জবির ভর্তি পরীক্ষা: সন্তানকে উৎসাহ দিতে এসেছেন অভিভাবকরাও
Published: 22nd, February 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষা চলাকালে তাদের অভিভাবকদের ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিন শিফটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরীক্ষার চলাকালে ক্যাম্পাসে বাইরে ভিক্টোরিয়া পার্ক ও ফটকগুলোতে অবস্থান নিয়েছেন অভিভাবকরা। কেউ পত্রিকা পড়ছেন, কেউ গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন, কেউবা আবার সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থনায়। অনেকের বাইর থেকে বোঝা না গেলেও সবাই আছেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। কারও মা-বাবা, কারও ভাই এসেছেন পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে। তাদের আশা একটা আশা, সন্তানের পরীক্ষাটা যেন ভালো হয়।
অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের (পরীক্ষার্থী) মানসিক সাপোর্ট দিতেই পরীক্ষা কেন্দ্র পর্যন্ত আসা এবং অপেক্ষা করা। তারা যাতে নিশ্চিন্তে পরীক্ষাটা দিতে পারে এবং পরীক্ষাটা যেন ভালো হয়। সবকিছু যেন ঠিকঠাক থাকে।
এক ভর্তিচ্ছুর অভিভাবক উত্তরা থেকে এসেছেন। মেয়েকে পরীক্ষার হলে দিয়ে দোয়া-দরুদ পড়ছিলেন। তিনি বলেন, “আমার মেয়ের প্রস্তুতি ভালো। তবুও একটু টেনশন কাজ করছে। মেয়েটা যেন ভয় না পায়, ঠিকভাবে যেন পরীক্ষা শেষ করতে পারে, সেজন্য দোয়া করছি।”
অস্থিরতায় সময় পার করতে দেখা যায় এক পরীক্ষার্থীর বাবা। তিনি বলেন, “ছেলে পরীক্ষা দিচ্ছে। কিন্তু আমার খুবই অস্থির লাগছে। যতক্ষণ বের না হবে, ততক্ষণ টেনশনে থাকব। দোয়া করি, তার যেন পরীক্ষা ভালো হয়।”
নারিন্দা থেকে আসা তারেক রহমান নামের আরেক অভিভাবক বলেন, “শেষ মূহুর্তের ভালো প্রস্তুতি নিয়ে মেয়ের সঙ্গে তার ভর্তি পরীক্ষায় এসেছি। আমার মেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে দেশ ও জাতির মান মর্যাদা রক্ষা করবে বলে বিশ্বাস করি।”
ভিক্টোরিয়া পার্কে নরসিংদী থেকে আসা এক পরীক্ষার্থীর মা বলেন, “যতক্ষণ পরীক্ষা শেষ না হবে, ততক্ষণ বাসায় স্থির থাকতে পারব না, এজন্যই তার সঙ্গে এসেছি। শিক্ষা জীবনের যে কয়েকটি বড় ধাপ রয়েছে, তার একটিতে আজ ছেলে অংশগ্রহণ করেছে। একটু টেনশন তো হচ্ছেই। বসে বসে তার জন্য দোয়া পড়ছি।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি
তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই।
শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।
ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে।
কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।