ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তির অধীনে আরও ছয় জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। শর্ত মানলে বাকি সব জিম্মিকে একসঙ্গেই মুক্তি দিতে রাজি আছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।

আজ শনিবার মুক্তি পাওয়া ছয় জিম্মি হলেন এলিয়া কোহেন, ওমের শেম-তোভ, ওমের ওয়েনকার্ট, তাল শোহাম, আভেরা মেনজিসটু ও হিশাম আল-সাইয়েদ। তাঁদের মধ্যে আভেরা ও হিশাম বেসামরিক নাগরিক। এ দুজন প্রায় এক দশক ধরে গাজায় বন্দী ছিলেন। এই ছয় বন্দীর বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ৬২০ ফিলিস্তিনির মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।

গত ১৯ জানুয়ারি এই যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপের ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির সময় ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিচ্ছে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস। তবে ওই দিন শিরি বিবাসের দেহাবশেষের জায়গায় ভুল করে অন্য কারও দেহাবশেষ হস্তান্তর করা হয়েছিল। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরায়েল। অবশ্য পরদিন শিরি বিবাসের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মরদেহটি শিরি বিবাসের বলে নিশ্চিত করেছে তাঁর পরিবার।

এদিকে শর্ত মানলে এক ধাপে বাকি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে হামাস প্রস্তুত রয়েছে বলে সংগঠনটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ের সব ধাপ বাস্তবায়নে হামাসের আন্তরিকতার বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।

হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে একসঙ্গে সব বন্দিবিনিময়ের কাজটি সম্পন্ন করতে প্রস্তুত রয়েছে হামাস। বিনিময়ে টেকসই যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দীদের মুক্তির বিষয়ে দখলদারদের (ইসরায়েল) প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।

তবে বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতিতে যেতে আগ্রহী নন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বেশির ভাগ জীবিত জিম্মি মুক্তি পাওয়ায় গাজায় আবারও যুদ্ধ শুরু করতে সরকারের উগ্রপন্থী শরিকেরা তাঁর ওপর চাপ দিচ্ছে।

আরও পড়ুনআরও ছয় জিম্মিকে ফেরত দেবে গাজা, প্রস্তুত ইসরায়েল৯ ঘণ্টা আগে

দুই ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা

গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে বড় ধরনের অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেনারা হেবরন ও জেনিন এলাকায় দুই শিশুকে হত্যা করেছেন বলে গতকাল জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দুই শিশু হলো হেবরনের আয়মান নাসের আল-হায়মোনি (১২) আর জেনিনের রিমাস আল-আমোরি (১৩)।

হেবরনের দক্ষিণে আত্মীয়দের দেখতে যাওয়ার পথে আয়মানকে গুলি করে ইসরায়েলি বাহিনী। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিজেদের বাড়ির আঙিনায় দাঁড়িয়ে থাকা রিমাসের পেটে গুলি করা হয়। তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।

কয়েক সপ্তাহ ধরে পশ্চিম তীরের জেনিন, তুলকারেম ও তুবাস এলাকায় ‘আয়রন ওয়াল’ নামে বড় ধরনের অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা প্রায় ছয় দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার তেল আবিবের দুটি শহরতলিতে ডিপোতে থাকা তিনটি ফাঁকা বাসে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পরই পশ্চিম তীরে আরও বিস্তৃত আকারে অভিযান চালানোর জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুনইসরায়েলে বাসে বিস্ফোরণের পর পশ্চিম তীরে বড় অভিযানের নির্দেশ নেতানিয়াহুর২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল একসঙ গ

এছাড়াও পড়ুন:

ফল আমদানিতে শুল্ক কমানোর দাবি আমদানিকারকদের

তাজা ফল আমদানিতে শুল্ক হার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর কারণে ফলের ব্যবসা করা এখন কঠিন হয়ে গেছে। প্রতি চালানে আমদানিকারকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।

পুরান ঢাকার বাদামতলীতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগে দিনে এক ট্রাক ফল বিক্রি হতো। এখন এক ট্রাক ফল বিক্রিতে ৩–৪ দিন সময় লাগছে। গত ৯ জানুয়ারি আমদানি করা তাজা ফলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে সরকার। উচ্চ শুল্ক হারের কারণে দেশের বাজারে ফলের দাম বেড়েছে। সাধারণ ভোক্তাদের ওপর যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে এ বিষয়ে অংশীজনদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এফবিসিসিআই ও বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বর্তমান শুল্ক–কর কাঠামো ও ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরের ফল আমদানির চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, তাজা ফল আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। এর মধ্যে আপেল আমদানি কমেছে প্রায় ৫২ শতাংশ। একইভাবে মাল্টা ৭১ ও আঙুর আমদানি ২৯ শতাংশ কমেছে। উচ্চ শুল্কের কারণে একদিকে বৈধ পথে আমদানি কমছে অন্যদিকে অবৈধপথে আমদানি উৎসাহিত হতে পারে। তাতে ভোক্তা স্বার্থ শুধু ক্ষুণ্ন হবে না বরং ভবিষ্যতে আমদানি থেকে রাজস্ব আয়ও কমবে।

সংবাদ সম্মেলনে সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, দেশে ফল উৎপাদন হয় চাহিদার ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ। বাকি ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ফল বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। সাধারণত ব্যবসায়ীরা ব্যাংকঋণের মাধ্যমে ব্যবসা করেন। বর্তমানে ব্যাংকের সুদহারও বেশি। পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ডলারের দামও বাড়তি। এসব কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক ফল আমদানি হচ্ছে। এ অবস্থায় ফল আমদানি বাড়াতে শুল্ক–কর কমানোর দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুস, সদস্য নাজিম উদ্দীন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিআইএ’র নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেন যারা
  • ‘বই অতীতের সঙ্গে বর্তমান ও ভবিষ্যতের যোগসূত্র তৈরি করে’
  • বিয়ে করেছেন নার্গিস ফাখরি নাকি শুধুই ‍গুঞ্জন
  • মূল্যায়ন না পেলে কাজ করব না: ইয়াশ রোহান
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাইরে কর্মিসভা করবে ছাত্রদল
  • শহীদ মিনারে আগে ফুল দেওয়া নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের মারামারি
  • যে জেলায় একসঙ্গে বাস করেন ১৪ ভাষার মানুষ
  • শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শ্রদ্ধা
  • ফল আমদানিতে শুল্ক কমানোর দাবি আমদানিকারকদের