বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা কমরেড খালেকুজ্জামান বলেছেন, দেশে আজ এক ক্রান্তিকাল চলছে। মানুষ স্বৈরাচারী-ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে ও জীবন দিয়েছে গণতান্ত্রিক শাসনের জন্য। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম জনগণকে হতাশ করেছে। তিনি বলেন, আগে ছিল শেখ হাসিনার অধীনে নিয়ন্ত্রিত স্বৈরাচার, এখন অনিয়ন্ত্রিত স্বৈরাচার। 

আজ শনিবার বিকেলে মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সুলেমান হলে সিলেট জেলা বাসদের কর্মীসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাসদ জেলা আহ্বায়ক আবু জাফরের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব প্রণব জ্যোতি পালের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কমরেড নিখিল দাস, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.

আবুল কাশেম, জেলা বাসদের সাবেক আহ্বায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়, মৌলভীবাজার জেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মইনুর রহমান মগনু, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আহ্বায়ক নাজিকুল ইসলাম রানা, শ্রমিক নেতা মুখলেছুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের আহ্বায়ক মাসুমা খানম, বাংলাদেশ চা শ্রমিক বীরেণ সিং, সমাজতান্ত্রিক নির্মাণ শ্রমিক ফ্রন্ট নেতা জিতু সেন, ব্যাটারিচালিত যানবাহন সংগ্রাম পরিষদের সহ-সভাপতি মনজুর আহমদ। 

সভা শেষে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো, মব কালচার বন্ধ, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাইসেন্স প্রদান, চা শ্রমিকদের দৈনিক নগদ মজুরি ৬ শ’ টাকা ঘোষণা করার দাবিতে গণমিছিল বের করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কমর ড

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি

তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই। 

শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।  

কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।

বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন। 

নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।

ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।

ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে। 

কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে। 

তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়। 

বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ