সমকাল: ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে দুদকের দায়ের করা দুর্নীতি মামলার ৭৩ শতাংশ আসামিই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। যাদের অধিকাংশই বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন।
ড. মু. সিকান্দার খান: সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির জন্য আমরা সাধারণ জনগণও অনেক ক্ষেত্রে দায়ী। কারণ, আমাদের সমাজের অনেক মানুষ আছেন যারা ঘুষ দিয়ে অন্যায়ভাবে বিশেষ সুবিধা আদায় করে নেন। এ কাজ করতে গিয়ে ডকুমেন্ট জালিয়াতি, প্রতারণা ও মিথ্যার আশ্রয় নিতে থাকেন। দিনদিন এ প্রবণতা বেড়েই চলছে। সমাজে আগে যারা দুর্নীতি করতেন না তারাও এসব দেখে এতে জড়িয়ে পড়ছেন। যেমন– ভুমি ও ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিসগুলোতে ঘুষ দিতে হবে, এটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। না হলে আপনার সব ডকুমেন্ট সঠিক হলেও বছরের পর বছর ঘুরতে হবে। এখানে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই হয় না। সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ উভয়ের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।
সমকাল: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকাংশ স্ত্রীই বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন। স্ত্রীদের সম্পদশালী হওয়া নিয়ে কিছু বলুন।
ড.
সমকাল: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ ও দুর্নীতি ঠেকাতে দুদকের কাজ সম্পর্কে আপনি কতটা আশাবাদী।
ড. মু. সিকান্দার খান: দুদকের কর্মকর্তারা আমাদের সমাজেরই একটি অংশ। তারা স্বাধীন হলেও স্বাধীনভাবে অনেক ক্ষেত্রে কাজ করতে পারেন না। কারণ সরকারের হাত অনেক লম্বা। সরকার যদি দুদকের কাজে হস্তক্ষেপ না করে তাহলে তাদেরর ভালো কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
সমকাল: সরকার পরিবর্তন হলে দুদকের কাজেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে কেমন দুদক হওয়া উচিত।
ড. মু. সিকান্দার খান: নতুন পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমাদের একটি সুযোগ এসেছে সমাজ পরিবর্তনের। সর্বক্ষেত্রে এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। দুর্নীতি করলে কোন না কোন সময় বিপদে পড়তে হবে- রাষ্ট্র ও সমাজে যদি এ বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করা যায়, তাহলে শুধু সরকারি কর্মকর্তা নয়, সমাজের যে কেউ দুর্নীতি করতে সাহস করবেন না। তখন সমাজ ধীরে ধীরে দুর্নীতিমুক্ত হবে বলে মনে করি। এ জন্য দীর্ঘকাল ধরে একটি ভাল সরকারের ক্ষমতায় থাকা দরকার।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বড় ভাইয়ের হাতুড়ির আঘাতে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু
পাবনার ঈশ্বরদীতে বড় ভাই মনিরুল ইসলাম সরদারের হাতুড়ির আঘাতে ছোট ভাই জিপু সরদারের নিহতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের লক্ষীকুন্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একদিন পরও এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি।
নিহত জিপু সরদার (৩০) ও আহত মনিরুল ইসলাম সরদার (৩৮) ওই গ্রামের রিকাত আলী সরদারের দুই ছেলে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ এ ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পারিবারিক বিভিন্ন বিরোধ, বাড়ির সীমানা ও জমিজমা নিয়ে প্রায়ই দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লাগতো। আগের ঝগড়ার জের ধরে বৃহস্পতিবার তাদের মধ্যে আবার ঝগড়া বাধে। ঝগড়া থেকে মারামারির এক পর্যায়ে বড় ভাই মনিরুলকে আঘাত করে জিপু, পরে জিপুর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে মনিরুল। এতে দুজনই গুরুতর আহত হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় দুই ভাইকে একই অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহীতে নেওয়ার পথে জিপু মারা যায়।
আহত বড় ভাই মনিরুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত ও আহত দুই ভাইয়ের বাবা রিকাত আলী সরদার বলেন, দুজনই আমার সন্তান। দুজনের মধ্যে আগে থেকেই বনিবনা ছিল না। কিন্তু এভাবে একজন আরেক জনকে হত্যা করবে তা আমি মেনে নিতে পারছি না। আমি কী করবো তাও ভেবে পাচ্ছি না। এদিকে আহত বড় ভাই মনিরুল ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকাকালে তার ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত জিপুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম করার পর মরদেহ দাফন করার অনুমতি দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি বলে নিশ্চিত করে ওসি বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।