়িগুলোর বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমাদান-সংক্রান্ত ট্রেজারি চালানের কপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।

ঘ. গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে এবং এ বিষয়ে সকল বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

সূত্র জানিয়েছে, ৫০টি জিপ কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড.সালেহউদ্দিন আহম্মেদ।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আনসারদের রেশন বাড়ছে, জুলাই থেকে কার্যকর  
  • অভিযুক্ত ৭৩ শতাংশই সরকারি চাকরিজীবী
  • ডিসি-ইউএনওদের জন্য কেনা হবে ৫০ জিপ
  • বাগেরহাট জেলা পরিষদের এককালীন শিক্ষা বৃত্তি
  • ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানালেন ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদের সহধর্মিণী
  • তিন মাসে ২৫ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র ভেঙেছেন মানুষ, কারণ কী
  • চুয়েটে স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় সেরা হলেন যাঁরা
  • পাবলিক অডিট বিলের খসড়া নিয়ে গোপনীয়তায় টিআইবির উদ্বেগ
  • ভারতের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ