প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছর পর এই প্রথম সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে খুলনা মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব। আগামীকাল সোমবার সকালে সার্কিট হাউস মাঠে দলের মহানগর শাখার সম্মেলন হবে। বিকেলে জেলা স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়ামে অনুষ্ঠিত ভোটে নির্বাচিত হবেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক। প্রধান তিনটি পদে ১২ নেতা প্রার্থী হয়েছেন। ভোট দেবেন নগরীর পাঁচ থানার ৫০৫ কাউন্সিলর।
নেতা নির্বাচনের জন্য ভোট আয়োজন করায় উৎফুল্ল বিএনপির তৃণমূল কর্মীরা। এতদিন যে নেতাদের নাগাল পাওয়া কষ্টকর ছিল, তারাই প্রতিদিন তৃণমূল কর্মীদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। বিগত দিনের ভুলভ্রান্তির জন্য ক্ষমা চাইছেন। নির্বাচিত হলে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। নেতাদের নমনীয় এই রূপে খুশি কাউন্সিলররা।
তবে দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে নেতাদের মধ্যে। কারণ দলীয় পদের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের তোষামোদি ও লিয়াজোঁতে ব্যস্ত বেশির ভাগ নেতা ছিলেন কর্মীবিচ্ছিন্ন। নগর আহ্বায়ক কমিটিতে পদ পেয়ে কার্যালয়মুখী হননি অনেকে। অনেক নেতার বিরুদ্ধে কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। ভোটে এসব বিষয় প্রভাব ফেলবে কিনা, সেটি এখন ভাবাচ্ছে নেতাদের।

দলীয় কার্যালয় থেকে জানা যায়, মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে বর্তমান আহ্বায়ক এস এম শফিকুল আলম মনা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম জহির এবং দৌলতপুর থানা বিএনপির সদস্য সাহাজী কামাল টিপু প্রার্থী হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। তারা হলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মাহমুদ আলী এবং মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর। 
সাংগঠনিক সম্পাদক ছয় প্রার্থী হলেন মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাসুদ পারভেজ বাবু, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ সাদী, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাহবুব হাসান পিয়ারু, যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শের আলম সান্টু, সাবেক ছাত্রদল নেতা হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ ও তারিকুল ইসলাম তারেক। এর মধ্যে তারেক ছাড়া বাকিরা বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক।
মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ তাঁর অনুসারীদের কেউ প্রার্থী হচ্ছেন না। কাউন্সিল ঘিরে তাদের তৎপরতা চোখে পড়েনি।
নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সভাপতি পদে শফিকুল আলম মনা ও তরিকুল ইসলাম জহিরের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে শফিকুল আলম মনা রাজনীতিতে আসেন। যুবদলের রাজনীতি শেষে দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি এবং সর্বশেষ খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, দলের দুঃসময়ে নেতাকর্মীর পাশে ছিলাম। কর্মীরা ত্যাগী ও যোগ্য নেতা চিনতে ভুল করবেন না বলে বিশ্বাস করি।

আর তরিকুল ইসলাম জহির মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। জহির অভিযোগ করেন, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কাউন্সিলর তালিকা তৈরি করেছেন। অনেক ত্যাগী নেতা বাদ পড়েছেন। এ ছাড়া প্রার্থী হয়েও তারা দু’জন দলীয় পদ ও প্রভাব ব্যবহার করে থানার নেতাদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করছেন। আমরা ভোট চাইতে গেলে তাদের সহযোগিতা পাচ্ছি না। তার পরও ভোটে বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
সাধারণ সম্পাদক পদে শফিকুল আলম তুহিন ও নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগরের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে কর্মীরা ধারণা করছেন। তুহিন মহানগর ছাত্রদল ও যুবদলের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব। কর্মীরা যোগ্য ব্যক্তিকেই নেতা নির্বাচন করবেন বলে বিশ্বাস করেন তুহিন।
নাজমুল হুদা সাগর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সাগর বলেন, থানার নেতাদের জোর করে সদস্য সচিবের পক্ষে প্রচার চালাতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমরা এখনও ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা, নমুনা ব্যালট পাইনি।
সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় দলের মধ্যে জবাবদিহির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মী এতে খুশি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত র য বদল র স র ক ল ইসল ম সদস য স কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

চিত্রনায়িকা দিতির মেয়ে লামিয়ার ওপর হামলার ঘটনায় যা জানা গেল

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আত্মীয়দের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলার শিকার হয়েছেন চিত্রনায়িকা পারভীন সুলতানা দিতির কন্যা লামিয়া চৌধুরী। গতকাল শনিবার দুপুরে সোনারগাঁ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় লামিয়া চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করেন। সেই লাইভে লামিয়ার গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা যায়। ভিডিওতে লামিয়া বলছিলেন, তার পা ভেঙে ফেলা হয়েছে। তিনি হাঁটতে পারছেন না। তাঁর গাড়িও ভাঙা হয়েছে।

তবে লামিয়ার প্রয়াত ছোট মামার স্ত্রী লায়লা লুৎফুন্নাহার প্রীতি পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, জমিসংক্রান্ত বিষয়ে বিচারে লোকজন নিয়ে এসে তাঁর (প্রীতি) ওপর হামলা চালিয়েছেন লামিয়া। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চিত্রনায়িকা দিতির পাঁচ ভাই ও তিন বোন। তাঁর ৪ নম্বর ভাই লামিয়ার মামা টিপু সুলতান প্রায় ৯ বছর আগে মারা গেছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে লামিয়াদের জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছে। এ নিয়ে আদালতে একটি মামলাও চলমান।

নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলার শিকার দিতি–সোহেল চৌধুরীর মেয়ে লামিয়াছেলে দীপ্ত ও মেয়ে লামিয়ার সঙ্গে দিতি

সম্পর্কিত নিবন্ধ