মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনে বড় ধরনের রদবদল আনছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় শুক্রবার তিনি জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান বিমানবাহিনীর জেনারেল সি কিউ ব্রাউনকে বরখাস্ত করেন। সেই সঙ্গে তিনি আরও পাঁচজন অ্যাডমিরাল ও জেনারেল পদে পরিবর্তন আনছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এত দ্রুত সময়ে সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে এমন ব্যাপক পরিবর্তন নজিরবিহীন। ব্রাউনের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন সাবেক লে.
গতকাল শনিবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদে পরিবর্তনের খবরটি ট্রাম্প নিজেই তাঁর মালিকানার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা দিয়েছেন। কেইন হতে যাচ্ছেন অবসর ভেঙে সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদে যোগ দেওয়া প্রথম কোনো মার্কিন সেনা কর্মকর্তা। পেন্টাগন সূত্রে জানা যায়, মার্কিন নৌবাহিনীর শীর্ষ পদেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেখানে শীর্ষ পদে প্রথম নারী হিসেবে যোগ দিচ্ছেন অ্যাডমিরাল লিসা ফ্র্যানচেট্টি। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর অধস্তন বেশ কিছু পদে পরিবর্তন আনবেন বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে পেন্টাগনের বেসামরিক কর্মকর্তাদের পদে বড় পরিবর্তন এসেছে। এ প্রেক্ষাপটে মার্কিন সামরিক বাহিনীতে রদবদল নিয়ে ইতোমধ্যে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। অনেকের অভিযোগ, ট্রাম্প সামরিক বাহিনীকে রাজনীতিকরণের দিকে এগোচ্ছেন। ব্রাউন ছিলেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদে থাকা দ্বিতীয় কোনো কৃষ্ণাঙ্গ। চার বছর মেয়াদ শেষ করে ২০২৭ সালে তাঁর অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। রিপাবলিকান ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে ডেমোক্র্যাট সিনেটর জ্যাক রিড বলেন, পোশাকধারী কর্মকর্তাদের সরানো অনেকটা রাজনৈতিক আনুগত্যের পরীক্ষা। ম্যাসাচুসেটসের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি সেথ মাউন্টন বলেন, এটা সামরিক বাহিনীর রাজনীতিকরণ।
গত শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগন ৫ হাজার ৪০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয়। ঘোষণায় বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেডারেল কর্মী বাহিনী কাটছাঁট উদ্যোগের অংশ হিসেবে পেন্টাগন এসব কর্মীকে চাকরিচ্যুত করবে। পেন্টাগন বলছে, আগামী সপ্তাহে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী ৫০ হাজার লোকবল কমিয়ে ফেলার অংশ হিসেবে এটা করা হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এখানেই শেষ হবে না এ ছাঁটাই প্রক্রিয়া।
পেন্টাগনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের একজন দারিন সেলনিক বলেন, পেন্টাগন নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখবে। শেষ পর্যন্ত সাড়ে ৯ লাখ বেসামরিক শ্রমশক্তির ৫ থেকে ৮ শতাংশ কমিয়ে আনবে পেন্টাগন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো এফবিআই সংস্থাটির দেড় হাজার কর্মীকে ওয়াশিংটনের সদরদপ্তর থেকে সরিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বদলির ঘোষণা দিয়েছে। সরকারি হিসাবে, এফবিআইয়ের প্রতি চার কর্মীর একজন ওয়াশিংটনে কাজ করছেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও উপদেষ্টা ইলন মাস্কের সরকারি চাকরিজীবীদের এমন গণছাঁটাই ভালো চোখে দেখছেন না মার্কিনিরা। রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত এক জরিপে বেশির ভাগ মার্কিনি উদ্বেগ্ন প্রকাশ করেন, ট্রাম্প ও মাস্কের গণছাঁটাই সরকারি পরিষেবাগুলো ব্যাহত করতে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব হ ন র শ র ষ পদ
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিব–তামিম: দুজনার দুটি পথ আজ একই দিকে
সাকিব আল হাসান চেয়েছিলেন, এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে বিদায় বলবেন আন্তর্জাতিক ওয়ানডেকে। হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেই। তবে সে ইচ্ছাটা তিনি উহ্য রেখে দিয়েছিলেন। যা–ই হোক, সাকিবের চাওয়া পূরণ হচ্ছে না। যেমন পূরণ হয়নি তাঁর ঘরের মাঠে খেলে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ইচ্ছা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চেয়েছিল, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটা খেলুন তামিম ইকবাল। সেটাও হচ্ছে না। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণার আগে নির্বাচকেরা আলোচনায় বসেছিলেন তামিমের সঙ্গে। কিন্তু তামিমের ‘না’কে ‘হ্যাঁ’ করাতে পারেননি। এরপর তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণাই দিয়ে দেন তামিম।
আরও পড়ুনকোন দলের কেমন সম্ভাবনা, আগেই বা কী করেছে১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সাকিব–তামিম দুজনের কাছে তাই দুই রকমভাবে ধরা দিচ্ছে। সাকিবের জন্য এটা হতে পারে অতৃপ্তির অন্য নাম। যে রকম বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার তাঁর, বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের ক্রিকেটের মুখ হয়ে ওঠা সাকিব প্রশ্নাতীতভাবেই বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার। বড় কোনো আসর থেকে, অন্তত মাঠ থেকে ক্যারিয়ার শেষের ঘোষণা দেওয়াটা তাঁর প্রাপ্য। অথচ এমন একজনের শেষটাই হলো কিনা অপূর্ণতা দিয়ে!
বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাকিব–তামিম একসময় বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেও ক্যারিয়ারের শেষলগ্নে তাঁরা হয়ে উঠলেন বৈরিতার প্রতীক।অবশ্য শেষই–বা বলা কীভাবে? আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিদায়’ বলার সুযোগই তো পাননি সাকিব। সাত মাসের রাজনৈতিক পরিচয় বাংলাদেশের ক্রিকেটেই এখন ব্রাত্য করে দিয়েছে একসময়ের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে। সব মিলিয়ে এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটা সাকিবের জন্য হয়ে থাকবে না ছুঁতে পারা এক মাইলফলক।
তামিম বিদায় বললেও বাংলাদেশের জার্সিকে সাকিব আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানোর সুযোগ পাননি