রিজিয়া (প্রকৃত নাম রাজিয়া) ছিলেন ভারতবর্ষের ইতিহাসে একমাত্র নারী সম্রাট; আর আমরা তাঁকে ‘সুলতানা’ হিসেবে উল্লেখ করলেও নিজেকে তিনি অভিহিত করতেন ‘সুলতান’ বলে। পাঁচ বছরের কম সময় তিনি দিল্লির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এ সময়টাও তাঁর কেটেছে দরবারের ও বাইরের শত্রুদের মোকাবিলায়; ষড়যন্ত্র ও বিদ্রোহ দমনের প্রচেষ্টায়। যাঁরা তাঁকে ক্ষমতায় বসতে সাহায্য করেছিলেন, তাঁরাও চেয়েছিলেন নারী হিসেবে তিনি তাঁদের কথামতো চলবেন; কিন্তু রাজিয়া পুরুষতন্ত্রের হাতের পুতুল হতে চাননি।

দিল্লির এই নারী সম্রাটের ব্যক্তিত্ব, সাহস ও আত্মমর্যাদাবোধ তরুণ বয়সেই মাইকেল মধুসূদন দত্তকে আকৃষ্ট করেছিল। মাদ্রাজে অবস্থানকালে তিনি তাঁকে নিয়ে ইংরেজিতে একটি কাব্যনাট্য লিখতে শুরু করেন। ‘রিজিয়া–ইমপ্রেস অব ইন্ডে’ নামের এই রচনা তিনি মাদ্রাজেই তাঁর নিজের সম্পাদিত পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে শুরু করেন। মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মের দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কবির অসমাপ্ত কাব্যনাট্যটি প্রথমবারের মতো পুস্তক আকারে প্রকাশ করেছে প্রথমা প্রকাশন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৮ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপানে চাকরির সুযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল নিয়ে পড়েছেন রাবাব সায়েরা। স্নাতক শেষে আর সব বন্ধুর মতোই চাকরিতে যোগ দেন তিনি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ–জাপান আইসিটি ইঞ্জিনিয়ার্স ট্রেনিং (বি-জেট) নামে একটি প্রোগ্রামের খোঁজ পেয়ে প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করেন। কয়েক মাসের প্রশিক্ষণ শেষে বিভিন্ন জাপানি প্রতিষ্ঠানে কাজের জন্য ইন্টারভিউ দেন। অবশেষে চাকরি নিয়ে ২০২২ সালে জাপানে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। হোয়াটসঅ্যাপে রাবাব বলেন, ‘আমি এখন জাপানে আছি। সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছি। জাপানের কর্মবাজারের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়েছিলাম বি-জেট থেকে। দেশে বসেই জাপানি ভাষা ও কাজের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছিলাম। এখন জাপানের কাওয়াসাকি সিটিতে ডেটা সায়েন্স ও এআই সফটওয়্যার ফার্মে সিস্টেম প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছি।’

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও জাপানের মিয়াজাকি ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে নর্থ সাউথ ক্যাম্পাসে কাজ করছে বি-জেট সেন্টার। অনেক তরুণই এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভাগ্য গড়ছেন। এ প্রসঙ্গে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আবদুল হান্নান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা বৈশ্বিক কর্মবাজারের জন্য তৈরি হচ্ছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-জেট সেন্টার দেশের কম্পিউটার প্রকৌশল ও আইসিটি নিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জাপানের মতো উন্নত দেশের কর্মবাজারের জন্য তৈরি করছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জাপানের বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক মান অনুযায়ী দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে তৈরির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

আরও পড়ুন‘অনেক চাকরি নিয়ে বসে আছি, কিন্তু লোক পাচ্ছি না’১৯ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনবাসের সুপারভাইজার হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা যেভাবে বিসিএসের ভাইভাতেও কাজে লাগল০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

বি-জেট সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপানে পাড়ি দিয়েছেন—এমন আরও এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ হলো। নাম এস এম ইশতিয়াক আহমেদ। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে ২০২১ সালে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশলে স্নাতক হয়েছেন তিনি। বলছিলেন, ‘জাপানের মিয়াজাকিতে আছি প্রায় তিন বছর। একজন ফুল-স্ট্যাক ডেভেলপার হিসেবে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের ফ্রন্টএন্ড ও ব্যাকএন্ড নিয়ে কাজ করি। বি-জেট ট্রেনিং থেকে আমি মূলত জাপানে বসবাস ও কর্মজীবনের মৌলিক দিকগুলো শিখেছিলাম। যেমন প্রাথমিক ভাষাগত দক্ষতা, ব্যবসায়িক যোগাযোগের শিষ্টাচার, জাপানি কর্মসংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার উপায় ইত্যাদি। বিশেষ করে জাপানের অফিসের পরিবেশ, সময়নিষ্ঠা ও পেশাদারির ব্যাপারে যে ধারণা পেয়েছিলাম, তা এখন আমার বেশ কাজে লাগছে।’

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও জাপানের মিয়াজাকি ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে নর্থ সাউথ ক্যাম্পাসে কাজ করছে বি-জেট সেন্টার

সম্পর্কিত নিবন্ধ