সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে ‘চট্টলদরদি’ নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের তেমন কোনো অভিযোগ ছিল না। কিন্তু তাঁর ছেলে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ৪১টি হিসাবে ১১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা জমা এবং ৯৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা উত্তোলনের তথ্য পায় দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করেছে দুদক। মামলার এজাহারে সন্দেহজনক এ লেনদেনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক কমলেশ মণ্ডল মামলাটি দায়ের করেন।
যদিও নওফেল তাঁর আয়কর নথিতে ৫ কোটি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার ৮১০ টাকার স্থাবর সম্পদ ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। এর মধ্যে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ৬১৮ টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়নি। তাঁর স্ত্রী ইমার বিরুদ্ধে ৮৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকার সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
মেয়র রেজাউল ও কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ: মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা এম রেজাউল করিম চৌধুরী সহজ-সরল হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু মেয়র হওয়ার পর সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ফাইল থেকে ৫ শতাংশ হারে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠে তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও তিনি চসিকে কোন অনিয়ম–দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে বারবার দাবি করেছেন। কিন্তু দুদক তার বিরুদ্ধে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছেন। তার বিরুদ্ধে ওয়াকফ সম্পত্তির খাস কালেকশনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে। দুদক তার বিদেশ যাত্রা ঠেকাতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছে।
অপর তিন কাউন্সিলরের মধ্যে জিয়াউল হক সুমন চট্টগ্রাম বন্দর ও ইপিজেড এলাকায় টেন্ডারবাজি, ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও কালোবাজারি করে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে অভিযোগ। কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে রেলওয়ের জায়গা দখল করে বাণিজ্য, টেন্ডারবাজিসহ দুর্নীতির মাধ্যমে কোটিপতি বনে যাওয়া এবং কাউন্সিলর আবুল ফজল কবির আহমেদ মানিকের বিরুদ্ধে সরকারি পাহাড় বিক্রি করা, চসিকের অর্থ আত্মসাতসহ না অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে ভারত নিয়ে চিন্তা নেই
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটা আজকের জন্য শুধুই ভারত–পাকিস্তানের। বিশ্ব ক্রিকেটের দৃষ্টি আজ থাকবে কেবলই দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ম্যাচটার দিকে। রাজনৈতিক বৈরিতায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশী দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক এমনিতেই অম্লাত্মক। ভারত নিজেদের ম্যাচগুলো পাকিস্তানে খেলছে না বলে এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তার ঝাঁজ আরও বাড়িয়েছে। শুধু ভারতের কারণেই টুর্নামেন্টটা হচ্ছে দুই দেশে। যদিও ভারত নিজেরা খেলছে শুধু দুবাইয়ে।
তবে যদি বলা হয়, খোদ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তানের দৃষ্টিই আজ পুরোপুরি দুবাইয়ের দিকে নেই, খুব বেশি ভুল বলা হবে না বোধহয়। অনেক বছর ধরেই পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানে দেশটির রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবার একটাই চিন্তা—অঘটন এড়িয়ে খেলাটা যেন ঠিকঠাকভাবে হয়, নিরাপদে থাকতে পারে অতিথি দলগুলো। দুবাইয়ের ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের চেয়েও তাই তাদের বড় চিন্তা পাকিস্তানে থাকা দলগুলোর নিরাপত্তা ও সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করা।
পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক দলগুলোর নিরাপত্তা শঙ্কা অনেক আগে থেকেই ছিল। সেটি আরও বেড়ে যায় ২০০৯ সালের মার্চে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার পর। ওই ঘটনায় পাঁচ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দূরে সরে ছিল পাকিস্তান থেকে। ২০১৫ সাল থেকে আবার বিদেশি দলগুলো দেশটিতে আসতে শুরু করে এবং তখন থেকে এই দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানেই সফরকারী দলগুলোর সবার আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার শর্ত জুড়ে দেওয়া।
আরও পড়ুন‘পাকিস্তান যদি ভারতকে হারায়, সেটা হবে অঘটন’১০ ঘণ্টা আগেঅতিথিদের স্বস্তি দিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সে আয়োজনে ত্রুটি রাখে না কখনো। তা এতটাই যে অনেক সময় বাড়তি এ নিরাপত্তাব্যবস্থা কিছু সম্পূরক প্রশ্নও তুলে দেয়। যেখানে সেনা, পুলিশ আর ভারী অস্ত্র দিয়ে ক্রিকেটকে সুরক্ষিত রাখতে হয়, সেখানে খেলা হওয়ার দরকার কী?
এটা তো কোনো খেলার জন্যই স্বাভাবিক পরিস্থিতি হতে পারে না! হোটেল আর মাঠবন্দী জীবন কি একধরণের মানসিক চাপও তৈরি করে না ক্রিকেটারদের ওপর? কাল ইসলামাবাদে পিসিবি–সংশ্লিষ্ট একজনকে প্রশ্নটা করা হলে অবশ্য তিনি পাল্টা যুক্তি দিলেন, ‘বিদেশি দলগুলো চায় বলেই তো তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। এটা না হলে তারাই পাকিস্তানে আসবে না খেলতে।’
দুবাইয়ে কাল অনুশীলনে ভারতের বিরাট কোহলি