নারায়ণগঞ্জের বন্দরে পার্কের প্রবেশ ফি চাওয়ার অপরাধে আওয়ামীলীগ দোসর অয়ন ওসমানের পালিত  সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় পার্ক মালিকসহ ৪ জন রক্তাক্ত জখম হয়েছে। ওই সময় হামলাকারিরা ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ ২৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।  জখম প্রাপ্তরা হলো পার্কের মালিক ইলিয়াস হোসেন মিন্টু (৪৭) রিয়াদ (৩১) সৌরভ (৩১) ও ইমরান (২৮)। 


স্থানীয়রা জখমপ্রাপ্তদের উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেছে। গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে ৭টায় বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাবদীস্থ গ্রীন গার্ডেন পার্কে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে উল্লেখিত পার্কের রেষ্টুরেন্ট মালিক আক্রামুজ্জামান মুন্না বাদী হয়ে হামলাকারি অয়ন ওসমানের সহযোগি নিহাদসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ্য করে ও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।


অভিযোগ সূত্র জানাগেছে, বন্দর উপজেলার আদমপুর এলাকার মনির হোসেন মিয়ার ছেলে নিহাদসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা দীর্ঘ দিন ধরে গ্রীন গার্ডেন রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে টাকা না দিয়ে চলে যেত। টাকা চাইলে সে টাকা না দিয়ে উল্টো বিভিন্ন ধরনের হুমকি দামকি দিয়ে আসছিল। গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বখাটে সন্ত্রাসী নিহাদ ও বন্দর শাহীমসজিদ এলাকার দিদার ও রুস্তমপুর এলাকার তুর্জয়সহ অজ্ঞাত নামা ১০/১২ জন  নিয়ে পার্কে আসলে ওই সময় পার্কের কর্মকর্তা ১২ জনের পার্কে প্রবেশ ফি চাইলে এতে করে বখাটে নিহাদসহ তার সহযোগিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ওই সময় উল্লেখিত বখাটে নাহিদ, দিদার ও তুর্জয়সহ অজ্ঞাত নামা অজ্ঞাত নামা ১০/১২ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সন্ত্রাসী তান্ডব নীলা চালিয়ে পার্ক মালিক ইলিয়াস হোসেন মিন্টুসহ ৪ জনকে কুপিয়ে ক্যাশবাক্স থেকে নগদ ২৬ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।


এলাকাবাসী তথ্য সূত্রে জানাগেছে, আওয়ামীলীগ সরকারের শাসন আমলে  বখাটে নাহিদ অয়ন ওসমানের শেল্টারে বন্দরে হাজীপুর, আদমপুর, কল্যান্দী, নয়ানগর, মুখফুলদী, সাবদী ও হাজরাদী চাঁনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অর্পকম চালিয়ে আসছিল। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটলেও অয়ন ওসমানের দোসর নাহিদের পর্যন্ত পতন এখনো ঘটেনি। তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এখনো  অব্যহত আছে। অনতি বিলম্বে অয়ন ওসমানের দোসর নাহিদের আমল নামা খতিয়ে দেখাসহ দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

ইমরান-আকরামের মুখে পাকিস্তানের বিশ্বজয়ের গল্প

দুই সপ্তাহ আগেও যে দলটি তাদের অধিনায়কের মতে, ‘মানসিকভাবে তলানিতে ছিল’—সেই দলটাই কফিন থেকে উঠে বিশ্বকাপ জিতে নিলে কেমন লাগবে? কল্পনার রথ সর্বোচ্চ ছুটিয়েও হয়তো এমন কিছু ভাবা কঠিন। পাকিস্তানের ১৯৯২ বিশ্বকাপ জয় সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করার গল্প। ৩৩ বছর আগের সেই দিনও ছিল রোজার মধ্যে। ১৮তম রোজা—বিকেলের দিকে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ ইফতার ভুলে পিলপিল করে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল। রাস্তায় রাস্তায় তুমুল উল্লাস–উদ্‌যাপন। যেন নতুন জীবন পেয়েছে পাকিস্তান, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ! রমিজ রাজা ঠিক এ কথাই বলেছিলেন পাকিস্তানের ’৯২ বিশ্বকাপ জয়ের ২৫ বছর পূর্তিতে জিও নিউজের আয়োজনে। সেটা ২০১৭ সাল। ’৯২ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক ইমরান, ওয়াসিম আকরাম, ইনজামাম–উল–হক, মঈন খান, মুশতাক আহমেদদের নিয়ে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন রমিজ—সাবেক এ ওপেনার নিজেও সেই দলটির একজন। সেই অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সে দলটির সাত নায়ক মিলে আড্ডার মেজাজে অনেক গল্পসল্পই করেছেন সেসব দিনের। আজ পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ের ৩৩ বছর পূর্তিতে গল্পগুলো শোনা যাক—

অধিনায়ক ইমরান যথারীতি অনুষ্ঠানের মধ্যমণি। ’৯২ বিশ্বকাপ জয়ে তাঁর নেতৃত্বগুণকে আরও একবার স্বীকৃতি দিতে করতালিতে সিক্ত করলেন বাকি ছয়জন। অধিনায়কের প্রতি সম্মানবোধ সবার এতই বেশি যে তিন দশকের বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও সেটা দেখা গেল—ইমরান আসন গ্রহণের পর বাকিরা বসলেন। শুধু ইমরানই পায়ের ওপর পা তুলে বসলেন, বাকিরা তাঁর সামনে চেয়ারে আরাম করে গা এলিয়ে দিলেও আদবটা থাকল চোখেমুখে।

রমিজের শুরুটাও হলো এমনই এক প্রসঙ্গে—ইমরানকে বললেন, মনে হচ্ছে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেছি এবং আগের মতোই আপনাকে আমরা ভয় পাই। তবে রাজনীতিতে যেহেতু জড়িয়েছেন, এখন নিশ্চয়ই ভিন্নমত মেনে নিতে পারেন? পাশাপাশি হাসতে হাসতে রমিজ আরেকটি প্রশ্নও তুললেন, এমন একটা ‘ফাটেচার’ (উর্দু শব্দ—বাংলায় জীর্ণশীর্ণ) দল নিয়েও ইমরান কীভাবে কাপ জয়ের স্বপ্ন দেখলেন?

আরও পড়ুন‘আমার ভাই যেন সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারে’, তামিমকে নিয়ে সাকিব৯ ঘণ্টা আগে

’৯২ বিশ্বকাপ জিতে রাজনৈতিক দল তেহরিক–ই–ইনসাফ গঠন করা ইমরান তখনো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হননি। গলায় গাম্ভীর্য ও আভিজাত্য ঝরিয়ে ইমরান উত্তর দেন, ‘দুটো কারণে। প্রথম কারণ হলো তখন তোমরা সবাই খুব তরুণ ছিলে, আর আমি চল্লিশের কাছাকাছি। মুশতাক দু–তিন বছর এসেছে, ওয়াসিম সেরা সময়ে ছিল। তো, সবাই কম বয়সী হওয়ায় সম্ভবত আমাকে নিয়ে ভীতি ছিল। কিন্তু আমি কাউকে কখনো কামড় দিইনি।’ রমিজ ফোড়ন কাটেন, ‘এখন তো এটাই বলবেন!’

হাসির রোল থামার পর ইমরান দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দেন, ‘বিশ্বকাপে তিনবার অধিনায়কত্ব করেছি। ’৮৩ বিশ্বকাপের দল ভালো না খারাপ ছিল...জানি না। চোট ছিল আমার। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছি। কিন্তু ’৮৭ বিশ্বকাপের দলটি, আমাদের কন্ডিশনে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সেরা দল। আমরা ফেবারিট ছিলাম। ’৯২ বিশ্বকাপে আমরা দুজন ম্যাচ উইনার পাইনি। সাঈদ আনোয়ার ম্যাচ জেতানো ব্যাটসম্যান, ওয়াকার ইউনিস ম্যাচ জেতানো বোলার। দলে বড়জোর তিনজন ম্যাচ জেতানো খেলোয়াড় থাকে। সেখানে দুজনই ছিটকে পড়লে সুযোগ তো কমবেই।’

জিও নিউজের সেই অনুষ্ঠানে ইমরানের সঙ্গে বাকিরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ