বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেয়া রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে সমাবেশ করেছে রূপগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপি। 

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) বিকালে পূর্বাচলের ৪নম্বর সেক্টর উপজেলার শিমুলিয়া এলাকায় জনতা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু। রূপগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান বাবুলের সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন- রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ বাছির উদ্দিন বাচ্চু, সহসভাপতি আলহাজ¦ আনোয়ার সাদাত সায়েম, আশরাফুল হক রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক বাকির হোসেন, ভুলতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্বাস উদ্দিন ভুঁইয়া, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ আব্দুল মতিন, কাঞ্চন পৌর বিএনপির সভাপতি আলহাজ¦ মজিবুর রহমান ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক মফিকুল ইসলাম খান, রূপগঞ্জ থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল ইসলাম প্রিন্স, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান ভুঁইয়া, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মামুন, বিএনপি নেতা নুরন্নবী, আব্দুল মজিদ সহ আরো অনেকে। 


সমাবেশে প্রধান অতিথি মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু বলেন, দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নাই। ইতোমধ্যে রাষ্ট্র কিভাবে সংস্কার হবে, কিভাবে উন্নয়নের রোল মডেল হবে তার ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো ঘোষণা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমরা তা জনগণের মাঝে পৌঁছে দেবো। জনগণের আস্থা পেতে কাজ করবো। প্রমাণ করতে হবে ধানের শীষ শান্তির প্রতীক। জনগণের নিরাপত্তা ও দেশের সমৃদ্ধি, প্রকৃত গণতন্ত্র আনতে ধানের শীষের বিকল্প নাই। 


তিনি আরো বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের ইছাপুরা এলাকায় শত শত কৃষকের জমি দখল করে বাউন্ডারী নির্মাণ করে সাবেক এমপি সন্ত্রাসীদের গডফাদার গাজী দখলে নিয়েছিল। তার ছেলে পাপ্পা গাজী সন্ত্রাসীদের মদদদাতা ছিল। এখন তারা কোথায়? কোথায় গেল তাদের দোসররা। সবগুলি এখন এলাকা ছাড়া, দেশ ছাড়া। আমরা ওইসব সন্ত্রাসীদের মতো হতে চাই না। জনগণের হারানো সম্পদ ফিরিয়ে দিতে কাজ করবো। রূপগঞ্জে যেনো আর কখনো বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এসে মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। রূপগঞ্জের মাটিতে কোনো সন্ত্রাসীর ঠাঁই নেই। দিপু ভুঁইয়া আরো বলেন, ১৩/এ ধারায় শেখ হাসিনা তার পরিবারের নামে, ফরিদপুরের ছাত্রলীগ সভাপতির নামে, তার সহযোগি সন্ত্রাসী, এমপি, মন্ত্রী ও আমলাদের নামে দেয়া হয়েছে পূর্বাচলে প্লট। পূর্বাচলের বাসিন্দা ১৭ শতাংশের বিপরীতে ৫ কাঠার প্লট দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০ বিঘা জমির মালিকও ৫ কাঠার প্লট পায়নি। ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলা-কামলারা। ওইসব সকল প্লট বাতিল করে ক্ষতিগ্রস্ত ও আদিবাসীদের নামে প্লট বরাদ্দের আহ্বান জানান। 


এর আগে অনুষ্ঠানে হাজার হাজার নেতাকর্মী দলে দলে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হন। পরে বিকাল ৪টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র স ন ব এনপ র র পগঞ জ র রহম ন জনগণ র আলহ জ

এছাড়াও পড়ুন:

আইনের হাত বনাম নিজের হাত  

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বিশেষত বাংলাদেশে গত ২৬ জুলাই-পরবর্তী আট মাসের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী। গণপিটুনি, স্থানীয়ভাবে বিচারকাজ পরিচালনা, মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে ব্যক্তিগত প্রতিশোধ গ্রহণ এসব অনিয়ন্ত্রিত প্রবণতা সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে এবং আইনশৃঙ্খলার ভিত্তি দুর্বল করে দিচ্ছে।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যকারিতা ও বিচারিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ব্যাহত হলে জনমনে অবিশ্বাস দানা বাঁধে, যা দীর্ঘ মেয়াদে রাষ্ট্রকে ভয়াবহ সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। জনগণ যখন ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারে না, তখন তারা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে উদ্বুদ্ধ হয়। এর ফলে সামাজিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হয় এবং অপরাধপ্রবণতা বাড়ে।

এ সমস্যা নিরসনে যথাযথ আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করা, বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে তার কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং মিথ্যা অভিযোগ ও গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। কার্যকর ও দায়িত্বশীল পদক্ষেপের মাধ্যমে একটি সুস্থ, ন্যায়ভিত্তিক ও স্থিতিশীল সমাজ গঠন সম্ভব।

অনেক সময় অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে ভুক্তভোগীদের দীর্ঘ সময় এবং অর্থ ব্যয় করতে হয়। অতীতে বহু অপরাধের বিচার হয়নি; প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে এবং অপরাধীরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব ব্যবহার করে অথবা আইন ও পুলিশি ব্যবস্থার দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে বিচার কার্যক্রম প্রভাবিত বা অসম্পূর্ণ করে তোলে। অনেক সময় পুলিশের গাফিলতি ও প্রশাসনিক দুর্নীতির কারণে অনেক অপরাধী বিচারের আওতার বাইরে থেকে যায়, যা জনগণের আইনের প্রতি আস্থা হ্রাস করে। অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত অভিযোগকারীরা ন্যায়বিচার পান না। বরং মিথ্যা অভিযোগকারীরা রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে সক্ষম হয়। আমরা দেখেছি, পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে জনগণ গণপিটুনির মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন করছে। এটি মূলত সমাজে ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া ও প্রশাসনের প্রতি মানুষের ক্ষোভের ইঙ্গিত দেয়। 

সাধারণ মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নেয়। তারা মনে করে, প্রশাসন বা পুলিশ তাদের কাজ সঠিকভাবে করছে না। ফলে তারা নিজেদের উদ্যোগে শাস্তি দিয়ে প্রশাসনকে শেখাতে চায়– কীভাবে ন্যায়বিচার করতে হয়। প্রশাসনকে বিচার শেখানোর উদ্দেশ্যে এটি করা হলেও যদি বারবার তা ঘটতে থাকে, তা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। এভাবে সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা কোনোভাবেই আইনি বা ন্যায্য পদ্ধতির অংশ নয়।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যকারিতা ও বিচারিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ব্যাহত হলে জনমনে অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়, যা দীর্ঘ মেয়াদে রাষ্ট্রকে ভয়াবহ সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। যখন জনগণ ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারে না, তখন তারা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে উদ্বুদ্ধ হয়। ফলে সামাজিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত হয় এবং অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

একটি সুস্থ সমাজ গঠনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন অপরিহার্য। জনগণের মধ্যে আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা রোধ এবং মিথ্যা অভিযোগকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সহজ হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি, দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা এবং আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে পারলে দেশ আরও নিরাপদ ও ন্যায়ভিত্তিক হবে। আইনের প্রতি মানুষের আস্থা ফেরানো এবং বিচার প্রক্রিয়া কার্যকর করার মধ্য দিয়েই একটি আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

উছমান গনি: শিক্ষক
    usmgoni@gmail.com

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কারের রোডম্যাপ চাই
  • এনসিপির কাছে প্রত্যাশা
  • বিদ্যমান সংবিধানের অধীনের সরকারকে বৈধ মনে করি না: ফরহাদ মজহার
  • সয়াবিন তেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি গণসংহতি আন্দোলনের
  • তারা যখন সংস্কারের ‘স’ উচ্চারণ করেনি, তখন খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০
  • তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি তখন খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন: বিএনপি
  • আইনের হাত বনাম নিজের হাত  
  • প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি বিএনপির, কী আছে বর্ণনায়
  • প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠিতে যা বলল বিএনপি
  • বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে দেশটির জনগণ: যুক্তরাষ্ট্র