১৭ বছরের অব্যবস্থাপনা রাতারাতি ঠিক করা সম্ভব না: সাখাওয়াত হোসেন
Published: 22nd, February 2025 GMT
নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘১৭ বছরের জঞ্জাল, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, অরাজকতা রাতারাতি বা মাত্র ৭ মাসে দূর করা সম্ভব না। আমরা ইতোমধ্যে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আরও কিছু সমস্যার মুখোমুখী হচ্ছি। যেভাবে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ভাঙচুর করে সবকিছু ফেলে একজন সরকার পালিয়ে গেছে, সেটিকে টেনে তুলতে আমাদের একটু সময়তো লাগবে। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে ল’ অ্যান্ড অর্ডার ভালো হয়।
আজ শনিবার বিকেলে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র নিঝুমদ্বীপে ইজিআইএমএনএস শীর্ষক প্রকল্পের লাইট হাউজের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী রমজানকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে সবাইকে প্রশাসনকে সহযোগিতার আহবান জানিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, দ্রব্যমূল্য বর্তমানে অনেক নিয়ন্ত্রণে। রমজানে প্রচুর খেজুর, বুট, ছোলা বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা রমজান আসলে মনে করে, এটা হরিলুটের জায়গা। তারা এসময়টা একটা সিন্ডিকেট তৈরি করে। এ বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া আছে, তারা যেন বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়, এ বিষয়ে আপনারা সাধারণ মানুষ প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন।
পরে তিনি নিঝুমদ্বীপের স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় মানুষজন তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেন। নিঝুমদ্বীপ দেশের পর্যটনে ব্যপক ভূমিকা রাখতে পারে, মন্তব্য করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে ৭ দেশের কবি
তারা ভিন দেশের নাগরিক। কবিতা পাঠ করলেন নিজ নিজ ভাষায়। জানালেন তাদের অনুভূতিও। আবার সেই কবিতা আর অনুভূতির মর্মার্থ ইংরেজিতে বুঝিয়েও দিলেন সবাই।
শুক্রবার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘সার্ধশততে একুশের দ্রোহ’ শিরোনামে ভিন্নধর্মী এ অনুষ্ঠান হয়। এর আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি) প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ।
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাপান, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, কাজাখিস্তান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে জাপানি নাগরিক মাছিকো ফুকোমারা বলেন, নিজের ভাষায় কথা বলতে পারাটা অনেক আনন্দের। স্কুল দেখে আমি আমার নিজের দেশ, বাড়ি, শৈশব ও নিজের ভাষাকে মনে পড়ছে। তিনি জানান, এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছেন।
নাইজেরিয়ান নাগরিক হাওয়া হাসান কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা অনেক ভাষাভাষী মানুষ একসঙ্গে হয়েছি, এটা খুব ভালো লাগছে।
ফিলিপাইনের নাগরিক হেলেন বেশ কয়েক বছর ধরেই আছেন বাংলাদেশে। তিনি বলেন, কথা বলতে পারার স্বাধীনতা অনেক বড় বিষয়। অনেক আনন্দের।
ইসাবেল সুয়োরাজ কলম্বিয়ান নাগরিক। এই আয়োজনে এসে তিনি শিশু বয়সে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের দেখে আমার স্কুলের সময়ের কথা মনে পড়ছে।
কসউবি প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের গৌরবময় ১৫০ বছর পূর্তির ধারাবাহিকতায় এ আয়োজন মাতৃভাষার বৈচিত্র্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, বিদেশিদের উপস্থিতি মাতৃভাষার গুরুত্বকে বিশ্বজনীন পরিসরে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই এমন আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কবি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারটি কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মিনার হিসেবে স্বীকৃত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষকদের অবদান গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে খালেদ মোশাররফ, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তার নেতৃত্বে কক্সবাজার হাইস্কুলের ছাত্ররা ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়।
বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর উপলক্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের কথা জানিয়ে ছাত্র পরিষদের সংগঠক ইয়াসির আরাফাত জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসেই তাদের কর্মসূচি থাকবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।