কাজ ফেলে ঠিকাদার পালিয়েছেন, ভোগান্তি মানুষের
Published: 22nd, February 2025 GMT
নাটোরের সিংড়ায় ঠিকাদারের অবহেলায় সাত বছরেও কাজ শেষ হয়নি ঢাকঢোর-মোহনপুর সড়কের। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ১০ গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার মানুষ। সড়কটি নির্মাণে প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। উপজেলার লালোর ইউনিয়নের ঢাকঢোর পাকা সড়ক থেকে মোহনপুর পর্যন্ত ১ হাজার ৫৫০ মিটার সাবমার্সিবল সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে গতকাল শনিবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় ঢাকঢোর-মোহনপুর সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান তারা। বক্তারা বলেন, কাজ ফেলে ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ১০টি গ্রামের ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে কষ্টে আছেন। প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ চলাচল করেন। ভালো সড়ক না থাকায় মেয়েদের ভালো জায়গায় বিয়ে হচ্ছে না।
হালতি বিলের বোরো ধান ও কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায় কৃষক দুর্ভোগে পড়ছেন জানিয়ে বক্তারা বলেন, স্থানীয় ডাঙ্গাপাড়া প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বিলহালতি ত্রিমোহনী অনার্স কলেজ, মোহনপুর দারুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হেঁটে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মানববন্ধনে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবুল খয়ের প্রামাণিকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ড.
জানা গেছে, ২০১৮ সালে সড়কের কাজের উদ্বোধন করেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কাজটি বাস্তবায়ন করছে এলজিইডি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা সোহেল রানা বলেন, রাস্তার মূল ঠিকাদার আওয়ামী লীগের সমর্থক নাটোরের প্রভাবশালী আমিরুল ইসলাম জাহান। তিনি বাইরে থাকায় এবং অর্থ সংকটে কাজ বন্ধ রয়েছে। দ্রুত কাজটি করার চেষ্টা চলছে।
কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী রহমত আলী বলেন, ১ হাজার ৫৫০ মিটার সড়কের মধ্যে প্রায় ১ হাজার মিটার হয়েছে। বাকি ৫৫০ মিটারের কাজ ঠিকাদারের অবহেলার কারণে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। ঠিকাদার পলাতক থাকায় সমস্যা বাড়ছে। শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া, পাথর ও সিমেন্ট নেই। বিভিন্ন সামগ্রীর সংকট থাকায় ম্যানেজার কাজ শেষ করতে পারছেন না।
প্রায় ৩ কোটি টাকার কাজ শেষ করতে
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রকৌশলী আহমেদ রফিক। তিনি বলেন, এখন বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিল পরিশোধ করা হয়নি। কাজ শেষ হলে ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মানববন্ধন শেষে আসামির বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আসামি গ্রেপ্তার ও তার বিচার দাবি করে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে আসামির বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের সোনালিয়া চকবাজার গ্রামে গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বিক্ষুব্ধরা। পরে সন্ধ্যার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার গিয়াস উদ্দিনের কলা বাগানে তারই চাচা আকবর আলীর ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুইজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে হামলার শিকার হন আকবর আলী (৬৫)। মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
এই ঘটনার জেরে গত শনিবার গিয়াস উদ্দিনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলা হয় এবং ওই রাতে দুইজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক রাশেদুজ্জামান।
তবে সোমবার বিকেলে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে এলাকার ৫ শতাধিক মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে উত্তেজিত জনতার একটি অংশ গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে হামলা হামলার পর অগ্নিসংযোগ করে। অগ্নিসংযোগের সময় ওই বাড়িতে নারী ও শিশুরা অবস্থান করছিলেন। তবে তারা নিরাপদে সরে যান বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সকালে মির্জাপুর থানার ওসি বলেন, পুলিশ-সেনাবাহিনীর যৌথ অবস্থানে পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।