ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যা নিয়ে সেমিনার আয়োজিত হয়েছে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বলে জানানো হয়।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে আয়োজিত ‘অ্যাড্রেসিং সাইকোলজি প্রবলেম এমাং আন্ডার গ্রাজুয়েট অ্যান্ড পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টস আফটার জুলাই-আগস্ট মুভমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। 

সেন্টার ফর রিসার্চ ইন মাল্টিডিসিপ্লিন (সিআরএম), ঢাকা ইউনিভার্সিটি রিসার্চ সোসাইটি (ডিইউআরএস) এবং সেন্টার ফর সাইকোলজিক্যাল হেলথ (সিপিএইচ) এর যৌথ উদ্যোগে সেমিনারটি আয়োজিত হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড.

মেহ্জাবীন হকের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ।

এ সময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, যুক্তরাজ্যের সেন্টার ফর সাইকোলজিক্যাল হেলথ এর পরিচালক নাজমুল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম আবুল কালাম আজাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ, সাইকোলজি অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমির পরিচালক মো. ওমর ফারুক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডা প্রবাসী মনোবিজ্ঞানী সাদিয়া শারমিন উর্মি এবং সিআরএম এর প্রতিষ্ঠাতা মাহাদী-উল-মোর্শেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইং এর সাধারণ সম্পাদক নিশিতা জামান নিহা।

মূল প্রবন্ধে সাদিয়া শারমিন উর্মি ও মাহাদী-উল-মোর্শেদ জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। যেসব শিক্ষার্থী অন্তত পাঁচদিন আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তারা এক ধরনের মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছেন।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী অঞ্চলে ১৭-১৮ বছর বয়সী ৩৭৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকগণ।    

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ গবেষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বর্তমানে ব্যক্তি, পরিবারসহ সমাজের সর্বত্র অস্থিরতা বিরাজ করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় চোখের সামনে রক্ত ও হতাহতের দৃশ্য দেখে মানুষের মানসিক চাপ ও অস্থিরতা বেড়ে গেছে। মানুষের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা কাজ করছে।”

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের এ ট্রমা কাটাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শীঘ্রই সামাজিক অস্থিরতা দূর করে একটি সুস্থ সমাজ গঠন সম্ভব হবে।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যায় নেই আ’লীগের এমন নেতা পাবেন ক্ষমা!

জুলাই গণহত্যা, গুম, খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত নন, এমন আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষমা চাইলে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ পেতে পারেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর প্রস্তাবে এ রকম চিন্তাভাবনাই করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটানো গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারাও অপরাধী নন, এমন নেতাকে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দিতে ‘রিডিম এবং রিকনসিলিয়েশন’-এ রাজি। তবে আপত্তি রয়েছে বিএনপির তরফ থেকে। দলটি ছাত্রনেতাদের এ চাওয়াকে নতুন দল গঠনের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখছে। জামায়াতের ভাষ্য, আগে দায়ীদের চিহ্নিত ও বিচার করা হোক; তারপর ক্ষমার চিন্তা হতে পারে। 

একাধিক রাজনৈতিক সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, ক্ষমার সুযোগ দিয়ে আওয়ামী লীগকে স্থায়ীভাবে বিভক্ত করার চেষ্টা রয়েছে। যারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে থাকবে, তারা হবে একটি দল। যারা ১৫ বছরের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইবে, তারা হবে আরেকটি দল। ক্ষমা চাওয়া অংশকে রাজনীতিতে বাধা দেওয়া হবে না। তাদের আওয়ামী লীগের মূলধারা হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া হবে। এই অংশের নির্বাচনে অংশ নিতেও বাধা থাকবে না। বিভক্ত আওয়ামী লীগ অন্যদের জন্য যেমন হুমকি হতে পারবে না, তেমনি রাজনীতিতেও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পাবে না। 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে মানবাধিকারবিরোধী অপরাধের তদন্ত প্রক্রিয়ায় যুক্ত একটি সূত্র সমকালকে নিশ্চিত করেছে, আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা দোষ স্বীকার করে নিষ্কৃতি পেতে চান। তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষী হতে রাজি। বিদেশ পালিয়ে যাওয়া কয়েকজন নেতা ক্ষমা প্রার্থনার বিনিময়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ পেলে দেশে ফিরতে চান। 

শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনে ২ হাজার ২৬২টি বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ রয়েছে। গুম-সংক্রান্ত কমিশনে ১ হাজার ৬০০-এর বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। সারাদেশে অন্তত ২২টি গোপন বন্দিশালার খোঁজ পেয়েছে কমিশন। 

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুসন্ধান বলছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ শিশু। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের ‘টার্গেট কিলিং’ করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী অস্ত্র হাতে ছিল। এগুলোকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে জাতিসংঘ। শেখ হাসিনাসহ জ্যেষ্ঠ নেতাকর্মী ও কর্মকর্তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। 

দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনের অবসানের পর জাতীয় ঐক্যের জন্য নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটুর নেতৃত্বে ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা। এ কমিশন ১৯৬০ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত করে প্রায় ৭ হাজার রাজনৈতিক হত্যার তথ্য পায়। বর্ণবাদী শাসনের নিরাপত্তা পুলিশের হেফাজতে ৭৩ জনের মৃত্যু, ১৯ হাজার ৫০টির বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আসে কমিশনে। ক্ষমা চেয়ে আবেদন করা ব্যক্তির মাধ্যমে ২ হাজার ৯৭৫ জন ক্ষতিগ্রস্তের তথ্য আসে। 

অপরাধের পূর্ণাঙ্গ সত্য এবং অনুশোচনা প্রকাশের কারণে কমিশন ৮৪৯ জনকে ক্ষমা করে। শুধু বর্ণবাদী শাসনের সময় কৃষ্ণাঙ্গদের দমনপীড়নে জড়িত শ্বেতাঙ্গরা নয়, সেই সময়ে প্রতিরোধ লড়াইয়ে কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল, সেগুলোও কমিশনে আসে। অনুশোচনা প্রকাশের মাধ্যমে তারা ক্ষমা পায়। 

শেখ হাসিনার শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত নন, আওয়ামী লীগের এমন নেতাকর্মী ক্ষমা চাইলে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সমকালকে বলেন, ‘বিভিন্ন মহল থেকে এসেছে এ ধরনের অনেক প্রস্তাব। বিশেষ করে বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা থেকে এসেছে। এর সম্ভাব্যতা, কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে প্রাথমিক চিন্তাভাবনা রয়েছে। এখনও খুব কংক্রিট সিদ্ধান্ত হয়নি।’ 

অন্তর্বর্তী সরকারের সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, একাধিক উপদেষ্টা এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলেচনায় আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবি তোলেন। এর আগে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে না। সরকারের পক্ষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম একাধিকবার জানান, জুলাই গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজনীতি এবং নির্বাচনে ফিরতে পারবে না আওয়ামী লীগ। 

ছাত্রনেতারা প্রায়ই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন। তবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মনোভাব ভিন্ন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে শেখ হাসিনাকে মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করার কথা বলেছে। একাধিক সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এ মনোভাবের কারণে ছাত্রনেতারাও আওয়ামী লীগের যারা অপরাধী নন, তাদের রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দিতে রাজি। 

প্রতিবেদন তৈরিতে সম্পৃক্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের জ্যেষ্ঠ গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার সমকালকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধের দাবি উদ্বেগের। এতে বাংলাদেশিরা হয়তো আরেকটি নির্বাচন পেতে যাচ্ছে, যেখানে তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে না।’ নিষিদ্ধের বদলে কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে– প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সঠিক উপায়ে তদন্ত করে অভিযোগ গঠন করে বিচার করা।’ 

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গত মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগ করেছেন, কিন্তু কোনো অন্যায় এবং গণহত্যা কিংবা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নন, তারা ক্ষমা চেয়ে আবার মূলধারায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারেন।’ 

একই দিনে একই অভিমত জানান ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নিবন্ধন এবং গণহত্যায় দায়ীদের নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছি। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ, খুনি শেখ হাসিনা এবং নৌকাকে ভোট দেওয়া ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষ আলাদা।’

অপরাধী নয়, এমন আওয়ামী লীগ নেতাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ দিয়ে ছাত্রনেতারা নিজেদের দল গঠন করতে চাইছেন– বিএনপির এ সমালোচনার পর গতকাল বুধবার আগের দিনের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন আসিফ মাহমুদ। তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগের কথা বলা হয়নি। বিচারের আগে এ প্রশ্ন অবান্তর। অনেকেই বলছেন, অন্যায় না করলে ক্ষমা চাইবে কেন? অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে যে কোনোভাবে জড়িত থাকার কারণে। সুবিধাভোগী হিসেবেই ক্ষমা চাইতে হবে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে স্বচ্ছ, উন্মুক্তভাবে এবং ধাপে ধাপে। ট্রুথ কমিশন কিংবা বিশ্বের যেসব নজির রয়েছে তা অনুসরণ করে।’ এই বক্তব্যকে ব্যক্তিগত বলে আখ্যা দিয়েছেন উপদেষ্টা।

তবে বিএনপির একাধিক নেতার ভাষ্য, আওয়ামী লীগ নেতাদের ক্ষমা প্রার্থনার বিনিময়ে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে ছাত্রদের দল গঠনের সুবিধার জন্য। যাতে ছাত্ররা ক্ষমা চাওয়া ওই নেতাদের নিজ দলে ভেড়াতে পারেন। তবে প্রকাশ্যে এ বক্তব্য দিতে কোনো নেতা রাজি হননি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা যিনি আছেন তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্টদের লোকেরা যদি কেউ মাফ চেয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তাহলে তারা অংশ নিতে পারবেন। এর থেকে এটাই প্রমাণিত– তারা নিজেদের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের জায়গা দিতে চান। তাহলে কি আমরা মনে করব, তারা সরকারে থেকে তাদের দল গোছানোর জন্য বিভিন্ন রকম কৌশল নিচ্ছেন?’

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এই ভাষ্যকে নাকচ করেছেন। তিনি সমকালকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো সুবিধাভোগীকে নিয়ে ছাত্র-জনতার রাজনৈতিক দল গঠনের প্রশ্নই আসে না। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চব্বিশের অভ্যুত্থানের চেতনার বিরোধী; শহীদের রক্তের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, যারা অন্যায়, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেননি, শুধু সেসব আওয়ামী লীগ নেতা ক্ষমা চাইলে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ পেতে পারেন। দেশের নিরপরাধ নাগরিকের অধিকার হরণের পক্ষে নয় ছাত্র-জনতা।’ 

জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সমকালকে বলেন, ‘আগে সাড়ে ১৫ বছরের অপকর্ম, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যায় দায়ীদের চিহ্নিত এবং বিচার করা হোক। তারপর অন্য ভাবনা।’ 

একাধিক ছাত্রনেতা সমকালকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতকে কোণঠাসা করে রাখলেও রাজনৈতিক স্বার্থে টিকিয়ে রাখার যে ভুল করেছিল, এর পুনরাবৃত্তি করা যাবে না। কোণঠাসা ও ধরপাকড়ের শিকার জামায়াত অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ঐক্যবদ্ধ ছিল। আওয়ামী লীগ যাতে এ সুযোগ নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে অপকর্মের অভিযোগ নেই এমন নেতাদের সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে ক্ষমা চাওয়া অংশকে অবশ্যই শেখ হাসিনা এবং তাঁর অনুগতদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কার ও নির্বাচন দুটোই হতে হবে
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব সবার: মির্জা ফখরুল
  • চীনে মহান শহীদ দিবস পালিত
  • শূন্য থেকে পূর্ণ
  • ছাত্রদল কর্তৃক শিবির নেতার ওপর হামলা, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা ও প্রতিবাদ
  • ভাষা শহীদদের প্রতি ইউজিসি’র শ্রদ্ধা নিবেদন
  • ছাত্র ঐক্যে ফাটলের নেপথ্যে
  • মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখায় সিআরএম বুথ উদ্বোধন
  • গণহত্যায় নেই আ’লীগের এমন নেতা পাবেন ক্ষমা!