পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে তাহিরপুর উপজেলার হাওরাঞ্চলে চলছে ফসল রক্ষা বাঁধের শেষ মুহূর্তের কাজ। এ কারণে অধিকাংশ বাঁধের কাজই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। কয়েকটি বাঁধের কাজ দেরিতে শুরু করায় এবং শেষ মুহূর্তে মাটির সংকটের কারণে শেষ হতে সময় বেশি লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সদস্যরা।
জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির প্রত্যক্ষ তদারকির আওতায় এ উপজেলায় ৭৪টি প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে বাঁধ সংস্কার ও নির্মাণের কাজ। এর মধ্যে সমস্যা দেখা দিয়েছে বনুয়া হাওরের তিনটি প্রকল্পের কাজে। মাটি সংকটের কারণে প্রকল্পগুলোর কাজ থমকে রয়েছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা না হলে নির্ধারিত সময়ের মাঝে প্রকল্প সম্পন্ন হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন সবাই। এসব প্রকল্পের কাজ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
পাউবো সূত্রে জানা যায়, শনি, মাটিয়ান, মহালিয়া ও বর্ধিত গুরমা হাওরের প্রায় ৮১ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাঁধের উভয় দিকে ঘাস লাগানো ও ফিনিশিং চলছে। বনুয়া হাওরের ৫৩ নম্বর প্রকল্প সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে তিনি সমস্যায় রয়েছেন। এ পর্যন্ত বাঁধের কাজের ৬০ ভাগ মাটি কিনেছেন নিজের টাকায়। মাটির জোগানেও সংকট রয়েছে। তারপরও চেষ্টা করছেন, যেন কৃষকের ভোগান্তি না হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেন বলেন, বনুয়া হাওরের তিনটি প্রকল্পের উভয় পাশের জলাবদ্ধতার কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। জটিলতা দূরীকরণে এলাকাবাসীর পরামর্শে বাঁধ কেটে হাওরের পানি সরানোর পর কাজ শুরু করা হয়েছে। বিষয়টি পাউবোর জেলা কমিটি অবগত আছে। কাজ দেরিতে শুরু করায় শেষ করতে কিছু সময় বেশি লাগবে।
তাহিরপুরের সব হাওরে গড়ে ৮১ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাসেম বলেন, বনুয়া হাওরের তিনটি প্রকল্পের কাজ ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। মাটি সংকটের কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এ কাজও ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন পিআইসির লোকজন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ১৯ বছর পর বিএনপির সমাবেশ, ব্যাপক প্রস্তুতি

গোপালগঞ্জে ১৯ বছর পর আগামীকাল সোমবার জনসভা করবে বিএনপি। এই জনসভা ঘিরে শহরজুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবের আমেজ।

আওয়ামী লীগের দূর্গ হিসেবে খ্যাত গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কের মুক্তমঞ্চে এদিন সকাল ১০টায় সমাবেশের আয়জন করেছে দলটি। গোপালগঞ্জ শহরসহ জেলার আনাচে কানাচে দেখা যাচ্ছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিসম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন ও তোরণ। নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী আওয়ামী লীগের ৩ মেয়াদে বিএনপিকে প্রকাশ্যে কোনো মিছিল মিটিং করতে দেখা যায়নি। ঘরোয়া আলোচনার মাধ্যমেই বিএনপির কর্মসূচি সীমাবদ্ধ ছিল। 

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে গোপালগঞ্জের রাজপথ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। বিএনপি ও জামায়াত প্রকাশ্যে রাজপথে শোডাউন ও মিছিল সমাবেশ করছে। এটি বিগত প্রায় ১৬ বছরে দেখা যায়নি।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ও জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অংশ হিসেবে এ জনসভার আয়োজন করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন ও প্রধান বক্তা হিসেবে থাকার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদের। বিশেষ অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) খন্দকার মাশুকুর রহমান, সহ–আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন মেহবাহ। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিন ও জেলা বিএনপির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন হিরা।

এদিকে সমাবেশ সফল করতে ও বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী, সমর্থকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরে দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা, প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি করে চলছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ শহরের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০০৪ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সর্বশেষ ফরিদপুর বিভাগীয় ইউনিয়ন সভা করেছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে জনসভা নামে পরিবর্তন করা হয়। ১৯ বছর পর আগামীকাল সোমবারের এ জনসভায় নেতাকর্মীরা ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটাতে চাইছে।

সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর দেশে কোনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছিল না। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ও তৎকালীন প্রশাসনের বিমাতা সুলভ আচরণের কারণে বিএনপি প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারা দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনায় গোপালঞ্জে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সমাবেশকে সফল করতে কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিমসহ অন্যরা দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমরা উন্মুক্ত কাজ করতে পারিনি। তাই ২৪ তারিখের সমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’ 

গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ রফিকউজ্জামান বলেন, ‘বিগত দিনে আওয়ামী লীগ ও তার পুলিশ বাহিনী দিয়ে বিএনপির কন্ঠ রোধ করা হয়েছিল। আহবায়কের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আওয়ামী লীগের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিরলসভাবে বিএনপিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আশা করি, প্রায় ৫০ হাজার লোকের সমাগম ঘটবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ