পাকিস্তানে নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকারী এক এনজিওপ্রধানের বাসা সিলগালা
Published: 22nd, February 2025 GMT
পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকারী একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রধানের বাসা সিলগালা করে দিয়েছে দেশটির কৃর্তপক্ষ। দেশটিতে গত বছর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করেছিল ‘পট্টন’ নামের ওই এনজিও। এনজিওটির প্রধান সারোয়ার বারী।
সারোয়ার বারী নিজেই তাঁর বাসা সিলগালা করার কথা আজ শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন। বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে এমনটা করা হয়েছে।
পাকিস্তানের জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ইমরান খানকে কারাগারে রেখেই ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর প্রতি নমনীয় হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন দলের একটি জোট ক্ষমতায় আসে।
চলতি মাসে পট্টন নির্বাচন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরে এক বিবৃতিতে নির্বাচনে জালিয়াতি ও কারসাজির মাধ্যমে ‘নজিরবিহীন কারচুপির’ অভিযোগ আনে এনজিওটি।
পট্টনের প্রধান সারোয়ার বারী বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। পাকিস্তানে তাঁর বাসাটি রাজধানী ইসলামাবাদে। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘এটা নিশ্চয়ই ওই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে করা হয়েছে।’
সারোয়ার বারীর স্ত্রী আলিয়া বানু বলেন, বাসাটি সিলগালা করার সময় পুলিশ কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট ও ইসলামাবাদ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ ২০ জনের বেশি মানুষের একটি দল এসেছিল।
এএফপি জানায়, একজন বিচারক সারোয়ার বারীর বাসাটি সিলগালা করার আদেশ দেন। আদেশের একটি কপি এএফপি পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে পট্টনের নিবন্ধন ২০১৯ সালে বাতিল করা হয়েছে। এর পর থেকে এনজিওটি অবৈধভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছিল।
সারোয়ার বারী জানান, তাঁর বাসায় প্রায় সময় পট্টনের বৈঠক হয়। এমনকি চিঠি পাঠানোর জন্য তাঁর বাসার ঠিকানা ব্যবহার করতেন। তবে এটা যে মূলত তাঁর বাসস্থানই, তা বেশ জোরের সঙ্গেই দাবি করেন।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বিবৃতিতে সারোয়ার বারীর বাসা সিলগালা করে দেওয়ার খবরটি ‘ভয়ের’ বলে উল্লেখ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নাগরিকদের কৌশলে এভাবে ভয় দেখানো অগ্রহণযোগ্য। বিষয়টি শিগগিরই আদালতে ওঠা দরকার।’
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি তদন্ত পরিচালনার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল পট্টন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনজ ও
এছাড়াও পড়ুন:
তুরস্কে কারাবন্দী ইমামোগলু বিরোধীদলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মনোনীত
তুরস্কের বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) কারাবন্দী ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে।
সিএইচপির একজন মুখপাত্র সোমবার এ ঘোষণা দেন। খবর: এএফপি
২০২৮ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এরদোয়ান সরকারের কঠোর ধরপাকড়ের মধ্যেই ইমামোগলুকে প্রার্থী ঘোষণা করল সিএইচপি।
সিএইচপির এই সিদ্ধান্তের পরপরই দেশজুড়ে বিক্ষোভের মাত্রা আরও বেড়েছে। এরদোয়ান প্রশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে রাজধানী আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত পাঁচ দিনে ১ হাজার ১৩৩ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে বার্তা সংস্থা এএফপির একজন ফটোসাংবাদিকসহ ১০ জন সাংবাদিকও রয়েছেন।
রোববার দলীয় প্রাইমারিতে ভোটাভুটি আয়োজন করে সিএইচপি। ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এই ভোটে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের সুযোগ দেয় দলটি। এতে প্রায় দেড় কোটি মানুষ ভোট দেন, যাদের মধ্যে ১ কোটি ৩২ লাখের বেশি দলটির সদস্য নন। ভোটে ইমামোগলুই একমাত্র প্রার্থী ছিলেন।
দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহযোগিতার অভিযোগে ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রোববার আদালত তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। আদালতের এই রায়ের পর ইমামোগলুকে ইস্তাম্বুলের মেয়র পদ থেকেও অপসারণ করা হয়েছে।
কারাগারে পাঠানোর আগে আইনজীবীদের মাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় ইমামোগলু বলেন, ‘আমি একটি সাদা জামা পরেছি, যে জামায় তোমরা দাগ লাগাতে পারবে না। আমার একটি শক্তিশালী হাত রয়েছে, যা তোমরা মচকাতে পারবে না। আমি সামান্যতমও মাথা নত করব না। এই লড়াইয়ে আমি জয়ী হব।’
এদিকে ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে ফ্রান্স। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ইমামোগলুকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা গণতন্ত্রের ওপর মারাত্মক আঘাত।’
বিরোধীদল সিএইচপি এই গ্রেপ্তারকে ‘রাজনৈতিক ক্যু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। দলের নেতারা জানিয়েছেন, ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।