বকেয়া বেতনের দাবিতে সাভারে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
Published: 22nd, February 2025 GMT
বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায় দুটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
আজ শনিবার সকালে হেমায়েতপুর-সিংগাইর আঞ্চলিক সড়কে অবস্থান নেন বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিকরা এবং বিশমাইল-জিবারো সড়ক অবরোধ করে রাখেন ছেইন অ্যাপারেলসের শ্রমিকরা।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, আজ শনিবার সকালে সাভারের হেমায়েতপুর-সিংঙ্গাইর আঞ্চলিক সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিকরা। দুপুর ১টার দিকে শিল্প পলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে দেন।
বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেডের বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা বলেন, আমাদের কারখানায় প্রায় ১১ শ’ শ্রমিকের গত ২ মাসের বেতন এবং ওভারটাইমের টাকা বকেয়া পড়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ বার বার বেতন ও ওভারটাইম পরিশোধের প্রতিশ্রুতি, তারিখ দিয়েও কথা রাখেনি। এ অবস্থায় আমরা বেতন না পেয়ে দোকানে বাকি করে চলছি। অনেকেই বাড়ি ভাড়া দিতে পারিনি। কারও কারও পরিবারের সদস্যদের টাকার অভাবে চিকিৎসা থেমে যাচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে বার বার বলার পরও কোনো সমাধান করেনি। তাই বাধ্য হয়ে বকেয়া পাওনা বুঝে পেতে সড়ক অবস্থান করছি।
অন্যদিকে ছেইন অ্যাপারেলল কারখানার শ্রমিকরা বলেন, আমাদের কারখানার শ্রমিকদের প্রতি মাসের বেতন ১০ তারিখের ভেতরে পরিশোধ করার কথা থাকলেও মালিকপক্ষ এখনও জানুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধ করেনি। গত কয়েকদিন আগে কারখানাটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কারখানা কবে খুলবে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্তও জানাচ্ছে না। তাই আমাদের পাওনা টাকা পরিশোধসহ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সড়ক নামতে বাধ্য হয়েছি।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সাভারের হেমায়েতপুরের বসুন্ধরা গার্মেন্টস ও আশুলিয়ায় ছেইন অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে সড়কে অবরোধ করেছিলো। আমরা উভয় কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। ছেইন অ্যাপারেলস কারখানাটিতে সাধারণ ছুটি চলছে এবং তাদের কর্তৃপক্ষ মার্চের ৩ তারিখে বকেয়া পরিশোধের কথা জানিয়েছে এবং হেমায়েতপুরে বসুন্ধরা পোশাক কারখানার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ইন অ য প র গ র ম ন টস পর শ ধ র অবস থ অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি
তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই।
শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।
ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে।
কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।