যুক্তরাজ্যে আইক্লাউডের এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন বন্ধ করল অ্যাপল
Published: 22nd, February 2025 GMT
যুক্তরাজ্য সরকারের চাপে আইক্লাউডের এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাপল। গ্রাহকদের এনক্রিপ্ট করা ক্লাউড ডেটায় প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য দেশটির সরকার অ্যাপলকে একটি ‘ব্যাকডোর’ তৈরির নির্দেশ দেয়। এর জের ধরে শুক্রবার থেকে যুক্তরাজ্যের নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য আইক্লাউডের ‘অ্যাডভান্সড ডেটা প্রোটেকশন’ (এডিপি) সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে চালু করা এডিপি সুবিধাটি আইক্লাউড তথ্যকে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের মাধ্যমে সুরক্ষা প্রদান করে। এর ফলে তথ্য–উপাত্ত কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারী তাঁর নির্ভরযোগ্য যন্ত্র থেকে ডিক্রিপ্ট করতে পারেন। তবে যুক্তরাজ্যের সরকার অ্যাপলকে একটি ব্যাকডোর তৈরির আদেশ দেয়, যা যেকোনো অ্যাপল ব্যবহারকারীর এনক্রিপ্ট করা ডেটায় প্রবেশের সুযোগ করে দেবে।
অ্যাপলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান ডেটা লিক এবং গ্রাহকের গোপনীয়তার প্রতি নানা হুমকির মধ্যে যুক্তরাজ্যের গ্রাহকদের জন্য এডিপি সুবিধার সুরক্ষা দিতে না পারায় আমরা অত্যন্ত হতাশ। ক্লাউড স্টোরেজের নিরাপত্তা বাড়াতে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের গুরুত্ব এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ব্যক্তিগত ডেটার সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অ্যাপল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আশা করি ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যে এডিপি সেবা পুনরায় চালু করতে পারব।’
অ্যাপলের ‘গভর্নমেন্ট ইনফরমেশন রিকোয়েস্টস’ পেজে উল্লেখ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি কখনোই কোনো পণ্য বা সেবায় ব্যাকডোর বা মাস্টার কি তৈরি করেনি, কোনো সরকারকে সরাসরি অ্যাপল সার্ভারে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও দেবে না। অবশ্য এডিপি ব্যবহারকারীদের জন্য সেবাটি এখনই বন্ধ করা হচ্ছে না। তবে আইক্লাউড অ্যাকাউন্ট চালু রাখতে হলে ভবিষ্যতে তাদের এডিপি সুবিধা বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে শিগগিরই অ্যাপল প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
তবে অ্যাপলের আইমেসেজ, ফেসটাইম, স্বাস্থ্য ও আইক্লাউড কিচেইন ডেটা যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বজুড়ে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের সুরক্ষায় থাকবে।
অ্যাপল জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য ছাড়া বিশ্বব্যাপী অন্যান্য গ্রাহকেরা এডিপি সুবিধা চালু রাখতে পারবেন এবং তাঁদের এনক্রিপ্ট করা আইক্লাউড ডেটা কেবল নির্ভরযোগ্য ডিভাইসেই ডিক্রিপ্ট করা যাবে।
সূত্র: ব্লিপিংকম্পিউটার ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক র প ট কর র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি
তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই।
শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।
ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে।
কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।