বান্দরবানের লামার অপহরণ চক্রের চারজন গ্রেপ্তার, আদালতে স্বীকারোক্তি দিলেন একজন
Published: 22nd, February 2025 GMT
বান্দরবানের লামায় অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। রাবারবাগানের ২৬ শ্রমিক অপহরণ ও মুক্তিপণ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। জবানবন্দি দেওয়া ব্যক্তির নাম শিমন ত্রিপুরা। তিনি আজ শনিবার বান্দরবানের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম জানিয়েছেন।
জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য লামা ও বান্দরবান সদর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে গত বৃহস্পতিবার চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন থানচি উপজেলার রেমাক্রির হালিরামপাড়ার পিতরাম ত্রিপুরার ছেলে শিমন ত্রিপুরা, রোয়াংছড়ি উপজেলার সাজু ত্রিপুরার দুই ছেলে জ্যাকসন ত্রিপুরা ও প্রশান্ত ত্রিপুরা এবং লামার গজালিয়ার গতিরামপাড়ার খবিচন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে জয়ন্ত ত্রিপুরা। তাঁরা ১৬ ফেব্রুয়ারি লামা ফাঁসিয়াখালীর মুরুংঝিরির ছয়টি রাবারবাগান থেকে ২৬ শ্রমিককে অপহরণ করেন। দুই দিন পর ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
চারজনকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ব্যবহৃত সিম, সাতটি মুঠোফোন, দুটি মোটরসাইকেল, দুটি টর্চলাইট পাওয়া যায় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল করিম জানিয়েছেন, এই অপহরণকারী চক্র চলতি বছরের শুরু থেকে লামায় অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে। তাঁদের দলে ১৪ থেকে ১৬ জন সদস্য রয়েছেন। গ্রেপ্তার শিমন ত্রিপুরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে স্বীকার করে বলেছেন, তাঁরা মুরুংঝিরি থেকে ২৬ শ্রমিক ছাড়াও সরই ইউনিয়নে গত ৪ জানুয়ারি তামাকখেতের একজন ও ১৬ জানুয়ারি সাতজন শ্রমিককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছেন। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে অপহৃত স্কুলছাত্রী ২ মাস পর উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২
লক্ষ্মীপুরে অপহরণের প্রায় দুই মাস পর ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে (১২) উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মো. শাওন ও রাব্বিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। পরে তাদের লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায় সদর মডেল থানা পুলিশ।
বুধবার (২৬ মার্চ) বিকেলে সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভিকটিমকে অভিযুক্তরা দুই মাস আগে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। র্যাবের সহযোগিতায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে ছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপহৃত ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের লক্ষ্মীপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার শাওন সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ গ্রামের চরভূতা গ্রামের মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে ও রাব্বি একই এলাকার মো. সবুজের ছেলে।
আরো পড়ুন:
টেকনাফে অটোরিকশা থামিয়ে অপহরণ চেষ্টা, আটক ৩
৮ পর্যটককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ, নারীসহ গ্রেপ্তার ৪
র্যাব ও থানা পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী ভবানীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও স্থানীয় চরভূতা গ্রামের বাসিন্দা। বিদ্যালয়ের আসা-যাওয়ার পথে শাওন প্রায়ই তাকে প্রেম নিবেদনসহ উত্যক্ত করতো। ঘটনাটি ছাত্রী তার মাকে জানায়। পরে তার মা ঘটনাটি শাওনের বাবা ও ফুফুকে জানিয়েছে। কিন্তু তারা বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয়। মেয়ে নাবালিকা হওয়ায় মা বিয়েতে রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২০ জানুয়ারি বিদ্যালয় যাওয়ার পথে জোর করে অপহরণ করে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় ১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শাওন ও রাব্বিসহ চার জনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। অপর অভিযুক্তরা হলেন, শাওনের বাবা মোসলেহ উদ্দিন ও ফুফু তাসলিমা বেগম।
অপহরণের ২ মাস ৫ দিন পর মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) র্যাব অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকার জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে অভিযুক্ত শাওন ও রাব্বিকে গ্রেপ্তার করে। পরে হাটহাজারীর কামালপাড়া এলাকা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য র্যাব অভিযুক্তদের সদর মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মিঠুন কুমার কুণ্ডু আসামিদের গ্রেপ্তার ও ভিকটিমকে উদ্ধারের বিষয়টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ জানান, ভূক্তভোগী ছাত্রীকে উদ্ধারের পর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে।
ঢাকা/লিটন/বকুল